মন্তব্য কলাম
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফকির- ‘আমেরিকার’ প্রকৃত ঋণ শত ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশী দেউলিয়া আমেরিকা, ঋণ করেই যুদ্ধের জুয়া খেলছে আর মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম শাসকরা আমেরিকান রিকন্ডিশন অস্ত্র কিনে তার জুয়ায় রসদের, যোগান দিয়েই চলছে (নাউযুবিল্লাহ)
, ০৫ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ১ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মন্তব্য কলাম
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬.২ ট্রিলিয়ন (৩৬ হাজার ২০০ বিলিয়ন) ডলারে , যা প্রতি তিন মাসে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে।
বর্ধিত ঋণের কারণে সুদের খরচও বেড়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের।
গত মে মাসে সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হলেও আমেরিকার প্রকৃত ঋণ শত ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।
অথচ আর এই বিপুল পরিমাণ ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে সারা বিশ্বে সর্বোচ্চ ঋনগ্রস্থ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশেষ করে অতি মাত্রায় যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার প্রবনতা এবং সারা বিশ্বব্যাপী শান্তির নামে আগ্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করতে গিয়ে প্রতি বছর গড়ে ৭০০ বিলিয়ন ডলারের অধিক অর্থ ঋণ করে ব্যয় করে যাচ্ছে দেশটি।
সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৮০০ এর কাছাকাছি সামরিক ঘাঁটি এবং দীর্ঘ মেয়াদী বেশ কিছু যুদ্ধ পরিচালনায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের দায় বহন করতে হচ্ছে মার্কিন জনগণকে। আর এহেন চরম মাত্রায় অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় বা ঘাটতি নিরিসনে মার্কিন প্রশাসন অত্যন্ত কৌশলে সারা বিশ্বে যুদ্ধের আবহ তৈরি করে তাদের অতি লাভ জনক অস্ত্রের ব্যবসা চালিয়ে যেতে ব্যস্ত। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বাদশা ও আমীর শাসিত দেশগুলোর কাছে নির্বিচারে চাঁদাবাজির পাশাপাশি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের যুদ্ধাস্ত্র এবং সামরিক সাজ সরঞ্জাম তুলে দিচ্ছে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। যদিও এই শত বিলিয়ন ডলারের তেল ও অস্ত্র বানিজ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই পাহাড় পরিমাণ ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন বৈদেশিক ঋনের বোঝা থেকে কিয়ামত পর্যন্ত মুক্ত করতে পারবে না।
এই বিপুল খরচের একটি বড় অংশ সরাসরি পেন্টাগনের বাজেট থেকে এসেছে, যা অস্ত্রশস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম এবং সেনাদের বেতন ও রসদ সরবরাহে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রতিটি বোমা, প্রতিটি গুলি এবং প্রতিটি সামরিক অভিযানের পেছনে রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, যা মার্কিন করদাতাদের পকেট থেকেই গেছে।
কিন্তু যুদ্ধের আসল খরচ যুদ্ধক্ষেত্রেই শেষ হয় না, বরং এর একটি বড় অংশ বয়ে বেড়াতে হয় দেশে ফিরে আসা সেনাদের মাধ্যমে। এই যুদ্ধগুলোতে আহত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়া লাখ লাখ সেনার আজীবন চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের খরচ ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার।
আরেকটি বড় বিষয় হলো, এই যুদ্ধগুলোর অর্থায়ন করা হয়েছে মূলত ঋণ করে। ফলে, মূল খরচের পাশাপাশি ঋণের সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে এই অঙ্কটি আরও কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার বেড়ে গেছে।
