পবিত্র মিরাজ শরীফ উনার সঠিক তারিখ ২৭শে রজব; মুসলমানদেরকে বিশেষ দিবসের ফযীলত থেকে বঞ্চিত করতেই একটি গোষ্ঠী তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় (১)
, ৭ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১১ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ২৩ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

মি’রাজ শরীফ রজব মাসের ২৭ তারিখ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার) রাতেই হয়েছে। এটাই মশহূর বা প্রসিদ্ধ, গ্রহণযোগ্য ও দলীলভিত্তিক মত। এর বিপরীত মতগুলো গ্রহণযোগ্য নয়।
মি’রাজ শরীফ উনার মশহূর, গ্রহণযোগ্য ও দলীলভিত্তিক মত নিয়ে যারা বিভ্রান্তি ছড়ায় তারা উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ী। তাদের কোন কথাই সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে গ্রহণযোগ্য নয়।
উল্লেখ্য, মুসলমানগণের ঈমান-আমল ধ্বংস করার ক্ষেত্রে মুসলমানদের যারা চিহ্নিত শত্রু- ইহুদী, খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, মজূসী ইত্যাদি তাবৎ কাফির-মুশরিক তারা পরোক্ষভাবে কাজ করে আর তাদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’ বা ধর্মব্যবসায়ীরা প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে। এই উলামায়ে ‘সূ’ তথা ধর্মব্যবসায়ীরা কাফির-মুশরিকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী মুসলামনগণের ঈমান-আক্বীদা, আমল-আখলাক্ব ধ্বংস করার লক্ষ্যে হরাম টিভি চ্যানেলসহ নানা চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা ও বই-পুস্তকের মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, জায়িযকে নাজায়িয,সুন্নতকে বিদয়াত, বিদয়াতকে সুন্নত বলে প্রচার করে থাকে। অনুরূপভাবে তারা মুসলমানদের ফযীলতপূর্ণ রাত ও দিনসমূহের তারিখ নিয়েও সমাজে বিভ্রান্তি ও ফিতনা সৃষ্টি করছে; উদ্দেশ্য হলো, মুসলমানগণ যেনো ফযীলতপূর্ণ রাত ও দিনসমূহের ইবাদত-বন্দেগী, দুআ-মুনাজাত করা থেকে বিরত থাকে এবং সেই রাত ও দিনসমূহের ফযীলত থেকে বঞ্চিত হয়।
যেমন তারা রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস আসলেই প্রচার করে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে। নাউযুবিল্লাহ!
তদ্রুপ এখন তারা প্রচার করছে, মি’রাজ শরীফ উনার তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে। নাঊযুবিল্লাহ!
অর্থাৎ কাফির-মুশরিকদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’ তথা ধর্মব্যবসায়ীরা বোঝাতে চাচ্ছে যে, মতভেদ সম্পর্কিত বিষয় পালন করা ঠিক নয়। নাঊযুবিল্লাহ!
কিন্তু সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়ছালা হলো, যে কোন বিষয়ে মতভেদ হতে পারে বা থাকতে পারে। কারণ হক্বপন্থীগণ যে বিষয়টিকে হক হিসেবে গ্রহণ করেন, যারা নাহক্ব বা বাতিলপন্থী তারা কি সে বিষয়টিকে হক্ব হিসেবে গ্রহণ করবে? কখনই না। তাহলে তো এমনিতেই মতভেদ সৃষ্টি হয়ে গেল এবং তাই হচ্ছে।
এছাড়া হক্বের জন্য হক্বপন্থীগণও বিভিন্ন বিষয়ে ইখতিলাফ করেছেন, ইখতিলাফ করেছেন বলে সেসব বিষয় বাদ দিতে হবে তা নয়। বরং এক্ষেত্রে শরীয়তের সুস্পষ্ট সামাধান রয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য বা অনুসরণ করো এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য বা অনুসরণ করো এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর রয়েছেন উনাদের আনুগত্য বা অনুসরণ করো। অতঃপর যদি কোন বিষয়ে (উলিল আমরগণের মধ্যে) মতবিরোধ দেখা দেয় তাহলে তা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দিকে প্রত্যাবর্তন করো। অর্থাৎ যেই উলিল আমর মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের বেশি অনুগত বা যার মতের স্বপক্ষে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দলীল-আদিল্লাহ বেশি রয়েছে উনাকে বা উনার মতকে অনুসরণ করবে। যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ও ক্বিয়ামত দিবসের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাক। এটাই কল্যাণকর এবং তা’বীল বা ব্যাখ্যার দিক দিয়ে উত্তম।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯)
কাজেই, কোন বিষয়ে যখন একাধিক মত থাকবে তখন যে মতটি অত্যধিক ছহীহ ও নির্ভরযোগ্য হবে, সেটিই আমল করতে হবে। মতভেদ আছে বলে মূল বিষয়টির আমলই ছেড়ে দিতে হবে; এ বক্তব্য চরম শ্রেণীর জাহিলদের উক্তি ব্যতীত কিছু নয়। যা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের সম্পূর্ণ বিপরীত ও কুফরীর শামিল।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ২৫১তম সংখ্যা থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খালি চোখে চাঁদ দেখে মাস শুরু করা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার নির্দেশ মুবারক
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পূর্ব গণনাকৃত বর্ষপঞ্জী দিয়ে মাস শুরু করা শরীয়তসম্মত নয়
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে গরুর গোস্ত শি‘আরুল ইসলাম (৬)
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশি বেশি মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশি বেশি পূঁজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১)
২৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছহিবে নিসাব প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য পবিত্র কুরবানী দেয়া ওয়াজিব (১)
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কাফিরদের রচিত গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার মুসলমানদের জন্য নয় (২)
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মীলাদ শরীফ বিষয়ে প্রথম দিকে যারা কিতাব রচনা করেছেন উনাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হাফিয হযরত আবুল খত্ত্বাব ইবনে দাহিয়্যাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি ছিলেন পবিত্র হাদীছ শাস্ত্রের অন্যতম গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)