বিগত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনে শহিদ হয়েছেন ৩ কোটি মুসলমান, বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৪ কোটি মুসলমান। এই সাম্রাজ্যবাদী লুটেরাদের রুখতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং হাকীক্বীভাবে দ্বীন ইসলামে ফিরে আসার বিকল্প নেই।
, ০৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মন্তব্য কলাম
বর্তমানে বিশ্বের বহু মুসলিম দেশ সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন ও গৃহযুদ্ধের ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পরিণত হয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর এই করুণ অবস্থার পেছনে মূল কলকাঠিই নেড়েছে সাম্রাজ্যবাদী-ইহুদীবাদী যুক্তরাষ্ট্র। নাইন ইলেভেনের পর কথিত সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের নাম দিয়ে তারা ধ্বংস করেছে একের পর এক মুসলিম দেশ। বাস্তচ্যূত এবং নির্মমভাবে শহীদ হয়েছে কোটি কোটি মুসলমান শিশু, নারী তথা নিরীহ মানুষ।
গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত ৮ টি মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে আটটি যুদ্ধ শুরু করেছে অথবা অংশ নিয়েছে এবং তাতে অন্তত ৪ কোটি মানুষ ঘরহারা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাদে ১৯০০ সালের পর থেকে যেকোনও যুদ্ধ বা বিপর্যয়ের কারণে বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের চেয়ে এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর মধ্যে, আফগানিস্তান (৫.৩ মিলিয়ন), ইরাক (৯.২ মিলিয়ন), পাকিস্তান (৩.৭ মিলিয়ন), ইয়েমেন (৪.৪ মিলিয়ন), সোমালিয়া (৪.২ মিলিয়ন), ফিলিপাইন (১.৭ মিলিয়ন), লিবিয়া (১.২ মিলিয়ন) এবং সিরিয়া ( ৭.১ মিলিয়ন)। এছাড়াও বুর্কিনা ফাসো, ক্যামেরুন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, চাদ, কঙ্গো, মালি, নাইজার এবং তিউনিসিয়ার বাসিন্দাদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। ২০ বছরে ৩ কোটি মুসলমানকে শহীদ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এই সংখ্যা নিতান্তই প্রকাশের স্বার্থে। প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।
মূলত; যুক্তরাষ্ট্র কখনোই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি। তাদের প্রতিটি যুদ্ধই ছিলো রাজনৈতিক, মুসলিমবিরোধী ও খনিজ সম্পদ লুটের স্বার্থে। যা শুরুতেও ছিলো এবং এখনো জারি আছে।
মুসলিম দেশগুলো ধ্বংসের পর যুক্তরাষ্ট্র মুসলিম দেশগুলো অফুরন্ত খনিজ সম্পদগুলো লুট করেছে এবং করছে। মুসলমানদের নিঃশ্বেষ করার পর তাদের মূল লক্ষ্য মূলত এটিই। আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনেরও লক্ষ্য ছিলো খনিজ সম্পদ লুট। দেশটির মাটির নিচে প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ উত্তোলনযোগ্য হয়ে আছে। স্বর্ণ আর নিকেল ছাড়াও আফগানিস্তানে আছে লিথিয়াম, কপারসহ অনেক মূল্যবান খনিজ। আছে স্ক্যানডিয়াম, ইউটিরিয়ামসহ বহু দুর্লভ মৃত্তিকা মৌল। আফ্রিকার মুসলিম দেশগুলোকে দরিদ্র বানিয়ে রাখা হলেও দেশগুলোতে রয়েছে স্বর্ণখনিজসহ বহুবিধ মূল্যবান এবং অফুরন্ত খনিজ সম্পদ। যা লুট করতেও আগ্রাসন চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আফ্রিকার মূল্যবান খনিজ সম্পদ থেকে দেদার টাকা লুটে যুক্তরাষ্ট্র। যেমন: কঙ্গো। প্রতিবেশী উগান্ডা, রোয়ান্ডা ও বুরুন্ডি থেকে আসা সশস্ত্র গু-াবাহিনী কঙ্গো দাপিয়ে বেড়ায়, লুট করে সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পশ্চিমা দেশের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে কম দামে তা বিক্রি করে। এইসব দুষ্কৃতীকারীদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্র সাহায্য করে থাকে। লিবিয়াতেও আগ্রাসনের সময় বিপুল পরিমাণ তেল লুট করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং এখনো করছে। আলেজেরিয়ার খনিজ সম্পদ বিশেষ করে গ্যাসের দিকেও দীর্ঘদিনের শকুনী নজর যুক্তরাষ্ট্রের। ফলে দেশটিতে বর্তমানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
