মন্তব্য কলাম
বহুমুখী সমস্যায় পতিত দেশের আগর-আতর শিল্প পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আতর শিল্পে নেই আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ সঙ্কট ও সমস্যা সমাধান করে আগর-আতর শিল্প থেকে ইনশাআল্লাহ রফতানি হতে পারে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
, ১৯ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৬ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ০২ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মন্তব্য কলাম

আতর শিল্পের মূল নিয়ামক হচ্ছে আগর। আগর গাছ থেকে তৈরি হয় মূল্যবান আতর। এক কেজি আগর তেলের মূল্য কয়েক লাখ টাকা। আতর শিল্পেও বাংলাদেশে সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটের মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে আতর শিল্প। সেখানে আগর চাষের পাশাপাশি ২০০টির মতো ছোট-বড় কারখানা রয়েছে। ভারত, সিঙ্গাপুর, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশেই রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত আগর থেকে তৈরী আতর। ২০১৩ সালে আগর-আতরকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে, বাংলাদেশে আগর চাষ কিংবা আতর শিল্পের যে সম্ভাবনা রয়েছে তার তুলনায় খুব কম পরিমাণেই উৎপাদন ও রফতানি হচ্ছে। যার পেছনে জড়িত এ খাতের অনেক সমস্যা ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাব।
মৌলভীবাজারে আগর গাছ থেকে তৈরি সুগন্ধি শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও রপ্তানিতে বৈধ সনদপ্রাপ্তির জটিলতায় ভুগছে ব্যবসায়ীরা। উৎপাদনে আধুনিক পদ্ধতি ও পরীক্ষাগার না থাকায় এর মান নিয়ে সমস্যা, এইচএস কোডসহ বিমানবন্দরে নানা জটিলতায় রপ্তানি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আগর রপ্তানির ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হল সাইটিস (কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেঞ্জারড অব ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা) এবং এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) সনদ পাওয়া। এ সব শর্তের বেড়াজালে অনেক আতর ব্যবসায়ী আটকা পড়ে। ফলে অনেকে বাধ্য হচ্ছে চোরাই পথে আতর রপ্তানি করতে। ফলে বৈধ পথে রপ্তানি না হয়ে বিকল্প পথে তা চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে। আর সরকার হারাচ্ছে বিপুল অংকের রাজস্ব।
আগর শিল্পে নানাবিধ সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সমস্যা হলো আধুনিক কারিগরি জ্ঞানের অভাব। পুরনো চাষ পদ্ধতি ও নিম্ন মানের পণ্য। একটি বিষয় উল্লেখ করার মতো তা হলো, বাংলাদেশে উৎপাদিত আগর আতর তেল রিফাইনিং (পরিশোধিত) করার ব্যবস্থা নাই। অপরিশোধিত আগর আতর অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বিক্রি করতে হয় এবং এই সুবিধাটুকু মধ্যপ্রাচ্যের অনেক প্রতিষ্ঠান কাজে লাগিয়ে শুধু রিফাইনিং করেই কয়েকগুণ বেশি অর্থ আয় করে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে আগর আতর রিফাইনিং ব্যবস্থাপনার অভাব একটা বড় সমস্যা। এছাড়া কারখানাগুলোয় গ্যাস সরবরাহ সমস্যার কারণে তাদের উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২০০ কারখানার মধ্যে অর্ধেকের বেশি কারখানায় গ্যাস সংযোগ নেই। আর যেসব কারখানায় গ্যাস সংযোগ রয়েছে, সেগুলোতে গ্যাসের চাপ কম থাকায় আগুনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ঠিকমতো আতর উঠে না।
প্রসঙ্গত, কৃষি প্রধান বাংলাদেশে আগর একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অথচ অবিকশিত শিল্প। সরকারি পলিসি প্লানিং এর আওতায় সম্ভাব্য এলাকায় এর চাষ সম্প্রসারণ, চাষ ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রমকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসলে এবং ব্যক্তির পরিবর্তে সরকারি উদ্যোগে প্রধান প্রধান আগর রপ্তানিকারক দেশে বাংলাদেশের আগরজাত পণ্য প্রবেশের অনুকূল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে এ শিল্পের বদ্ধ জানালা খুলে দিলে আগর-আতর বাংলাদেশের একটি প্রিমিয়াম পণ্য হতে পারে। বিশ্ববাজারে এর চাহিদা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে আগর চাষের জন্য উপযোগী ভূমি রয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে আগরের আবাদ হচ্ছে। পুরনো পদ্ধতির পরিবর্তে কৃত্রিম উপায়ে আগর গাছে সংক্রমণের আধুনিক প্রযুক্তির প্রবর্তন করা গেলে এবং আগর তেলসহ অন্যান্য আগরজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হলে আগর শিল্পে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করতে পারে। উন্নত প্রযুক্তির বিষয়ে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ভারত প্রভৃতি দেশের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। উন্নত পদ্ধতিতে আগর চাষ অত্যন্ত লাভজনক বিধায় সরকারি পলিসি সাপোর্ট ও পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে এ খাতে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। ফলে আগর শিল্প বাংলাদেশে একটি অন্যতম বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী খাত হিসেবে স্থান করে নিবে। উৎপাদকদের সুত্রে, দেশে উৎপাদিত প্রতি তোলা আতরের দাম ৭ হাজার টাকা। যার প্রতি লিটারের মূল্য প্রায় ৭ লাখ টাকা। বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ১০ হাজার লিটার আতরের চাহিদা রয়েছে। যার আর্থিক মূল্য দাড়ায় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই বিশাল আতরের বাজার ধরার পূর্ণ সক্ষমতা ও আবহাওয়াগত সুবিধা বাংলাদেশের রয়েছে।
সঙ্গতকারণেই তাই আমরা মনে করি, সরকার সংশ্লিষ্টদের দেশের আগর-আতর শিল্পের উন্নয়নে সরকারিভাবে আগর চাষীদের প্রশিক্ষণের সুবিধা সৃষ্টি করা এবং আগর থেকে বিশ্বমানের বহুবিধ পণ্য উৎপাদনের বিষয়ে তাদের দক্ষ করে তোলা। আগরজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমান অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিবর্তে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যে চালু করা। আগর রপ্তানীর ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক বাঁধা অপসারণ করা। সরকারী বনের আগর গাছ বিক্রির ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রক্রিজাতকরণ শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে এই শিল্পের ফরোয়ার্ড লিংকেজকে শক্তিশালী করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ প্রশস্ত করা। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে স্থান করে নেওয়ার জন্য আগর চাষীদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রকৃত অর্থে মূল্যস্ফীতি কী কাঙ্খিতভাবে কমেছে? মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জন্য সম্যক ধারণা সহজ করা হয় না কেন? মূল্যস্ফীতি কতভাবে মানুষের পকেট কাটে তা সর্বজনবিদিত নয় কেন?
