বাংলাদেশ থেকে রফতানি হচ্ছে সুন্নতি খাদ্য পনির
অপ্রচলিত পণ্য হলেও দিন দিন বাড়ছে পনিরের চাহিদা সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে পুজি সঙ্কটসহ নানাবিধ সমস্যা। সমস্যাগুলো দুর করে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে সুন্নতি খাদ্য পনির হতে পারে দেশের অন্যতম অর্থকরী খাত।
, ১৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মন্তব্য কলাম
পনির শরীর সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করে। দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের লাবণ্য দিপ্তি দীর্ঘদিন বজায় রাখে। নিয়মিত সেবনে (লিনোলিক ও স্পাইনগো লিপিডম) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পনিরে কার্বহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। পনিরে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
পনির বাংলাদেশে একটি অপ্রচলিত খাদ্যপণ্য হিসেবে পরিচিত হলেও সাম্প্রতিক সময়ে দেশের মানুষ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পনির গ্রহণ করছে। দেশে পনিরের চাহিদা বা কি পরিমাণ পনির প্রতি বছর গ্রহন করে দেশের মানুষ এ নিয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে প্রতি বছর দেশে পনির গ্রহন বাড়ছে। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পনিরকে ঘিরে গড়ে উঠছে অর্থনৈতিক খাত। এদেশের অষ্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, বিবাড়িয়া, ঠাকুরগাঁসহ বিভিন্ন স্থানে পনির তৈরি হয়ে থাকে। বর্তমানে দেশে দিন দিন পনিরের চাহিদা বাড়ছে এবং বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনও শুরু হয়েছে। পনিরের প্রকারভেদ আছে। তবে এদের স্বাদের খুব একটা পার্থক্য নেই।
বিশেষভাবে বাংলাদেশে পনির জন্য বিখ্যাত হলো কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম। এই অঞ্চলে পনির উৎপাদন শুরু হয়েছিলো মোঘল আমল থেকেই। এখানকার পনির মোঘল দরবারে স্থান পেয়েছিলো। দেশ-বিদেশে সুখ্যাতি অর্জন করা অষ্টগ্রামের পনির এখন হয়ে উঠেছে গোটা কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যের অন্যতম স্মারক। কিশোরগঞ্জের জেলা ব্র্যান্ডিং পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া পনিরের কদর এখন সর্বত্র। হাওরের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসায় পনির হয়ে ওঠেছে অপার সম্ভাবনার এক শিল্প। বর্তমানে প্রতিদিন ১ লাখ টাকারও বেশি মূল্যের পনির বিক্রি হয় অষ্টগ্রাম থেকে। আর মাসে বিক্রি হয় ৩০ লাখ টাকারও বেশি। অষ্টগ্রামের পনির ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হয়। ইংল্যান্ডসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে অষ্টগ্রামের পনির রফতানি হচ্ছে।
অষ্টগ্রামের পাশাপাশি দেশের ঠাকুরগাও জেলাতেও পনির শিল্প গড়ে উঠেছে। ঐতিহ্য না থাকলেও বাণিজ্যিক কারণে ইদানীং এ জেলায় দুগ্ধপণ্যটি তৈরিতে কারখানা বাড়ছে। কয়েক বছরের ব্যবধানে জেলাটিতে ২০টি পনির কারখানা চালু হয়েছে। তবে স্থানীয় বা দেশের বাইরে বাজার তৈরি হয়নি এখনো। ঠাকুরগাঁওয়ে তৈরি পনিরের প্রায় পুরোটাই বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, বাংলাদেশে পনিরের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিদেশে রফতানি শুরু হওয়ায় সরকারের উচিত হবে, এ খাতটিকে পর্যাপ্ত ব্র্যান্ডিং এবং পৃষ্ঠপোষকতা করা। পনির শুধু যে দেশের মানুষের পুষ্টির জোগান দেবে তাই নয় বরং এর পাশাপাশি দেশের দুগ্ধখাতকে সমৃদ্ধ করবে পনির। কারণ দেশে প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ দুধ উৎপাদন হলেও বছরের বিভিন্ন সময়ে দরপতনের প্রভাবে তা নষ্ট হয়ে যায়। যদি দেশের দুগ্ধখাতে পনিরের প্রচলন বাড়ানো যায়, প্রশিক্ষন এবং অবকাঠামোগত প্রযুক্তি সুবিধা প্রদান করা যায় তাহলে খামারীরা দরপতনের সময়েও সেই দুধ পনিরে রুপান্তরিত করে বেশ ভালো মূল্যে বিক্রি করে নিজেদের আর্থিক উন্নতি সাধন করতে পারবেন। কারণ, বাংলাদেশে পনির অপ্রচলিত হলেও ইউরোপের দেশগুলোসহ বিশে^র বেশ কয়েকটি দেশে পনিরের চড়া মূল্য। যা রফতানির মাধ্যমে দেশ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পনিরের মতো বহু অপ্রচলিত পণ্য রয়েছে যেগুলোর সক্ষমতা রয়েছে কিন্তু শুধু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিকশিত হতে পারছে না। কিশোরগঞ্জ কিংবা অষ্টগ্রামের যে পনির বিদেশে রফতানি হচ্ছে তাও সামান্য পরিমানে এবং সম্পূর্ণ স্থানীয় সক্ষমতায়। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই কষ্টে আছে পনির উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা। সাম্প্রতিক সময়ে দুধের দাম, হাওরে চাইল্যাঘাস ও গাভীর অভাব পনির ব্যবসায়ী কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে মনে করেছেন স্থানীয়রা। পনির তৈরি ব্যয়বহুল হওয়ায় পুজি সঙ্কটে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ অষ্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে গিয়ে ব্যবসা করছেন। সরকারি সহায়তা পেলে এই এলাকায় পনিরের ঐতিহ্য আবারো ফেরানো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জের পনিরের প্রশংসা করেছেন খোদ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আমরা মনে করি, শুধু প্রশংসার বৃত্তেই আবদ্ধ থাকলে এই পনির খাতের উত্তোরন সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা। সরকারের উচিত হবে, এই পনির খাতকে দেশের অন্যান্য অর্থকরী খাতগুলোর কাতারে নিয়ে আসা। পনির উৎপাদনে বাজেট বরাদ্দ করা। মানসম্মত পনির উৎপাদনে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা। তাহলেই এক সময় দেশের পনির আন্তর্জাতিক বাজারের একটি বিশাল চাহিদা পূরণ করে দেশকে করবে সমৃদ্ধ। ইনশাআল্লাহ!
