প্রসঙ্গঃ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন
, ২৭ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১২ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৭ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
কিন্ত কথা হল বেআইনী ও মহা আপত্তিকর আইন পাস হয় কীভাবে? অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে শুধু সরকারের গায়ের জোরে একটি আইন জন্মলাভ করে কীভাবে?
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের নামে অধিকার হরণের এ প্রহসন এতদিনই বা চলল কেন? আইনে যেভাবে ভোক্তাদের অধিকার কেড়ে নিয়ে অসৎ উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে, তাতে ব্যবসায়িক অসততা ও ভেজালকেই উৎসাহিত করা হয়েছে। বরং ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল এ আইন না করাই বরং ভালো ছিল। প্রশ্ন উঠে তাহলে সরকারের পবিত্র দায়িত্ব কোনটি? ভোক্তাদের অধিকার দেখা, নাকি অসৎ ব্যবসায়ীদের রক্ষা করা? আইনের ৭২ ধারায় ওষুধবিষয়ক বিশেষ বিধান-(১) শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘ঔষধে ভেজাল মিশ্রণ বা নকল ঔষধ প্রস্তুত করা হইতেছে কি না, অনুসন্ধান করিয়া উহা উদ্ঘাটন করিবার ক্ষমতা ও দায়িত্ব মহাপরিচালকের থাকিলেও উহাদের বিষয়ে এই আইনের অধীন কোনো বিচার বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণ বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা যাইবে না।’
অবাক ব্যাপার, কোনো রাষ্ট্র কীভাবে পারে তার নাগরিকের ন্যায়সংগত বিচার পাওয়ার অধিকার এভাবে কেড়ে নিতে? সম্প্রতি রিড ফার্মার প্যারাসিটামল সিরাপে বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গেছে। সেই সিরাপ খেয়ে ২৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কিডনি নষ্ট হয়ে অনেক শিশুর জীবন এখনো সংকটাপন্ন। এসব শিশুর মা-বাবারা কি তাদের শিশুহত্যার বিচার দাবি করতে পারবেন না? কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন না?
অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল শিশুখাদ্য বা নকল ওষুধ বিক্রি করবেন, তা খেয়ে মারা যাবে কোলের শিশু, মা-বাবা বুকফাটা আর্তনাদ করবেন; কিন্তু কোনো প্রতিকার চাইতে পারবেন না, আদালতে মামলা করতে পারবেন না। কার্যত এমনই বিধান রাখা হয়েছে সম্প্রতি প্রণীত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে। সরকারের দৃষ্টিতে এসবই যদি হয় আইনী তাহলে বেআইনী কোনটি?
শুধু শিশুখাদ্য বা খাদ্যপণ্য নয়, বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না। কোনো বিক্রেতা পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জড়িত না থাকলে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। সরাসরি কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন না ভোক্তা; ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। কিন্তু অভিযোগ দায়েরের ৯০ দিনের মধ্যে যদি অভিযোগপত্র দাখিল করা না হয়, তাহলে সে মামলা আদালতে আমলযোগ্য হবে না।
প্রত্যেক ভোক্তারই তার ভোগ্যপণ্যের কিছু তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। এসব অধিকারকে সাধারণত চারভাগে ভাগ করা হয়। প্রথমত, নিরাপত্তার অধিকার। এটা ভোক্তার মৌলিক অধিকার। প্রত্যেক ভোক্তার অধিকার আছে ক্ষতিকারক পণ্যের প্রতিক্রিয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করা। দ্বিতীয়ত, বাজারে যে পণ্যসামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় হয় সেগুলো সম্পর্কে পর্যাপ্ত এবং সঠিক তথ্য জানার অধিকারও রয়েছে। প্রতিটি দ্রব্য কি কি উপাদানে প্রস্তুত, কিভাবে দ্রব্যটি ব্যবহার করতে হবে, এতে কোন ক্ষতিকারক উপাদান রয়েছে কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানা ভোক্তার অধিকার। তৃতীয়ত, ভোক্তা স্বার্থ পরিপন্থী যে কোন দ্রব্য সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ পেশ করার অধিকার রয়েছে ভোক্তার। চতুর্থত, ন্যায্যমূল্যে পণ্যক্রয়ের অধিকার রয়েছে প্রত্যেক ভোক্তার। বাজারে প্রাপ্ত একাধিক পণ্য থেকে ন্যায্য মূল্যে পছন্দসই পণ্য ক্রয়ের অধিকার ভোগ করতে পারেন ভোক্তা। কিন্তু বাংলাদেশে ক্রেতার অধিকার বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয় যে, ক্রেতারা নিতান্তই অসহায় অবস্থায় কালাতিপাত করছে। পণ্যের ঊর্ধ্বমূল্য, নকল ও নিম্নমান সম্পন্ন পণ্য বিক্রয়। তাছাড়াও ব্যাপক ভেজাল, প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন, ত্রুটিপূর্ণ ওজন, পণ্যের মোড়কে খুচরা বিক্রয়মূল্য লেখা না থাকা, ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত পণ্য, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বাজার সয়লাব করে আছে।
