সুওয়াল-জাওয়াব
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম (২)
, ১৭ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ১৬ মে, ২০২৫ খ্রি:, ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সুওয়াল:
হজ্জ আদায়ের ছহীহ্ পদ্ধতি বা নিয়ম কি?
জাওয়াব:
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
পর্যায়ক্রমে হাজরে আসওয়াদ থেকে শুরু করে মুলতাযিম এরপর বাইতুল্লাহ শরীফের দরজা, রুকনে ইরাকী হয়ে হাতিমের বাইর দিয়ে পর্যায়ক্রমে রুকনে শামী, রুকনে ইয়ামেন হয়ে এরপর হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত পৌঁছলে এক চক্কর সমাধা হলো। অতঃপর হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করবে। ভীড়ের কারণে চুম্বন করতে না পারলে ইস্তেলাম করবে। পুনরায় হাজরে আসওয়াদ থেকে তাওয়াফের দ্বিতীয় চক্কর শুরু করবে। প্রত্যেক চক্করের সময় খেয়াল রাখতে হবে, তাওয়াফকারী যেন কোন চক্করের সময়ই হাজরে আসওয়াদ থেকে সামনে বেড়ে তাওয়াফ শুরু না করে।
তাওয়াফের মধ্যে প্রথম তিন চক্কর রমল (হাত বাঁকা করে বুক পর্যন্ত উঠিয়ে হাত নেড়ে নেড়ে বীরের ন্যায় মধ্য গতিতে দৌড়ানোকে রমল বলে) ও শেষ চার চক্কর মাশী (সাধারণ গতিতে চলাকে মাশী বলে।) করবে।
তাওয়াফ সমাধা করে ছাফা মারওয়াতে সাঈ (দৌড়ানো) করবে। এ সমস্ত কাজগুলি উমরার। অর্থাৎ উমরাহ সমাধা হলো।
যদি কেউ হজ্জে তামাত্তুর নিয়ত করে থাকে তাহলে চুল মুন্ডন করে ইহরাম ছেড়ে দিবে। অতঃপর তামাত্তুকারী ৮ই যিলহজ্জ হেরেম শরীফের সীমানা অন্তর্ভুক্ত কোন এক স্থান থেকে হজ্জের জন্য ইহরাম বেঁধে নিবে। এরপর যথারীতি হজ্জের আহকামসমূহ পালন করবে। তামাত্তুকারীও যদি হজ্জের পূর্বে নফল তাওয়াফ করে তার মধ্যে রমল, ইজতেবা আদায় করে এবং এরপর সাঈ করে তাহলে তামাত্তুকারীকেও তাওয়াফে যিয়ারতের মধ্যে রমল, ইজতেবা ও এরপর সাঈ করতে হবে না। অতঃপর হজ্জের জন্য যথারীতি হজ্জে ইফরাদের মত তাওয়াফে কুদুম করতে হবে।
ক্বিরানকারী তাওয়াফে কুদুম করার সময় রমল ও ইজতেবার সাথে তাওয়াফ করবে। অতঃপর ছাফা ও মারওয়া সাঈ করবে। তাহলে তাওয়াফে যিয়ারতের সময় রমল ও ইজতেবা ও পরে সাঈ করতে হবে না।
হজ্জে ইফরাদকারী যদি তাওয়াফে কুদুমের মধ্যে রমল, ইজতেবা ও সাঈ করে তাহলে তাওয়াফে যিয়ারতের মধ্যে রমল, ইজতেবা ও এরপর সাঈ করতে হবে না। তবে ইফরাদ হজ্জে তাওয়াফে যিয়ারতের পর সাঈ করা উত্তম।
তাওয়াফ শুরু করার পূর্বে ইজতেবা করতে হবে। অর্থাৎ ইজতেবা হলো- চাদরকে ডান বগলের নীচে দিয়ে ও বাম কাঁধের উপর দিয়ে পরবে যাতে ডান কাঁধ খোলা থাকে এবং বাম কাঁধ ঢাকা থাকে।
উল্লেখ্য, প্রতিবার তাওয়াফ করার সময় হাতীমের বাইর দিয়ে তাওয়াফ করতে হবে। হাতীম হলো- কা’বা শরীফের উত্তর পার্শ্বে দু’দিক খোলা কমর পর্যন্ত উঁচু দেয়াল দ্বারা ঘেরা স্থান। তাওয়াফ করার সময় প্রথম তিন চক্কর রমল করবে ও শেষ চার চক্কর মাশী করবে। তাওয়াফ করা কালীন প্রত্যেকবারই হাজরে আসওয়াদের নিকট আসলে উহাকে চুম্বন করবে অথবা হাতে ইস্তেলাম করবে। ইস্তেলাম হলো- হাতে ইশারা করে চুম্বন করা। শেষবার চুম্বন বা ইস্তেলাম করে তাওয়াফ সমাধা করবে। অতঃপর মাকামে ইবরাহীমে এসে দু’রাকায়াত নামায আদায় করবে। যদি ভীড় বা অন্য কোন কারণে সেখানে নামায পড়া সম্ভব না হয় তাহলে মাকামে ইবরাহীমের পিছনে মসজিদে হারামের যেখানে সম্ভব হয় সেখানেই দু’রাকায়াত নামায আদায় করবে। এই তাওয়াফকে তাওয়াফে কুদুম বলে। ইহা আদায় করা সুন্নত। ইহা মক্কাবাসীদের জন্য আদায় করতে হয় না।
অতঃপর মসজিদে হারামের বাবুছ্ছাফা নামক দরজা দিয়ে বের হয়ে ছাফা পাহাড়ে গিয়ে আরোহণ করবে। সেখানে কা’বা শরীফের দিকে মুখ করে তাসবীহ-তাহলীল বলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দুরূদ শরীফ পাঠ করে নিজের আরজু মোতাবেক দোয়া করবে। অতঃপর সেখান থেকে অবতরণ করে সাধারণ গতিতে মারওয়া পাহাড়ের দিকে চলবে।
তবে বতনে ওয়াদীতে পৌঁছে মাইলাইনে আখজারাইনে (সবুজ রংয়ের মাইল দ্বারা চিহ্নিত স্থান) দৌঁড়াবে। অতঃপর সাধারণ গতিতে মারওয়া পাহাড়ে আরোহণ করবে। ছাফা পাহাড়ের অনুরূপ মারওয়া পাহাড়েও তাকবীর, তাহলীল, দুরূদ শরীফ পাঠ ও দোয়া করবে। এতে একবার হলো। অনুরূপ সাতবার ছাফা মারওয়াতে দৌঁড়াবে। অর্থাৎ ছাফা হতে শুরু করবে মারওয়াতে শেষ করবে। অতঃপর ইহরাম অবস্থায় মক্কা শরীফে অবস্থান করবে এবং যত ইচ্ছা তাওয়াফ করবে।
উল্লেখ্য, হজ্জ উপলক্ষ্যে তিনটি খুৎবা দেয়া হয়। (১) যিলহজ্জ মাসের ৭ তারিখে যোহরের পর মসজিদে হারামে এক খুৎবা দিতে হয়। খুৎবার মধ্যে বসতে হয় না। (২) আরাফার ময়দানে যিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখে দুই খুৎবার মধ্যে বসতে হবে। ইহা যোহরের নামাযের পূর্বে দিতে হয়। (৩) যিলহজ্জের১১ তারিখে মীনাতে যোহরের পরে এক খুৎবা দিতে হয়, মধ্যে বসতে হয় না। (বাকি অংশের জন্য পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন।)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












