মন্তব্য কলাম
ফারাক্কা বাঁধের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হল বিভিন্ন বাঁধ, ব্যারেজ আর ড্যাম তৈরী করে বাংলাদেশকে পানিশুন্য করার জোরদার পাঁয়তারা করছে ভারত মরণ ফাঁদ ফারাক্কার বিরুদ্ধে তীব্র জনমত ও জাতীয় ঐক্য তৈরী করে ফারাক্কা বাঁধ ভেঙ্গে ফেলার জন্য কার্যকর কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
, ১২ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১২ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ মে, ২০২৫ খ্রি:, ২৮ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম

পদ্মা নদীর উজানে ভারতের গঙ্গায় নির্মিত ফারাক্কা ব্যারাজ চালুর ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদে আন্তঃসীমান্ত নদীর গতিপথে নির্মিত এ বাঁধ বিরূপ প্রভাব ফেলেছে পদ্মাসহ এর শাখা নদ-নদীর ওপর।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় এ বাঁধটি অবস্থিত। ১৯৬১ সালে এ বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ১৯৭৫ সালে। সেই বছর ২১ এপ্রিল থেকে বাঁধ চালু হয়। ফারাক্কা বাঁধ ২ হাজার ২৪০ মিটার (৭ হাজার ৩৫০ ফুট) লম্বা যেটা প্রায় এক বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় বানানো হয়েছিল। যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক পরিবেশগত ও সামাজিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের প্রায় দুই কোটি মানুষ, দক্ষিণাঞ্চলের চার কোটি মানুষ এবং বাংলাদেশের গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ এলাকা সেচের পানির অভাবে ভুগছে।
ফারাক্কা ব্যারেজের কারণে দেশের প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার নৌপথ বন্ধ, হাজার হাজার জেলে কর্মসংস্থান হারিয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের ১৭ শতাংশ লবণাক্ততায় হারিয়ে গেছে।
একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ফারাক্কা ব্যারেজের কারণে ১৯৭৫ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সামগ্রিক ক্ষতি হয়েছে এক লাখ ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
এরপর থেকে আজ পর্যন্ত প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বলা হচ্ছে। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি এর চেয়ে বহুগুণ বেশী।
১৯৭২ সালে ভারত-বাংলাদেশর মাঝে যৌথ নদী কমিশন গঠিত হয়। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে ফারাক্কার পানি বণ্টন সম্পর্কিত ‘ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি’ সম্পাদিত হয়। ১৯৭৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদী পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বলা ছিল (১) ফারাক্কা পয়েন্টে শুকনা মওসুমে বাংলাদেশ শতকরা ৬০ ভাগ পানি পাবে। (২) ২১ শে এপ্রিল থেকে শুকনা মওসুমে প্রতি দশদিনের সার্কেলে বাংলাদেশ পাবে ৩৪ হাজার ৫শ’ কিউসেক পানি এবং ভারত পাবে ২০ হাজার ৫শ’ কিউসেক পানি। (৩) বাংলাদেশ তার নির্ধারিত হিস্যার শতকরা ৮০ ভাগের নীচে কখনোই পাবে না। ১৯৮২ সালের অক্টোবরে দু’বছর মেয়াদী ও ১৯৮৫ সালের নভেম্বরে তিন বছর মেয়াদী (১৯৮৬-৮৮) সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদী একটি পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি অনুযায়ী ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ মে পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে গঙ্গার পানি ভাগাভাগি হবে এবং ভারত নদীটির পানি প্রবাহের মাত্রা গত ৪০ বছরের গড় মাত্রায় বজায় রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। যেকোন সংকটময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক পানির নিশ্চয়তা পাবে। কিন্তু ভারত কখনোই এ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে পানি দেয়নি।