বাংলিশ কথা বলা কী উৎকৃষ্ট নাকি নিকৃষ্ট কাজ? (২)
, ১৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
আসলে, অনেকে হয়ত ইংরেজীকে আন্তর্জাতিক ভাষা মনে করে, কিন্তু বাস্তবে পৃথিবীর অনেক দেশেই ইংরেজীর প্রচলন নেই। খোদ ইউরোপেই নেই। ইউরোপের অধিকাংশ দেশ তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষায় কথা বলা। ঐ সব দেশে উচ্চ শিক্ষা থেকে শুরু করে সবকিছুই তাদের মাতৃভাষা ব্যবহৃত হয়।
বস্তুত, পৃথিবীর যেই দেশ নিজ পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছে, প্রথমে সে নিজ ভাষাকে আত্মস্থ করেছে। নিজ ভাষায় কথা বলাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে এবং দেশের ভেতরে বিদেশী ভাষার ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করেছে। কোন একটি জাতিকে স্বতন্ত্র শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে হলে এটা হচ্ছে তার প্রথম শর্ত। সমস্যা হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই চেতনাটাই নেই যে, মাতৃভাষার সাথে ইংরেজী ভাষার মিশ্রণ কিংবা ইংরেজী ভাষার ব্যবহার পরনির্ভরশীলতা বা গোলামির কাজ, সেটাই তারা বুঝতে পারছে না।
সাধারণত আমাদের দেশে ইংরেজী শব্দ প্রবেশের একটা বড় ফুটো হচ্ছে উচ্চতর শিক্ষা। দেখা যায়, বিদেশী কোন মাধ্যম হতে শিক্ষা গ্রহণের সময় বিভিন্ন বিশেষায়িত বিষয়ের পরিভাষা হিসেবে ইংরেজী শব্দ প্রবেশ করে। ইউরোপে যে সমস্ত দেশ ইংরেজী বাদ দিয়ে নিজের মাতৃভাষায় অভ্যস্ত হয়েছে, তারা প্রথমেই এই ফুটোটি বন্ধ করেছে। মানে উচ্চ শিক্ষাকে নিজ মাতৃভাষায় করেছে। বাংলাদেশেরও এমনটা করা উচিত ছিলো, অর্থাৎ উচ্চ শিক্ষা বা বিশেষায়িত বিষয়ের পরিভাষাগুলো আগে বাংলা অনুবাদের ব্যবস্থা করা। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে তো সেটাই হয় না, উপরন্তু আমরা যে সচারচর বাংলা শব্দগুলো ব্যবহার করি, সেগুলো ইংরেজীর চাপে বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
উল্লেখ্য, বাংলাদশে ইংরেজীর আগ্রাসন রোধে উদ্যোগ খুব কম। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে একবার বিষয়টি নিয়ে খুব তোলপাড় হয়েছিলো। বাংলাদেশ এফএম বেতারে প্রচুর পরিমাণে বাংলিশ চর্চা হয়। সেটাকে কেন্দ্র করে উচ্চ আদালত সেই বিকৃত ভাষা বন্ধের নির্দেশ দেয়। আজ এক যুগ পার হয়ে গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এফএম বেতারের হাজারগুন বাংলাভাষা বিকৃত হচ্ছে, মহামারী আকারে বাংলিশ ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু সেটা দেখা বা তদারকের কেউ নেই।
এ অবস্থায় বাংলা ভাষাকে বাঁচানো এবং স্বরূপে ফিরিয়ে আনার সমন্নিত উদ্যোগ নেয়া খুব জরুরী। প্রতিটি মহল থেকেই বাংলা ভাষার দূষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও উদ্যোগ নেয়া দরকার। এটা বাংলা ভাষা বা বাঙালী জাতির অস্তিত্বের প্রশ্ন, বিষয়টিকে ক্ষুদ্র করে দেখার কোন সুযোগ নেই।
-এস হাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানকে ‘বড়দিন’ বলা যাবে না
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীন আরাকান চাই!
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশের সার্বভৌমত্বের সংকটে- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতেই হবে
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পৃথিবীর সবচাইতে কুখ্যাত কিছু নৌদস্যুর অপকীর্তি
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফসলের একটি অংশ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে! -এদেশে উপজাতি চৌকিদারকে কেন ‘রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে?
২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ছু’দের বদ আমলই কি এর জন্য দায়ী নয়?
২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে জিএম ফুড প্রচলনের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জান্নাতী এবং জাহান্নামী ব্যক্তিদের কিছু আলামত
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔ পনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিশ ধরায় বাংলাদেশ-ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়ে বড় পার্থক্য নিষেধাজ্ঞার নামে ভিনদেশী জেলেদের জামাই আদরে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় আর দেশীয় জেলেদের জেলে পুরা হয় জেলেদের প্রতি এ নির্মম জুলুম আর কতকাল?
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আধুনিকতা নাম দিয়ে হারাম ‘ছবি’ তোলা থেকে বিরত থাকুন
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












