প্রসঙ্গ সুন্দরবনের বাঘ জরিপ: সাতক্ষীরা ও খুলনায় ট্র্যাপিং শেষ।
বাংলাদেশেকে প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষায় সুন্দরবন, আর সুন্দরবন রক্ষায় বাঘ। জাতীয় প্রয়োজনেই বাঘ রক্ষা করতে হবে ইনশাল্লাহ!
, ২০ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ ছানী ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১১ মে, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মন্তব্য কলাম
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে বনভূমি চার হাজার ৮৩২ বর্গ কিলোমিটার এবং পানিভূমি এক হাজার ১৮৫ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৯৭ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই বনভূমির স্থলে ২৮৯ প্রজাতির প্রাণীর বসবাস। এ ছাড়া ২১৯ প্রজাতির জলজ প্রাণী বাস করে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারিতে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪।
আগামী ১ নভেম্বর থেকে বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জ এলাকা দিয়ে আবার শুরু হবে ট্র্যাপিং কাজ। টানা চার মাসের এ কাজ চাঁদপাই রেঞ্জ দিয়ে শেষ হবে। এরপর পর্যালোচনা করে ২০২৪ সালের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবসে জরিপের তথ্য মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।
১৯৮৭ সালে জাতিসংঘ থেকে অতি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী হিসেবে বাঘ বা বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে ব্যবসা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু একটি দুষ্টচক্রের কারণে তা একেবারে বন্ধ করা যায়নি। একটি তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯৮০ সাল থেকে ২০১২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত গত ৩২ বছরে সুন্দরবন এবং এর আশপাশের এলাকা থেকে বিভিন্ন কারণে ৬৭টি বাঘের মৃত্যু ঘটেছে।
২০১৩ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৪০০০ বাঘ ছিল বলে ধারণা করা হয়। অথচ শুনলে বিস্মিত হতে হয়, ১৯০০ সালে পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা ছিল এক লাখ। এই একশ বিশ বছরে বাঘ প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী শতাব্দী আসার আগেই বাঘ হারিয়ে যাবে চিরতরে।
অথচ বাঘ বনের জীববৈচিত্র, খাদ্যশৃঙ্খল ও প্রতিবেশ চক্রের অন্যতম উছীলা। প্রতিটি প্রাণীই এই নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোনো না কোনো সময় এসব চক্রের ভেতর মানুষও এসে যায়। ফলে প্রতিটি প্রাণীর অস্তিত্ব হুমকিতে থাকলে মানুষ বাদ যাবে না। এটা একটা সংকেত। বনের প্রাকৃতিক বংশবৃদ্ধি ঠিক রাখার জন্য প্রতিবেশ চক্র নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। বনে নানা ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদ রয়েছে। কোনো প্রাণী গোশত নির্ভর, আবার কোনো প্রাণী তৃণভোজী। তৃণভোজী প্রাণীর মধ্যে রয়েছে হরিণ, বনগরু, মেষ, শূকর ইত্যাদি। এসব প্রাণীর বেঁচে থাকার উপর আবার মাংশাসী প্রাণীর জীবন ধারণ নির্ভরশীল। এভাবে খাদ্যচক্র নিয়ন্ত্রিত হয়। সেখানেও সমস্যা রয়েছে। ফলে সব কিছু মিলিয়ে বাঘের জীবন ধারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বাঘের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী করার জন্য সরকার ইতোমধ্যে, জীববৈচিত্র, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষা ও উন্নতির জন্য সংবিধানে একটি নতুন ধারা; বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এ বাঘ শিকারের জন্য ২ থেকে ৭ বছরের কারাদন্ড এবং ১ মিলিয়ন টাকা জরিমানার বিধান সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এছাড়া সরকার জাতীয় বাঘ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (২০২২ থেকে ২০৩৪) এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২০২৭) বাস্তবায়ন করছে।'
'বন্যপ্রাণীর দ্বারা ক্ষতিপূরণ বিধিমালা, ২০২১-এ বাঘের দ্বারা নিহত ব্যক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসা রোধে বন বিভাগের অধীনে বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইউনিট গঠন করা হয়েছে।'
কিন্তু তারপরেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর “স্মার্ট প্রেট্রোলিং” আর জেলে-বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ঠেকানো যাচ্ছে না বাঘ, হরিণ হত্যা।’ এক্ষেত্রে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন বাঘ রক্ষার জন্য রাজধানী ঢাকায় নানা কর্মসূচী পালন করা হয়। মন্ত্রী আসেন। সেমিনার শোভাযাত্রা হয়। কথিত বিশেষজ্ঞরা, আলোচকরা অনেক কথা বলেন।
কিন্তু এরূপ কার্যক্রমগুলো ঢাকা শহরে না করে যদি প্রত্যন্ত অঞ্চলে করা যেতো অর্থাৎ সুন্দরবনের আশেপাশে যে গ্রামগুলো আছে, যারা বনজীবী তাদেরকে নিয়ে যদি করা যেতো তাহলে এই বাঘ রক্ষা বা বাঘের বিষয়ে সচেতনতা আরও ৫০ শতাংশ বাড়তো। ওইসব এলাকার লোকজন তো বাঘের আশেপাশে থাকে, বাঘ তো তাদের গ্রামে এসে মানুষকে আক্রমণ করলে বা গৃহপালিত পশুকে আক্রমণ করলে তখন তো ওই মানুষগুলোই বাঘকে আক্রমণ করে মেরে ফেলছে। অথবা বনে গিয়ে বাঘের সাথে তাদের এক প্রকারের কনফ্লিক্ট (দ্বন্দ্ব) হচ্ছে। বাঘ কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের দেশের জন্য এবং তাদের জন্য এটা তো বনজীবীরা জানেন না। তো, ঢাকা শহরের লোকজন এগুলো জেনে করবে কী? কিন্তু ঢাকা বাঘ নিয়ে যে সভা-সেমিনার-প্রোগ্রামে যে টাকা খরচ করা হয় তার চার ভাগের এক ভাগ টাকা খরচ করে যদি সুন্দরবনের আশেপাশের লোকালয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম করা হতো তবে তা ফলপ্রসু হত।