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
রেলপথ দেশব্যাপী পণ্য পরিবহনের জন্য সাশ্রয়ী ও নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। রেলের ইঞ্জিন স্বল্পতার কারণে আগ্রহ থাকলেও প্রতিষ্ঠান বেছে নিচ্ছে অন্য পথ চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার পরিবহনের ৯৬ শতাংশই হয় সড়কপথে অপরদিকে রেল অথবা সড়কপথে যাত্রী চলাচল কিংবা পণ্য পরিবহনে তুলনামূলকভাবে খরচ অনেক কম হয় পানিপথে।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পশ্চিমা সম্রাজ্যবাদীদের দীর্ঘদিনের শোষণ আর অব্যাহত লুটপাটের কারণে সোমালিয়া, চাদ, নাইজেরিয়া, নাইজার, দক্ষিণ সুদান, কেনিয়া ও ইথিওপিয়ার প্রায় ২ কোটি মানুষ এখন দুর্ভিক্ষ আক্রান্ত। দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে আর দেরি নেই, এরকম দুঃসহ দিন গুনছে পূর্ব-আফ্রিকার উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তানজানিয়ার প্রায় ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। কিন্তু নিশ্চুপ বিশ্ব গণমাধ্যম, নিষ্ক্রিয় বিশ্ববিবেক, নীরব মুসলিম বিশ্ব!
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে অর্থনীতি গভীর সংকটে শেষ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি মাত্র ৩.৩৫ শতাংশ দেশের অর্থনীতি তলানী তথা বারোটা বাজার খবর এখন সর্বত্রই ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৫ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইরান ফিলিস্তিনে ইসরাইলী হামলার জন্য বিশেষভাবে দায়ী সালাফী-লা মাযহাবী ওহাবী মালানারা কারণ তারাই সৌদি ইহুদী শাসকদের প্রশংসা করে, পৃষ্ঠপোষকতা করে তাদের দোষ-ত্রুটি এবং মুসলমান বিদ্বেষী ও ইসলাম বিরোধী কাজ চুপিয়ে রাখে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিম দেশে তাদের কুফরী আক্বীদা প্রচার করে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বাজারে নতুন আলু উঠলেও দাম চড়া, কেজিতে ২০০ টাকা পুরোনো আলু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উদ্যোগ জরুরি আলু রফতানীতে কমপক্ষে লাখো কোটি টাকা আয় সম্ভব আলুর জাতের মান বৃদ্ধি এবং হিমাগার স্থাপনসহ রফতানীর ক্ষেত্রে সব বাধা দূর করে সরকারকে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রশাসন খবর না রাখলেও প্রচ- শীতে মারা যায় হাজার হাজার লোক। চরম ভোগান্তিতে পড়ে কোটি কোটি লোক। সরকারি সাহায্যের হাত এখনও না বাড়ানো মর্মান্তিক। তবে শুধু লোক দেখানো উদ্যোগ গ্রহণই নয়; প্রকৃত সমাধানে চাই সম্মানিত ইসলামী চেতনার বিস্তার। তাহলে ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে কোনো আর্তেরই আহাজারি উচ্চারণ হবার নয়।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার। কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে। এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘উচ্চ সুদহার ব্যবসায়ীরা আর সহ্য করতে পারছেন না। ‘অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এবং উৎসে কর কর্তন (টিডিএস) ব্যবসায়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। এআইটি ও টিডিএস আসলে ট্যাক্স টেরোরিজম বা কর-সন্ত্রাস। ব্যবসায়ীরা ‘কর-সন্ত্রাস’ থেকে মুক্তি চান। ব্যবসায়ীরা অগ্রিম আয়কর ও উৎসে করের চাপ থেকে মুক্তি চান।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশে মজুদ খনিজ সম্পদের অর্থমূল্য প্রায় ৫০ ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি কিন্তু উত্তোলনে বিনিয়োগ নাই বললেই চলে অথচ দেশ থেকে অর্থ পাচারের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা সরকারের ঋণের পরিমাণ প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে, দেশে কেন উল্টো বেড়েছে? বিশ্ববাজারে জ্বালানি সহ খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে ভোক্তা বাড়তি দামে কিনছে বিশ্বে জ্বালানীসহ খাদ্য পণ্যের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে সুফল মিলছে না কেন? প্রতিবেশীরা স্বস্তিতে, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়ছে কেনো?
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা ‘আইএমএফের চাপে’ নতুন করের বোঝা বাড়ছে ৫৫ হাজার কোটি টাকা আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ এবং সামাজিক খাতে ভর্তুকি কমাতে হয়। এতে সমাজের নিচের স্তরের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