১০ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন ক্ষতিকারক এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে যাচ্ছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
০৯ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দেশবিরোধী স্টারলিঙ্কের হাতে ইন্টারনেট-এর গোপনীয়তা এবং এর বাণিজ্য তুলে দেয়া হয়েছে। এবার মোবাইলের মালিকানা ৮০ ভাগ পর্যন্ত পছন্দের বিদেশী কোম্পানীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। দেশের ব্যবসায়ীদের সর্বস্বান্ত করে বিদেশী বেনিয়াদের প্রতিষ্ঠা করা তথা নতুন ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী খোলাই কী এই সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা এজেন্টদের উদ্দেশ্যে?
০৮ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
২০৫০ সালের মধ্যেই মুসলমানের সংখ্যা সারা বিশ্বে প্রথম হবে হিন্দুত্ববাদী ভারতেও দিন দিন হিন্দুদের সংখ্যা কমে, মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে তবে হিন্দুত্ববাদী ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার হতো আরো বহুগুণ হিন্দুত্ববাদী ভারতে জোর করে মুসলমানদের বন্ধ্যা করে দেয়া হয়
০৬ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কেবল জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলাই নয়, প্রথমেই এর দূত হিসেবে আত্মস্বীকৃত সমকামীকে ঢাকায় পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ।
০৫ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
০৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাংবাদিক মহল, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সমালোচক মহল সবাই প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকারকে ভয়াবহ মিথ্যাবাদী ও ষড়যন্ত্রকারী বলে প্রচার করছে। ‘অন্তর্বর্তী সরকার বেকায়দায় পড়লে- ‘না’ করে আর সুযোগ বুঝে ঠিকই মার্কিনী এজেন্ডা তথা দেশ ও ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে’ বলে অভিযোগ উঠেছে
০২ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা গবেষণার দিকে আগ্রহী না হয়ে বিসিএস পরীক্ষায় আগ্রহী হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তহবিল বা অর্থায়ন আসার প্রক্রিয়াটি সরকারের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের মাধ্যমে সম্পন্ন হতে হবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক স্থাপন হয়নি সব বাধা দূর করে জীবন-জীবিকা বান্ধব সমৃদ্ধ গবেষণার জন্য যথাযথ তৎপরতা ও প্রচেষ্টা একান্ত দরকার
০১ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফকির- ‘আমেরিকার’ প্রকৃত ঋণ শত ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশী দেউলিয়া আমেরিকা, ঋণ করেই যুদ্ধের জুয়া খেলছে আর মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম শাসকরা আমেরিকান রিকন্ডিশন অস্ত্র কিনে তার জুয়ায় রসদের, যোগান দিয়েই চলছে (নাউযুবিল্লাহ)
৩০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পানিবায়ু তহবিল: জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগই শেষ কথা না বরং আই.এম.এফ এবং চীনা ঋণের ফাঁদের মতই এটা এক মহা প্রতারণাযুক্ত ফাঁদ এ সম্পর্কে চাই জোরদার সচেতনতা
২৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তথা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ আর দেশীয় প্রথম আলো গং প্রচারণা চালাচ্ছে এবং প্রেক্ষাপট তৈরীর চেষ্টা করছে- “আরাকান আর্মির সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে এবং তথাকথিত মানবিক করিডোর দিতে” বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, মুসলমান তথা রোহিঙ্গাদের স্বার্থ তাদের কাছে তুচ্ছ, ফেলনা।
২৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইরান ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার জন্য বিশেষভাবে দায়ী সালাফী-লা মাযহাবী ওহাবী মালানারা কারণ তারাই সৌদি ইহুদী শাসকদের প্রশংসা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের দোষ-ত্রুটি এবং মুসলমান বিদ্বেষী ও ইসলাম বিরোধী কাজ চুপিয়ে রাখে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে তাদের কুফরী আক্বীদা প্রচার করে
২৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)