দেশে দেশে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের বড় বড় তেল ও গ্যাস কোম্পানির ব্যবসায়ীদের ফুলে ফেঁপে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন দেশে আগ্রাসনের সময় শত শত কোটি ডলার আয় করেছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে অ্যামাজন, ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট ও টুইটার বিপুল অর্থ আয় করেছে।
প্রসঙ্গত, যেখানে এক সময় পুরো পৃথিবী শাসন করেছেন মুসলমান, জ্ঞান-বিজ্ঞান, সমরখাত কিংবা ধন-সম্পদে সর্বশ্রেষ্ট ছিলেন মুসলমানরা, সেখানে সারাবিশ্বের মুসলমানরা আজ নির্যাতিত একটি জাতি। যুক্তরাষ্ট্রের মতো লুটেরারা মুসলমানদের নিঃশ্বেষ করে দিচ্ছে। মুসলমানদের হাহাকারে বিশ্বের বাতাস ভারি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের একটিই উত্তর। মুসলমানরা মূল বিষয় থেকে সরে গিয়েছে। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম থেকে সরে গিয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্ম^রণ মুবারক, উনাদের আদর্শ মুবারক থেকে দুরে সরে গিয়েছে।
তবে এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। এখনো যদি বিশ্ব মুসলিম পূর্বের সেই স্বর্ণালী যুগে ফিরে যেতে চায়, তাদের হারানো গৌরব ফিরে পেতে চায়, সাম্রাজ্যবাদীদের কবল থেকে রক্ষা পেতে চায়, নিজেদের ঈমানী কুওওয়াত ফিরে পেতে চায় তাহলে মুসলমানদের উচিত সর্বপ্রথম হাক্বীকীভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলামে প্রবেশ করা। নিজেদের ঈমান-আক্বীদাহ ও আমল ঠিক করা। বিধর্মী-বাতিলদের সকল অপসংস্কৃতি বর্জন করে ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুনে সম্পৃক্ত হওয়া।
আর এসব পদক্ষেপ তখনই সম্ভব হবে যখন তাবৎ বিশ্ব মুসলিম সঠিক দিকনির্দেশনায় পরিচালিত হবে। আর বর্তমান বিশ্বে একমাত্র সঠিক দিক-নির্দেশনা প্রদানকারী হচ্ছেন বর্তমান যামানার যিনি রাহবার, পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মাহমদুহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম। যিনি মুসলমানদের সেই স্বর্ণালী অতীত আবারো ফিরিয়ে নিয়ে আসছেন উনার আসামান্য তাজদীদ মুবারকে। যিনি দূর করছেন মুসলমানদের হীনমন্মতা।
তাই বিশ্ব মুসলমানদের উচিত হবে নিজেদের হতাশা দুর্দশা দূর করতে, সা¤্রাজ্যবাদীদের নির্মূল করতে উনার মহাপবিত্র দুরুদ দারাজাহ মুবারকে এসে আত্মসমর্পন করা, উনার মুবারক দিক নির্দেশনায় মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার আলোকে জীবন পরিচালিত করা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নাটক-সিনেমা করা ও দেখা হারাম- ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তা মানে না। ভারতীয় অপরাধমূলক টিভি সিরিজ দেখে হত্যা, ব্যাংক ডাকাতি, পরকিয়ার মতো অপরাধ আয়ত্ত্ব করছে দেশবাসী। কিন্তু নাটক-সিনেমার ভয়াবহ কুফল রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারছে না। ডিশ এন্টেনার প্রসারে হিন্দি সিরিয়ালের কুপ্রভাবে দেশ জাতি বিপর্যস্ত।
০৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নাটক-সিনেমা করা ও দেখা হারাম- ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তা মানে না। ভারতীয় অপরাধমূলক টিভি সিরিজ দেখে হত্যা, ব্যাংক ডাকাতি, পরকিয়ার মতো অপরাধ আয়ত্ত্ব করছে দেশবাসী। কিন্তু নাটক-সিনেমার ভয়াবহ কুফল রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারছে না। ডিশ এন্টেনার প্রসারে হিন্দি সিরিয়ালের কুপ্রভাবে দেশ জাতি বিপর্যস্ত।
০৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নাটক-সিনেমা করা ও দেখা হারাম- ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তা মানে না। ভারতীয় অপরাধমূলক টিভি সিরিজ দেখে হত্যা, ব্যাংক ডাকাতি, পরকিয়ার মতো অপরাধ আয়ত্ত্ব করছে দেশবাসী। কিন্তু নাটক-সিনেমার ভয়াবহ কুফল রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারছে না। ডিশ এন্টেনার প্রসারে হিন্দি সিরিয়ালের কুপ্রভাবে দেশ জাতি বিপর্যস্ত।
০৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)