পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উনার রাতে ইবাদত-বন্দেগী করার উত্তম তারতীব
, ২৬ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উনার রাতে জাগ্রত থেকে বিভিন্ন প্রকারের ইবাদত-বন্দেগী করার ব্যাপারে অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে তারগীব ও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উনার রাতে ইবাদত-বন্দেগীর ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “এই রাতের ইবাদত বণী ইসরাঈলের জনৈক বুযূর্গের হাজার মাসের দিবা ও রাত্রির ইবাদতের চেয়েও অধিক ফযীলতপূর্ণ। এই বিশেষ রাত্রিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদের যাবতীয় দোয়া, নামায-কালাম, ইবাদত-বন্দেগী নির্ঘাত কবুল করে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! তবে এ রাতে কত রাকায়াত নামায পড়তে হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকলেও মূল মূল ও খাছ খাছ ইবাদতের মাধ্যমে এ রাত জাগরণ করলে সমস্ত ইবাদতেরই ছওয়াব পাওয়া যায়। যা নিম্নে বর্ণনা করা হলো-
পবিত্র ঈশা জামাত, তারাবীহ ও মীলাদ শরীফ পাঠ:
প্রথমে জামায়াতের সাথে পবিত্র ইশা উনার নামায পড়ে নিতে হবে। অতঃপর তারাবীহসহ বিত্র নামাযের পর মীলাদ শরীফ পাঠ। যেহেতু পবিত্র মীলাদ শরীফ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পাঠ করে থাকেন। কাজেই এর গুরুত্ব সর্বাধিক।
অতঃপর পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উনার নামায
পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উপলক্ষে কত রাকায়াত নামায পড়তে হবে এ ব্যাপারে যদিও সুনির্দিষ্টভাবে সংখ্যা উল্লেখ নেই। তবে শবে ক্বদরে ৪, ৬, ৮, ১০, ১২ রাকায়াত নফল নামায পড়া যেতে পারে।
অতঃপর পবিত্র ছলাতুত তাসবীহ নামায
অতঃপর পবিত্র ছলাতুত তাসবীহর নামায পড়তে হবে, যার দ্বারা মানুষের সমস্ত গুনাহখতা ক্ষমা হয়। এর নিয়ম জানার জন্য আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ৯৯তম সংখ্যার সুওয়াল-জাওয়াব দেখুন।
অতঃপর যিকির-আযকার
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আসমানবাসী-যমীনবাসী সাবধান! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরের মাধ্যমেই দিল ইতমিনান হয় অর্থাৎ আত্মাসমূহ প্রশান্তি লাভ করে।” (পবিত্র সূরা রদ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত
পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতে হবে, যার মাধ্যমে মহান আল্লাহতায়ালা উনার সন্তুষ্টি মুবারক অর্জিত হয়। কেননা নফল ইবাদতের মধ্যে পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত হচ্ছে আফযল।
পবিত্র তাহাজ্জুদ নামায
অতঃপর পবিত্র তাহাজ্জুদের নামায পড়তে হবে, যা দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য মুবারক হাছিল হয়। পবিত্র তাহাজ্জুদ নামায ৪, ৬, ৮, ১০, ১২ রাকায়াত পড়া যায়।
অতঃপর পবিত্র মীলাদ শরীফ ও দুরূদ শরীফ পাঠ
পবিত্র মীলাদ শরীফ ও দুরূদ শরীফ উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য সবচেয়ে বড় ইবাদত ও নাযাতের মূল কারণ। যার দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক অর্জিত হয়।
অতঃপর দোয়া-ইস্তিগফার
এরপর খালিছ ইস্তিগফার ও তওবা করতে হবে, যার মাধ্যমে বান্দার সমস্ত গুনাহখতা মাফ হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ সন্তুষ্টি মুবারক অর্জিত হয়। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু’হাত তুলে মনের চাহিদানুযায়ী দোয়া করতে হবে, যার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি খুশী হবেন ও মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত লাভ হবে। অর্থাৎ পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উনার বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত ইত্যাদি হাছিল করা যায়।
উল্লেখ্য যে, অনেক স্থানে দেখা যায় যে, তারা ছুবহে ছাদিকের পর আখিরী মুনাজাত করে থাকে। মূলত, মুনাজাত যে কোনো সময়েই করা যায়। তবে পবিত ক্বদর উনার রাত্রে দোয়া কবুল করার যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা ছুবহে ছাদিকের পূর্ব পর্যন্তই। এরপর পবিত্র ক্বদর উনার রাত্র অবশিষ্ট থাকে না। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টই বলা হয়েছে যে, “ফযর বা ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদের বিভিন্ন দোয়া কবুল করেন।”
অতএব, সকলের উচিত- মূল বা আখিরী মুনাজাত ছুবহে ছাদিকের পূর্বেই করা। অতঃপর ছুবহে ছাদিকের পূর্বে পরের দিনের রোযার জন্য সাহরী খেতে হবে।
কাজেই আমাদের সকলেরই উচিত- এ পবিত্র রাতটি যথাযথভাবে পালন করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি ও সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা। (আমীন)
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












