নছীহতে উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম-১
পারিবারিক জীবনে সুখী হতে ছেলের বিবাহে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নছীহত মুবারক:
এডমিন, ০৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২১ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা

প্রিয় বৎস! দশটি গুণ অর্জন করতে না পারলে পারিবারিক জীবনে সৌভাগ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। সুতরাং সেগুলো অর্জন করো। মনে রেখো এবং প্রবলভাবে সেগুলোর উপর অধিষ্ঠিত থেকো। এই গুণগুলো হচ্ছে -
১. মহিলাগণ আকর্ষণ প্রত্যাশী। সুতরাং তাদের ব্যাপারে মনোযোগী হও।
২. মহিলাগণ যেটা ভালোবাসে সেটা সরাসরি বলতেই পছন্দ করে। তাই আহলিয়ার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে কার্পণ্য করো না, যদি তেমনটি করো তবে সেটা তোমাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে সম্পর্ককে কৃত্রিম করে ফেলবে।
৩. মহিলাগণ কঠোর এবং অতি সতর্ক পুরুষদের পছন্দ করে না, যদিও কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তাই এগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য করো। এতে ভালোবাসায় আসক্তি আসবে যা তোমাদের প্রশান্তি দিবে।
৪. মহিলাগণ তোমাদের কাছে সেটাই প্রত্যাশা করে যেটা তোমরা তাদের কাছে প্রত্যাশা করো। যেমন সুমিষ্ট কথা, পরিপাট্যতা, পোশাকে পরিচ্ছন্নতা এবং মুগ্ধকর ঘ্রাণ। তাই এভাবেই থাকার চেষ্টা করবে।
৫. মূলত ঘর থাকে মহিলাদের কর্তৃত্বে। যখন সে ঘরে, তখন সে একজন কর্তৃত্বশীল সম্রাজ্ঞীর মতই নিজেকে অনুভব করে। তাই ঘরে তার কর্তৃত্বে বাধা দিয়ে তার রাজত্বটি ধ্বংস করা থেকে সতর্ক থেকো। একজন বাদশাহ সবচেয়ে বেশি রেগে যায় যখন অন্য কেউ তার কর্তৃত্বের উপর ছড়ি ঘুরায়, যদিও বা সে কোনো যৌক্তিক কিছু করে থাকে। তাই ঘরে নারীদের কর্তৃত্বে নিজের জোর-জবরদস্তি চালাবে না। এমনটি করলে পরিবারে অশান্তি দেখা দেবে।
৬. মহিলাগণ তাদের সহধর্মীকে ভালবাসতে চায়, একইসঙ্গে সে তার বাবার বাড়ির পরিবার-পরিজনদের হারাতে চায় না। তাই কখনো নিজের সঙ্গে তার পরিবারের তুলনা করতে যেও না। কারণ তখন হয়তো সে তোমাকে অথবা তার পরিবারকে; যেকোনো একটি হারানোর আশঙ্কায় ভুগবে। যেটা তোমাদের দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
৭. মহিলাদের সৃষ্টি করা হয়েছে পাঁজরের বাঁকা হাড় থেকে। এটাই মূলত তাদের সৌন্দরে্যর রহস্য। যা তাদের প্রতি পুরুষকে আকর্ষিত করে।
আর এটা তাদের কোনো দুর্বলতাও নয়। যেমন চোখের ভ্রু যুগল দেখতে এই কারণেই সুন্দর যে, তা দেখতে বাঁকা। যদি তারা কখনো ভুল করে ফেলে তবে অভদ্রভাবে তাদের তিরস্কার করো না। যেটাতে মূলত সরল পথে আনার কোনো চেষ্টা থাকে না। তাহলে তুমি আসলে তাকেই ভেঙে দিলে আর তাকে ভেঙে দেয়া মানে কার্যত তার সঙ্গে বিচ্ছেদ। তাকে তার ভুলগুলোর উপর ছেড়ে দিও না। তাহলে তার ভুলগুলো দোষে পরিণত হবে এবং তা তার অহংবোধকে আরো উদ্ধত করে দেবে, ফলে সে তোমার প্রতি উদার থাকবে না। তোমার কথা শুনবে না। তাই মধ্যমপন্থা অবলম্বন করো।
৮. মহিলাদের ফিতরাত বা স্বভাব এটাই, তারা তাদের সহধর্মীর সান্নিধ্য চায় এবং এতে কোনো অনুযোগ-অভিযোগ পছন্দ করে না। তুমি যদি সারা জীবনও তার প্রতি সহানুভূতিশীল থাকো কিন্তু একবার যদি দুঃখ দিয়ে ফেলো তাহলে সে হয়তো বলে বসবে,‘আমি তোমার কাছে কখনোই ভালো কিছু পাইনি’। তাদের এমন মনোভাব যদি তোমার পছন্দ না হয় তবুও তাকে অপছন্দ করো না অথবা তার থেকে দূরে চলে যেওনা। হয়তো তার অন্য ভালো স্বভাবগুলো তোমাকে প্রশান্তি দেবে, সুতরাং সমতা বিধান করো।
৯. অবশ্যই এমন কিছু সময় থাকে যখন মহিলাদের শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা এবং অবসাদ কাজ করে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই সময়গুলোতে তাদের কিছু ফরয ইবাদত থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক তাদের পুরোপুরি ছলাত আদায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন এবং আরো কিছু বাধ্যবাধকতা দিয়েছেন তোমাদের জন্য, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা শারীরিক এবং মানসিকভাবে স্বাভাবিক না হয়। তাই এই সময়টিতে তাদের সঙ্গে গভীরভাবে ইসলামিক আচরণ করো। যেভাবে মহান আল্লাহ পাক তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন সেভাবে তোমারও উচিত ওই সময় তার সাথে সহানুভূতিশীল আচরণ করা ও দৈনন্দিন কাজে ছাড় দেওয়া।
১০. মনে রেখো! নারীরা তোমাদের অধীনস্ত। তাই তাদের প্রতি অনুগ্রহশীল থেকো।
[তথ্যসূত্র : আল ইলমু ওয়াল উলামা]