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে ফিডার ক্যানেল চালু করার পর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নীচে পদ্মায় পানি প্রবাহ যেখানে ছিল ৬৫ হাজার কিউসেক, সেখানে ১৯৭৬ সালে এর পরিমাণ নেমে আসে মাত্র ২৩ হাজার ২০০ কিউসেকে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৬ সালের ১৮ এপ্রিল মাওলানা আব্দুল হামীদ খান ভাসানী ফারাক্কা সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী গান্ধীকে পত্র লিখেন। ১৯৭৬-এর ৪ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভাসানীকে লিখিত পত্রে ফারাক্কা সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন কথা না বলায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ মে মাওলানার নেতৃত্বে ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চ শুরু হয়। দু’দিনে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এই লংমার্চ শেষ হয় ১৭ মে। ঐদিন তিনি ঐতিহাসিক সোনামসজিদে আছরের ছালাত আদায় করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখে কর্মসূচীর সমাপ্তি ঘোষণা করেন। কানসাট হাই স্কুল ময়দানে ফারাক্কা মিছিলের সমাপ্তি ঘোষণার সময় মাওলানা ভাসানী বলেছিলেন, ‘গঙ্গার পানিতে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নিতে ভারত সরকারকে বাঁধ্য করার জন্য আমাদের আন্দোলন, আমি জানি, এখানেই শেষ নয়’। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আরো বলেন, ‘ভারত সরকারের জানা উচিত, বাংলাদেশীরা আল্লাহ পাক উনাকে ছাড়া কাউকে ভয় পায় না, কারও হুমকিকে পরোয়া করে না। ... যেকোন হামলা থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষা করা আমাদের দেশাত্মবোঁধক কর্তব্য এবং অধিকার’।
কলকাতা বন্দরের নাব্যতা বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৪১ দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধের সব ফিডার ক্যানেল চালুর কথা বলে ভারত।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, ওই ৪১ দিনের পরিবর্তে ৪৪ বছর পরও বাঁধটি চালু আছে।
ফারাক্কা বাঁধের কারণে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ফারাক্কার কারণে প্রমত্তা পদ্মায় বছরের প্রায় ৮ মাসই পানি থাকে না। এ বাঁধের কারণে পদ্মা নদী রাজশাহী শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে সরে গেছে। বিস্তীর্ণ চর ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চল হিসাবে পরিচিত রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার প্রকৃতি ও আবহাওয়া রীতিমত বদলে যাচ্ছে। এসব অঞ্চলে বিশেষত রাজশাহীতে গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরম এবং শীতকালে প্রচন্ড শীত বিরাজ করে। নদীর পলি কমে যাওয়ায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নীচে নেমে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ হচ্ছে ব্যাহত।
ফারাক্কা বাঁধের কারণে সুদীর্ঘ ৩৬ বছরে ভারত কর্তৃক একতরফাভাবে গঙ্গার পানি প্রত্যাহার বাংলাদেশের জীবন ও জীববৈচিত্র্যই কেবল ধ্বংস করেনি; বরং ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে এ দেশের কৃষি, শিল্প, বনসম্পদ ও প্রাণী বৈচিত্র্য। ফারাক্কার কারণে নদীর পলি কমে যাওয়ায় সাগরের লবণাক্ততা সহজেই উপরে উঠে আসছে। ফারাক্কা-পূর্বকালে খুলনায় সর্বোচ্চ লবণাক্ততার পরিমাণ ছিল ৫০০ মাইক্রোমোস এবং ফারাক্কায় প্রবাহ প্রত্যাহারের ফলে খুলনার লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ মাইক্রোমোস। এই লবণাক্ততা খুলনার উত্তরে ২৮০ কি.মি. পর্যন্ত উজানে সম্প্রসারিত হয়েছে। প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য মতে, এ লবণাক্ততার সর্বশেষ শিকার মধুমতি ও নবগঙ্গা নদী বিধৌত অঞ্চল। এমনকি গোপালগঞ্জ ও নড়াইল পর্যন্ত লবণাক্ত পানি উঠে এসেছে। অথচ এই দুই জেলা থেকে সাগরের দূরত্ব শ শ কিলোমিটার।
লবণাক্ততার কারণে আমাদের দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপকূলের লবণাক্ততা উঠে আসার কারণে সুস্বাদু পানির মাছের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। গাঙ্গেয় পানি ব্যবস্থায় দুই শতাধিক প্রজাতির মিঠা পানির মাছ ও ১৮ প্রজাতির চিংড়ি লালিত হয়। কিন্তু আজ এ জাতীয় ধৃত মাছের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে।
ফারাক্কায় পানি প্রত্যাহারের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদীসমূহ বর্তমানে প্রায় মৃত। ফারাক্কার কারণে মহানন্দা, পাগলা, শিব, বারনাই, ঘুমনি, বারল ও ইছামতি নদী এবং দক্ষিণে মাথাভাঙ্গা, গড়াই, ভৈরব, চেতনা, কোবাদাক, কোদালিয়া, মধুমতি, নবগঙ্গা, চিত্রা, কচুয়া, কুমার, আড়িয়াল খাঁ, বলেশ্বর, কেচা, পালং, তরকি, রূপসা, বিশখালী, ভাদরা, শিবসাহ, চন্দনা, বেগাবতী, লোহাদিয়া, তেঁতুলিয়া, ভোলা, খোলপেটুয়া, ইছামতি, কালিন্দি, সাতক্ষীরা, ধানসিঁড়ি, পশুর, শাহবাজপুর ও রায়মঙ্গল নদীর পলি ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে। শুকিয়ে গেছে প্রমত্তা পদ্মা ও খরস্রোতা যমুনা।