এ সব পণ্য এখন ভোক্তাদের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোন অধিকার এখানকার ক্রেতারা সঠিকভাবে ভোগ করতে পারে না। আমাদের দেশের বাজারগুলোতে নিম্নমানের ওষুধে সয়লাব। যা মানব স্বাস্থ্যের জন্য বিরাট ক্ষতিকর। তবুও ক্রেতারা এর মান কিংবা ক্ষতির পরিমাণ না জেনে সেবন করছে। জানার আগ্রহ থাকলেও জানার মতো কোন স্কোপ আমাদের দেশে সাধারণ মানুষের জন্য সৃষ্টি হয়নি। হোটেলগুলোতে প্রতিনিয়ত বাসি পচা ও বিষাক্ত খাবার খাওয়াচ্ছে। এর ফলে অনেকের শরীরেই মরণব্যাধি বাসা বেঁধেছে। অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্যের নকল প্রবণতা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতটা বিচক্ষণতার সাথে নকল করা হয় যে, সাধারণ ক্রেতাদের পক্ষে আসলটা নিরূপণ করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এক গবেষণায় দেখা যায় ঢাকা শহরে ৮৪টি ভোগ্যপণ্য সম্পূর্ণ কিংবা আংশিকভাবে নকল হচ্ছে। শুধু ভোগ্যপণ্য নয়, ওষুধ পর্যন্ত নকল হচ্ছে।
প্রসঙ্গতঃ সরকার যদি মনে করে যে, তার প্রশাসন দ্বারাই সে সফল হবে না- সে কথা ভুল বলার অবকাশ নেই। কারণ শুধু আইন প্রয়োগ করেই যে এ সমস্যার সমাধান হবে তা নয়। মূলতঃ এজন্য প্রয়োজন মন-মানসিকতার পরিবর্তন তথা ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
রেলপথ দেশব্যাপী পণ্য পরিবহনের জন্য সাশ্রয়ী ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। রেলের ইঞ্জিন স্বল্পতার কারণে আগ্রহ থাকলেও প্রতিষ্ঠান বেছে নিচ্ছে অন্য পথ চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পরিবহনের ৯৬ শতাংশই হয় সড়কপথে অপরদিকে রেল অথবা সড়কপথে যাত্রী চলাচল কিংবা পণ্য পরিবহনে তুলনামূলকভাবে খরচ অনেক কম হয় পানিপথে।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের দীর্ঘদিনের শোষণ আর অব্যাহত লুটপাটের কারণে সোমালিয়া, চাদ, নাইজেরিয়া, নাইজার, দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার প্রায় ২ কোটি মানুষ এখন দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত। দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে আর দেরি নেই, এরকম দুঃসহ দিন গুনছে পূর্ব-আফ্রিকার উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়ার প্রায় ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। কিন্তু নিশ্চুপ বিশ্ব গণমাধ্যম, নিষ্ক্রিয় বিশ্ববিবেক, নীরব মুসলিম বিশ্ব!
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে অর্থনীতি গভীর সংকটে শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.৩৫ শতাংশ দেশের অর্থনীতি তলানী তথা বারোটা বাজার খবর এখন সর্বত্রই ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৫ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইরান ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার জন্য বিশেষভাবে দায়ী সালাফী-লা মাযহাবী ওহাবী মালানারা কারণ তারাই সৌদি ইহুদী শাসকদের প্রশংসা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের দোষ-ত্রুটি এবং মুসলমান বিদ্বেষী ও ইসলাম বিরোধী কাজ চুপিয়ে রাখে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে তাদের কুফরী আক্বীদা প্রচার করে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাজারে নতুন আলু উঠলেও দাম চড়া, কেজিতে ২০০ টাকা পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোগ জরুরি আলু রফতানীতে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা আয় সম্ভব আলুর জাতের মান বৃদ্ধি এবং হিমাগার স্থাপনসহ রফতানীর ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করে সরকারকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রশাসন খবর না রাখলেও প্রচ- শীতে মারা যায় হাজার হাজার লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে কোটি কোটি লোক। সরকারি সাহায্যের হাত এখনও না বাড়ানো মর্মান্তিক। তবে শুধু লোক দেখানো উদ্যোগ গ্রহণই নয়; প্রকৃত সমাধানে চাই সম্মানিত ইসলামী চেতনার বিস্তার। তাহলে ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে কোনো আর্তেরই আহাজারি উচ্চারণ হবার নয়।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার। কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীরা আর সহ্য করতে পারছেন না। ‘অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) ব্যবসায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এআইটি ও টিডিএস আসলে ট্যাক্স টেরোরিজম বা কর-সন্ত্রাস। ব্যবসায়ীরা ‘কর-সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি চান। ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আয়কর ও উৎসে করের চাপ থেকে মুক্তি চান।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশে মজুদ খনিজ সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কিন্তু উত্তোলনে বিনিয়োগ নাই বললেই চলে অথচ দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, দেশে কেন উল্টো বেড়েছে? বিশ্ববাজারে জ্বালানি সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে ভোক্তা বাড়তি দামে কিনছে বিশ্বে জ্বালানীসহ খাদ্য পণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে সুফল মিলছে না কেন? প্রতিবেশীরা স্বস্তিতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে কেনো?
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ‘আইএমএফের চাপে’ নতুন করের বোঝা বাড়ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক খাতে ভর্তুকি কমাতে হয়। এতে সমাজের নিচের স্তরের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












