জীবনী মুবারক
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত মাসরূক ইবনুল আজদা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি (১)
বিলাদত শরীফ: তারিখ উল্লেখ নেই। বিছাল শরীফ: ৬৩ হিজরী।
, ০১ মে, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

পরিচিতি মুবারক:
নাম মুবারক: হযরত মাসরূক আল-হামাদানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, উপনাম আবু আয়েশা (উনার কন্যার নাম ছিলো আয়েশা) পিতার নাম: আল-আজদা’ (পরিবর্তিত নাম আবদুর রহমান) বিন মালিক বিন উমাইয়া। উনার নসবনামা নিম্নরূপ-
مسروق بن الأجدع وهو عبد الرحمن بن مالك بن أمية بن عبد الله بن مُرّ بن سليمان بن مَعْمَر بن الحارث
অর্থ: মাসরূক বিন আজদা’ (যাঁর পরিবর্তিত নাম আবদুর রহমান) বিন মালিক বিন উমাইয়া বিন আবদিল্লাহ বিন মুর বিন সুলায়মান বিন মা’মার ইবনুল হারিছ।
তিনি কূফার অধিবাসী একজন বিখ্যাত তাবে‘ঈ, আলিম ও আবিদ ছিলেন। (হিলইয়াতুল আওলিয়া, তাবাকাত)
কথিত আছে যে, শিশু অবস্থায় উনাকে চুরি করে নেয়া হয়েছিলো, পরে উনাকে পাওয়া যায়, সেজন্য উনার নাম রাখা হয়- مسروق (মাসরূক অর্থাৎ চুরি যাওয়া ব্যক্তি)।
উনার পিতা আল-আজদা’ সম্মানিত ইসলাম গ্রহণ করেন এবং আবদুর রহমান নামে পরিচিত হন। আল-আজদা’-উনার পিতা মালিক বিন উমাইয়া ইয়ামানে একজন বিখ্যাত ঘোড় সওয়ার ছিলেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
যে সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ছোহবত মুবারক পেয়েছেন:
হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু‘মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে এছাড়া সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উবাই বিন কা‘ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উম্মে রুমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা, হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত খাব্বাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত মা‘কিল বিন সিনান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত মুগীরা বিন শো’বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু প্রমূখ এবং আরো অনেক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
উনার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা:
হযরত হিশাম ইবনুল কালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা আল-আজদা’, যিনি একজন কবি ছিলেন, তিনি খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার দরবার শরীফে প্রতিনিধি হিসাবে এসেছিলেন। হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কে? তিনি উত্তর দিলেন, আল-আজদা’ (الأجدع অর্থ: নাক-কাটা)। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আল-আজদা’ হচ্ছে শয়ত্বান, আপনি বরং আবদুর রহমান।
হযরত ইমাম শা‘বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, যখন হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি খলীফার দরবার শরীফে আগমন করেন, খলীফা উনাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কে? উত্তরে তিনি বলেন, মাসরূক ইবনুল আজদা’। তখন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আল-আজদা’ হচ্ছে শয়ত্বান, আপনি বরং মাসরূক বিন আবদুর রহমান। তখন থেকে তিনি চিঠি পত্রে লিখা শুরু করেন, মাসরূক বিন আবদুর রহমান থেকে। (তাবাকাত)
হযরত আইয়ূব আত-ত্বাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি হযরত আশ-শা‘বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে একটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি উত্তরে বলেন, সমস্ত দিক-দিগন্তে অর্থাৎ সারা দুনিয়ায় হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি অপেক্ষা অধিকতর ইলিম অন্বেষণকারী ব্যক্তি আমি কখনও দেখিনি। তিনি বলেন, হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এক ব্যক্তির নিকট ইলিম অন্বেষণে একটি আয়াত শরীফ সম্পর্কে জানার জন্য বছরার দিকে বের হলেন। সেখানে গিয়ে তিনি সেই ব্যক্তির নিকট উক্ত ইলিম পেলেন না। উনাকে সংবাদ দেয়া হলো, সিরিয়াবাসী এক ব্যক্তির নিকট এই ইলিম রয়েছে। অতঃপর তিনি সেই ইলিমের অন্বেষণে সিরিয়ায় অবস্থিত উক্ত লোকটির নিকট রওয়ানা হলেন। (হিলইয়াতুল আওলিয়া)
হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি প্রথম যুগের ও শেষ যুগের ইলিম, দুনিয়া ও আখিরাতের ইলিম সম্পর্কে জেনে খুশি হতে চায়, তার উচিত সূরা ওয়াকিয়া শরীফ পাঠ করা। (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উলামায়ে সূ’ ধর্ম ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ও হাক্বীক্বত (৯)
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশি বেশি মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশি বেশি পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩৪)
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩৩)
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ পালন করা, তা’যীম করা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে অবমাননাকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৭)
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা কবীরা গুনাহ ও অসন্তুষ্টির কারণ
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)