ফারাক্কার কারণে শুষ্ক মৌসুমে ৩২০ কিলোমিটারের বেশী প্রধান ও মধ্যম নৌপথ বন্ধ রাখতে হয়। ফলে শত শত মাঝি-মাল্লা কর্মহীন হয়ে পড়ে। ফারাক্কার ফলে গঙ্গানির্ভর এলাকায় অধিকাংশ স্থানে ভূগর্ভস্থ পানি ৩ মিটারের বেশী নীচে নেমে গেছে। মোদ্দাকথা, সার্বিক বিবেচনায় ফারাক্কা বাঁধ আমাদের জনজীবনে ‘মরণ বাঁধ’ হিসাবে পরিগণিত হয়েছে।
উজানের কোন দেশের ভাটির দেশকে না জানিয়ে আন্তর্জাতিক নদীর পানি প্রত্যাহার করা জাতিসংঘ কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক রীতি-নীতির সুস্পষ্ট লংঘন। অথচ ভারত প্রথম থেকেই ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে বিশ্বকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এ কাজটি করে যাচ্ছে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে।
প্রসঙ্গত ১৬ই মে ভাষানীর ফারাক্কা দিবস। ৫০ বছর আগে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান থেকে ফারাক্কা অভিমুখে লাখো জনতার অগ্রযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ওই দিন বাংলার সর্বস্তরের মানুষ বজ্রকণ্ঠে প্রতিবাদ করে।
এবারের ফারাক্কা দিবসের প্রাক্কালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তির বিষয়টি ফের সামনে উঠে এসেছে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের গঙ্গা চুক্তির চেয়ে গত ২/৩ বছর বেশি পানি পেলেও এবার চুক্তির চেয়ে অনেক কম পানি পেয়েছে বাংলাদেশ। শুকনো মৌসুমে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী হার্ডিঞ্জ সেতুর উজান ও ভাটিতে পদ্মার পানির স্তর নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মা পরিণত হয়েছে ছোট নদীতে। মৃত্যু ঘণ্টা বেজেছে এই অঞ্চলের সুতা নদী, কমলা নদী, ইছামতি নদী ছাড়াও আরও অন্তত ১৭টি নদীর।
ভারতের সঙ্গে গঙ্গা চুক্তি হয়েছিল সেই ২৮ বছর আগে। এর মধ্যে পানিবায়ুর পরিবর্তন হয়েছে, পানির চাহিদা বেড়েছে, অনেক কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে। তাই পদ্মাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এবং এ অঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে গঙ্গা পানি চুক্তি রিভিউ করতে হবে। ফারাক্কা দিবসের প্রাক্কালে এমন দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ হাজার ১৬৯ কিউসেক। তার আগেরদিন মঙ্গলবার এখানে পানি পাওয়া গেছে ২৬ হাজার ৬৫৬ কিউসেক।
পাবনা হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রইচ উদ্দিন জানান, ভারতীয় নদী কমিশনের সদস্য ও নির্বাহী প্রকৌশলী অপর্ভা ও মাহান্তিসহ ভারতীয় প্রতিনিধি দল পদ্মা নদীর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সরেজমিনে পানি পরিমাপ করেছেন।
ভারত শুধু ফারাক্কা ব্যারাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের পানির সমস্যা করছে তা নয়। আজ বাংলাদেশের পশ্চিম, উত্তর ও পূর্ব দিকের সীমান্তবর্তী এলাকা পানিশূন্য হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তিস্তা নদীর উজানে ভারতের গজলডোবায় বাঁধ দেয়ার কারণে শুকনো মওসুমে গজলডোবার নিম্নে শতকরা ১০ ভাগ পানিও থাকে না। তাই তিস্তা নদীতে বিরাট বিরাট চর পড়েছে। মানুষ নদীর এপার-ওপার হেঁটে পার হচ্ছে শুকনো মওসুমে। তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের প্রায় তিন লাখ হেক্টর জমির সেচব্যবস্থা বিপর্যস্ত। তিস্তার পানি চুক্তির কথা ভারত ২০ বছর ধরে বলেও তা করছে না। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী আছে। মাত্র তিনটি নদীতে বাঁধ নেই, আর সবগুলোতে ব্যারাজ, ড্যাম, মাটির বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে টিপাইমুখ ড্যাম দিয়ে ভারত বাংলাদেশের জন্য আরেক মরণফাঁদ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশের কুশিয়ারা নদীর উজানে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে বরাক নদীর উজানে ভারত টিপাইমুখ ড্যাম তৈরি করছে। এর ওপর রয়েছে ভারতের আরেক ব্যয়বহুল ও দীর্ঘমেয়াদি আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় ৩৮টি ছোট-বড় নদীর পানিপ্রবাহকে ৩০টি আন্তঃসংযোগ খালের মাধ্যমে ফারাক্কা বাঁধের ভেতর দিয়ে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে এবং এ ধরনের সংযোগ স্থাপন করে প্রায় ৭৫টি জলাধারে পানি সংরক্ষণ করে তা থেকে পরবর্তীকালে পানি সরবরাহ করে ভারতের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের খরাপ্রবণ রাজ্যগুলোতে কৃষিকাজে ব্যবহার করা হবে। এর মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার পানিপ্রবাহ পশ্চিমবঙ্গের উড়িষ্যা হয়ে দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও কর্নাটক দিয়ে তামিলনাড়ু পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে তা বাংলাদেশের জন্য যে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করবে তা কল্পনাতীত ব্যাপার। