প্রসঙ্গঃ স্বদেশের প্রতি মুহব্বত দাবিদার মুসলমান এবং স্বদেশের প্রতি আঘাত।
, ১৪ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১২ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
স্বদেশকে মুহব্বত করা ও দেশের কল্যাণ কামনা করা মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার আদর্শ ছিল। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কল্যাণ কামনাকে এভাবে প্রকাশ করেছেন, “স্মরণ করুন, যখন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলেছিলেন যে, হে আমার প্রতিপালক, এ ভূখ-কে নিরাপদ শহরে পরিণত করুন এবং অধিবাসীদেরকে নানাবিধ ফলমুল দ্বারা জীবিকা দান করুন। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বদেশের প্রতি মুহব্বতকে গ্রহণ করেছেন বলেই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে নিজেও দেশের শপথ করেছেন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আমি শপথ করছি সে নগরীর, যে নগরীর আপনি অধিবাসী।” (পবিত্র সূরা বালাদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১-২)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় মাতৃভূমির মুহব্বতকে বিশেষভাবে গ্রহণ করেছিলেন। একারণে ঐতিহাসিক হিজরত মুবারকের প্রাক্কালে তিনি বিশেষ রহমতভরে স্বদেশকে সম্বোধন করে বলেছেন, “কত চমৎকার শহর আপনি, হে পবিত্র মক্কা শরীফ, আমি আপনাকে কত মুহব্বত করি।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
এই মুহব্বতের প্রতি সম্মান জানিয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি আপনার জন্য পবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে বিধান করেছেন, তিনি (মহান আল্লাহ পাক) আপনাকে অবশ্যই স্বদেশে (পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে) ফিরিয়ে আনবেন।” (পবিত্র সূরা কাসাস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত মানুষকে দায়িত্ব সচেতন করে তোলে, স্বদেশের উন্নতি সাধনে সজাগ রাখে, দেশের জাতীয় সম্পদ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করে। স্বদেশের প্রতি মুহব্বতে উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং দেশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত থাকবে, তাদের প্রতি বিশেষ পুরস্কারের আশ্বাসবাণী ও প্রতিশ্রুতি রয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘এক দিন এক রাতের প্রহরা ক্রমাগত এক মাসের নফল রোজা এবং সারা রাত ইবাদতে কাটিয়ে দেয়া অপেক্ষাও উত্তম।’ (মুসলিম শরীফ)
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত বা স্বদেশের সম্পদ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাকারী তথা সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের পরকালীন অশেষ প্রতিদান সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মৃত ব্যক্তির সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে তার আমল বৃদ্ধি পেতে পারে না। তবে ওই ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে ব্যক্তি কোনো ইসলামী সাম্রাজ্যের সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তার আমল কিয়ামত পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং কবরের প্রশ্নোত্তর থেকেও সে বেঁচে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তিরমিজি শরীফ ও আবু দাউদ শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণে স্বদেশের প্রতি মুহব্বত একধরনের পরিশুদ্ধ ভাবাবেগ, যা মুসলমানদের কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্বসচেতন করে তোলে। দেশের স্বাধীনতা ও সম্পদ সুরক্ষায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করে দেশের স্বার্থবিরোধীদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করতে নিবেদিত করে।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার এই দেশের সরকার নাগরিকদের মাঝে স্বদেশের প্রতি মুহব্বতের ক্ষেত্রে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শিক্ষা নাগরিকদের দেয়নি এবং এ ধরনের কোনো তৎপরতাও সরকারের কর্মকা-ে নেই। যা অতীব দুঃখজনক। তবে মুসলমান হিসেবে দেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানরা তাদের ঈমান রক্ষার্থে স্বদেশের প্রতি মুহব্বত তথা দায়িত্ব-কর্তব্যকে অস্বীকার করে মুসলমান থাকতে পারে না।
দেশের দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেত্রীই পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে দেশের সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়ে আঁতাতের অভিযোগ করেছে। দেখা যাচ্ছে, রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়েই স্বদেশের প্রতি মুহব্বতের ঘাটতির অভিযোগ গুরুতর। তবে এ অভিযোগ থেকে রেহাই নেই সাধারণ মানুষেরও। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভাষ্যানুযায়ী ঈমানদার তথা মুসলমান থাকতে হলে কোনো অন্যায় দেখলে তথা স্বদেশের প্রতি কোনো অবিচার দেখলে, স্বদেশের সম্পদ ও সার্বভৌমত্বের প্রতি কোনো অনাচার দেখলে হাত দিয়ে বাঁধা দিতে হবে। মুখে বলতে হবে।
কিন্তু এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান বাংলাদেশের প্রতি যেসব অন্যায় করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে কি? অথচ তারা দাবি করছে তারা মুসলমান। কিন্তু স্বদেশের প্রতি মুহব্বত তথা হক আদায় না করা পর্যন্ত কেউই পাক্কা মুসলমান হতে পারে না। থাকতে পারে না। দাবি করতে পারে না। এখন দেশের সব মুসলমানকে ঠিক করতে হবে- তারা কি ঈমান বিসর্জন দিবে? নাকী ঈমান রক্ষার্থে স্বদেশের প্রতি মুহব্বতে সক্রিয় ও সোচ্চার হবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে অর্থনীতি গভীর সংকটে শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.৩৫ শতাংশ দেশের অর্থনীতি তলানী তথা বারোটা বাজার খবর এখন সর্বত্রই ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৫ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইরান ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার জন্য বিশেষভাবে দায়ী সালাফী-লা মাযহাবী ওহাবী মালানারা কারণ তারাই সৌদি ইহুদী শাসকদের প্রশংসা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের দোষ-ত্রুটি এবং মুসলমান বিদ্বেষী ও ইসলাম বিরোধী কাজ চুপিয়ে রাখে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে তাদের কুফরী আক্বীদা প্রচার করে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাজারে নতুন আলু উঠলেও দাম চড়া, কেজিতে ২০০ টাকা পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোগ জরুরি আলু রফতানীতে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা আয় সম্ভব আলুর জাতের মান বৃদ্ধি এবং হিমাগার স্থাপনসহ রফতানীর ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করে সরকারকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রশাসন খবর না রাখলেও প্রচ- শীতে মারা যায় হাজার হাজার লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে কোটি কোটি লোক। সরকারি সাহায্যের হাত এখনও না বাড়ানো মর্মান্তিক। তবে শুধু লোক দেখানো উদ্যোগ গ্রহণই নয়; প্রকৃত সমাধানে চাই সম্মানিত ইসলামী চেতনার বিস্তার। তাহলে ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে কোনো আর্তেরই আহাজারি উচ্চারণ হবার নয়।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার। কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীরা আর সহ্য করতে পারছেন না। ‘অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) ব্যবসায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এআইটি ও টিডিএস আসলে ট্যাক্স টেরোরিজম বা কর-সন্ত্রাস। ব্যবসায়ীরা ‘কর-সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি চান। ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আয়কর ও উৎসে করের চাপ থেকে মুক্তি চান।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশে মজুদ খনিজ সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কিন্তু উত্তোলনে বিনিয়োগ নাই বললেই চলে অথচ দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, দেশে কেন উল্টো বেড়েছে? বিশ্ববাজারে জ্বালানি সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে ভোক্তা বাড়তি দামে কিনছে বিশ্বে জ্বালানীসহ খাদ্য পণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে সুফল মিলছে না কেন? প্রতিবেশীরা স্বস্তিতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে কেনো?
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ‘আইএমএফের চাপে’ নতুন করের বোঝা বাড়ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক খাতে ভর্তুকি কমাতে হয়। এতে সমাজের নিচের স্তরের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












