জীবনী মুবারক
বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত মাসরূক ইবনুল আজদা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩)
বিলাদত শরীফ: তারিখ উল্লেখ নেই। বিছাল শরীফ: ৬৩ হিজরী।
, ০৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৬ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ মে, ২০২৫ খ্রি:, ২২ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
উনার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা:
হযরত ইমাম শা‘বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ফতওয়ার ইলিমে হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত শুরাইহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকেও অধিক জ্ঞানী ছিলেন। আর বিচার কাজে হযরত শুরাইহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে অধিকতর বিজ্ঞ ছিলেন। হযরত শুরাইহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কোন কোন বিষয়ে হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে পরামর্শ করতেন। কিন্তু হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত শুরাইহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে কোন বিষয়ে পরামর্শ করতেন না। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
হযরত মুহম্মদ বিন মুনতাসির রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, একবার বছরার গভর্ণর খালিদ বিন আবদিল্লাহ আমার চাচা হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ত্রিশ হাজার দিরহাম দান করেন। সে সময় তিনি খুব অভাবী ছিলেন। কিন্তু তিনি সেই টাকা গ্রহণ করেননি। লোকেরা বললো, আপনি যদি ইহা গ্রহণ করতেন, আপনি ইহা থেকে দান-ছদকা করতে পারতেন এবং বিভিন্ন নেক কাজ করতে পারতেন। তথাপি তিনি ইহা গ্রহণ করতে অস্বীকার করলেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা, তাবাকাত)
বর্ণিত আছে যে, হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিফফীনের যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন, তিনি লোকদেরকে উপদেশ দিয়েছেন, ভীতি প্রদর্শন করেছেন কিন্তু যুদ্ধ করেননি। অতঃপর হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথী হয়ে হারুরিয়াদের (খারেজী সম্প্রদায়ের একটি দল) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার নেতৃত্ব মুবারকে যুদ্ধে অংশগ্রহণে দেরী হওয়ায় তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
হযরত ইমাম শা‘বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু‘মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে পালকপুত্র হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মেয়ের নাম নিজ মহাসম্মানিত ইসিম বা নাম মুবারক উনার সাথে মিলিয়ে রাখেন ‘আয়েশা’। সেজন্য হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে আবু আয়েশা বলা হতো। তিনি এই দিক থেকে বেমেছাল সৌভাগ্যশীল ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মেয়ের মতের বিপরীত কোন কাজ করতেন না। একবার রোযা অবস্থায় খুব গরমের কারণে হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। উনার মেয়ে পিতার নিকট এসে বললেন, আব্বাজান! আপনি রোযা ভঙ্গ করুন এবং পানি পান করুন। তিনি বললেন, হে আমার স্নেহের মেয়ে! আপনি আমার নিকট কি চান? মেয়ে বললেন, করুণা চাই। তিনি বললেন, হে আমার স্নেহের মেয়ে! আমি তো আমার নিজের উপর সেই দিনের জন্য করুণা অন্বেষণ করছি, যেদিনের পরিমান হবে পঞ্চাশ হাজার বছর। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
উনার কতিপয় ক্বওল শরীফ:
হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
كَفٰى بِالْمَرْءِ عِلْمًا أَنْ يَّخْشَى اللهَ، وَكَفٰى بِالْمَرْءِ جَهْلًا أَنْ يَّعْجِبَ بِعِلْمِهٖ
(অর্থাৎ কোন লোকের পক্ষে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করা তার ইলিমের জন্য যথেষ্ট। আর কোন লোকের পক্ষে তার ইলিমের জন্য আশ্চর্য বোধ করা, তার মূর্খতার জন্য যথেষ্ট)। (হিলইয়াতুল আওলিয়া)
হযরত শা‘বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি যদি হক্বভাবে কোন বিচার কার্য সমাধা করতে পারি, আমি ইহাকে মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় এক বছর সীমান্ত প্রহরীর কাজ হতে উত্তম মনে করি, অথবা তিনি বলেছেন এক বছর জিহাদ করা থেকে উত্তম মনে করি। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা) (ইনশাআল্লাহ চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