তবে এর পাশাপাশি উল্লেখ্য মাছ ধরার কথিত নিষিদ্ধ সময়ে যেমন জেলেদের আর্থিক সহযোগীতার কথা প্রচার করা হয় তেমনি যারা বনজীবি রয়েছেন জীবনধারনের অসুবিধার ক্ষেত্রে তাদেরও যদি আর্থিক প্রনোদনা দেয়া হয় তাহলেই মূলত বাঘ বিনাশী কর্মসূচী সবচেয়ে কার্যকরভাবে সফল হতো। বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং পরিবেশ মন্ত্রক নিজেরাই এ বিষয়ে সচেতন ও সক্রিয় হবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
রেলপথ দেশব্যাপী পণ্য পরিবহনের জন্য সাশ্রয়ী ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। রেলের ইঞ্জিন স্বল্পতার কারণে আগ্রহ থাকলেও প্রতিষ্ঠান বেছে নিচ্ছে অন্য পথ চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পরিবহনের ৯৬ শতাংশই হয় সড়কপথে অপরদিকে রেল অথবা সড়কপথে যাত্রী চলাচল কিংবা পণ্য পরিবহনে তুলনামূলকভাবে খরচ অনেক কম হয় পানিপথে।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের দীর্ঘদিনের শোষণ আর অব্যাহত লুটপাটের কারণে সোমালিয়া, চাদ, নাইজেরিয়া, নাইজার, দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার প্রায় ২ কোটি মানুষ এখন দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত। দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে আর দেরি নেই, এরকম দুঃসহ দিন গুনছে পূর্ব-আফ্রিকার উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়ার প্রায় ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। কিন্তু নিশ্চুপ বিশ্ব গণমাধ্যম, নিষ্ক্রিয় বিশ্ববিবেক, নীরব মুসলিম বিশ্ব!
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে অর্থনীতি গভীর সংকটে শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.৩৫ শতাংশ দেশের অর্থনীতি তলানী তথা বারোটা বাজার খবর এখন সর্বত্রই ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৫ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইরান ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার জন্য বিশেষভাবে দায়ী সালাফী-লা মাযহাবী ওহাবী মালানারা কারণ তারাই সৌদি ইহুদী শাসকদের প্রশংসা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের দোষ-ত্রুটি এবং মুসলমান বিদ্বেষী ও ইসলাম বিরোধী কাজ চুপিয়ে রাখে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে তাদের কুফরী আক্বীদা প্রচার করে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাজারে নতুন আলু উঠলেও দাম চড়া, কেজিতে ২০০ টাকা পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোগ জরুরি আলু রফতানীতে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা আয় সম্ভব আলুর জাতের মান বৃদ্ধি এবং হিমাগার স্থাপনসহ রফতানীর ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করে সরকারকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রশাসন খবর না রাখলেও প্রচ- শীতে মারা যায় হাজার হাজার লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে কোটি কোটি লোক। সরকারি সাহায্যের হাত এখনও না বাড়ানো মর্মান্তিক। তবে শুধু লোক দেখানো উদ্যোগ গ্রহণই নয়; প্রকৃত সমাধানে চাই সম্মানিত ইসলামী চেতনার বিস্তার। তাহলে ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে কোনো আর্তেরই আহাজারি উচ্চারণ হবার নয়।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার। কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীরা আর সহ্য করতে পারছেন না। ‘অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) ব্যবসায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এআইটি ও টিডিএস আসলে ট্যাক্স টেরোরিজম বা কর-সন্ত্রাস। ব্যবসায়ীরা ‘কর-সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি চান। ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আয়কর ও উৎসে করের চাপ থেকে মুক্তি চান।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশে মজুদ খনিজ সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কিন্তু উত্তোলনে বিনিয়োগ নাই বললেই চলে অথচ দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, দেশে কেন উল্টো বেড়েছে? বিশ্ববাজারে জ্বালানি সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে ভোক্তা বাড়তি দামে কিনছে বিশ্বে জ্বালানীসহ খাদ্য পণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে সুফল মিলছে না কেন? প্রতিবেশীরা স্বস্তিতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে কেনো?
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ‘আইএমএফের চাপে’ নতুন করের বোঝা বাড়ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক খাতে ভর্তুকি কমাতে হয়। এতে সমাজের নিচের স্তরের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