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো প্রচেষ্টা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে লক্ষ করা যাচ্ছে না।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সীমান্তে বিএসএফের পুশইন চলছেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইজিপি, বিজিবি মহাপরিচালক- সবার কণ্ঠে কেবলই নরম সুর। নেই শক্ত ও কঠোর প্রতিবাদ। নেই বীরোচিত পদক্ষেপ।
১৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার অনবদ্য তাজদীদ ‘আত-তাক্বউইমুশ শামসী’ সম্পর্কে জানা ও পালন করা এবং শুকরিয়া আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরয। মুসলমান আর কতকাল গাফিল ও জাহিল থাকবে?
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজও বেশি বেশি করতে হবে।
১৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রতিবছর বেকার হয় ১০ লাখ তরুণ প্রতিবছর শ্রমবাজারে তথা ক্ষুদ্র ব্যবসায় প্রবেশ করে ২৪ লাখ তরুণ। প্রতি বছর সরকারী চাকুরীতে প্রবেশ করে ১ লাখেরও কম সরকারী চাকুরীতে কোটা বাতিলের জন্য উপদেষ্টা সরকার গঠন হলো। আর সে উপদেষ্টা সরকার ৩৪ লাখ কর্মজীবির আশ্রয়স্থল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তথা ব্যবসাকে অন্তর্বর্তী সরকার দিন দিন অন্তরহীন করে যাচ্ছে।
১২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন ক্ষতিকারক এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে যাচ্ছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্যটক নিষিদ্ধের পর এখন চলছে- খোদ নারিকেল দ্বীপ বাসীকে উৎখাতের গভীর এবং নির্মম ও নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্র। চালানো হচ্ছে ক্ষুধার মারনাস্ত্র। তৈরী করা হচ্ছে দুর্ভিক্ষ এবং কুকুরের অভয়ারণ্য।
০৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
গত ৩রা মে হেফাজতের সমাবেশে ব্লাসফেমী আইন চাওয়া হয়েছে ব্লাসফেমী আইন- ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে বৈধতা বিচার ও একটি অর্šÍভেদী বিশ্লেষণ (২য় পর্ব)
০৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
গত ৩রা মে হেফাজতের সমাবেশে ব্লাসফেমী আইন চাওয়া হয়েছে ব্লাসফেমী আইন- ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে বৈধতা বিচার ও একটি অর্šÍভেদী বিশ্লেষণ (১ম পর্ব)
০৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচক মহল মন্তব্য করছেন; “রাজনীতি, ‘বন্যা’ ‘সরকার’ কোনো কিছুই বুঝে না ইউনুস” তবে কি করে এবং কতভাবে- ‘বাংলাদেশের সম্পদ সার্বভৌমত্ব বিরোধীদের হাতে তুলে দেয়া যায়’ -সেটা ভালো বুঝে এবং করে।
০৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: অতীতের মতই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর লাগাম টানছে না অর্ন্তবর্তী সরকার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে শেখানো হচ্ছে অশ্লীলতা, পড়ানো হচ্ছে ভারতসহ ভীনদেশের ইতিহাস-সংস্কৃতি সংবিধান ও দেশবিরোধী এইসকল স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপ কোথায়?
০৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
০৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুদানকে দুভাগে বিভক্ত করার মতই গভীর কূট প্রসারী ও দখলদার ইসরাইল- সৃষ্টির মত নির্মম পরিকল্পনা করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করার বহুমুখী ষড়যন্ত্রের নীলনকশায় করিডর দেয়ার ব্যবস্থা দিয়ে- বাংলাদেশে আরেক গাজা পরিস্থিতি তৈরী করতে যাচ্ছে জাতিসংঘ উপজাতিদের অনুষ্ঠানে বান্দরবানে আরাকান আর্মির আগমনের খবর স্বীকার করলেও শক্ত জবাব দেন নি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতি জনগণের গালি ছিল “দেশটা তোর বাপের নাকি?”
০৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)