“২১ শে জুন ইরানে হামলার পর রয়টার্স স্বীকার করেছে- কয়েক দশক পার করে আবারও যুক্তরাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে তাদের অন্যতম “সবচেয়ে বড় এবং ঝুঁকিপূর্ণ বিদেশ নীতি জুয়া”-র সামনে। ”
লেবাননে যুদ্ধ (১৯৮২-৮৩)
১৯৮২ সালে ইসরায়েল লেবাননে আগ্রাসন চালায়, যখন দেশটি ছিল গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। বিভিন্ন বিশ্লেষণ বলছে, ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-কে রাজনৈতিক এবং সামরিকভাবে দুর্বল করা। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির নেতা ইয়াসির আরাফাত সে সময় বৈরুতে অবস্থান করছিলেন।
এই যুদ্ধ ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী হয়, যেখানে নির্বিচার হত্যাকা-ে হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক এবং যোদ্ধা নিহত হন।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস জন রজার্স এবং পারমাণবিক ক্রুজার ইউএসএস ভার্জিনিয়া লেবাননের উপকূলে পাঠানো হয়। মার্কিন গানবোট থেকে সুক আল-ঘার্ব শহরসহ বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণ করা হয়। এই অভিযান প্রায় ১৭ মাস ধরে চলে, এবং এতে ২৬২ মার্কিন সেনা নিহত হন। যুদ্ধের শুরুতেই বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে প্রথম মার্কিন সেনার মৃত্যু হয়।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এ নিয়ে মন্তব্য করে লিখেছিল, "ওয়াশিংটন যদি আরও সাহসী ও দূরদর্শী হতো, তাহলে (তৎকালীন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী) মোনাচিম বেগিনের যুদ্ধবাজির অবসান ঘটিয়ে-হাজার হাজার জীবন বাঁচানো সম্ভব হতো। "
অবশেষে ১৯৮৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি, রিগ্যান লেবানন থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের ইতিহাস বিভাগের ভাষ্য অনুযায়ী, রিগ্যানের এই সিদ্ধান্ত আজও বিতর্কিত। যেমন এই সিদ্ধান্তের সমর্থকরা বলেন, এমন কোনো সংঘাত নিরসনে আমেরিকানদের জীবন উৎসর্গের মানে হয় না- যেখানে সংঘাতে জড়িত কোনো পক্ষই আমেরিকার লক্ষ্যগুলো অর্জনে কাজ করার ইচ্ছাও দেখায়নি। আবার বিরোধীতাকারীরা বলেন, রিগ্যান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকারকে দুর্বল করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে অবিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে তুলে ধরেছেন।
লিবিয়ায় যুদ্ধ (১৯৮৬ এবং ২০১১)
১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ার "সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি" এবং সামরিক স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালায়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিগ্যান জানান, লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির তথাকথিত "সন্ত্রাসের রাজত্ব"-এর জবাবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এই অভিযানে ভূমধ্যসাগর থেকে ১৪টি এ-৬ই নৌবাহিনীর আক্রমণকারী জেট এবং ইংল্যান্ডের ঘাঁটি থেকে ১৮টি এফ-১১১ বোমারু বিমান অংশ নেয়। হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যার মধ্যে গাদ্দাফির কন্যাও ছিলেন।
এরপর ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে ন্যাটো বাহিনী লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে। ঘোষিত লক্ষ্য ছিল বেসামরিক জীবন রক্ষা, কিন্তু ফল হয় ভিন্ন। গাদ্দাফি বিরোধী বাহিনীর পাল্লা ভারি হয়ে যায় এবং শেষমেশ গাদ্দাফি ক্ষমতা ও প্রাণ হারান।
গাদ্দাফির পতনের পর লিবিয়ায় শান্তিপূর্ণ বেসামরিক সরকার গঠন ব্যর্থ হয় পশ্চিমা সমর্থিতরা, এবং ২০১৪ সালে আবারও দেশটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৬ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র "আইএস নেতা ও তিউনিশীয় জঙ্গিদের" লক্ষ্য করে লিবিয়ায় বারবার বিমান হামলা চালায়।
ইরাক যুদ্ধ (১৯৯১-২০১১)
১৯৯০ সালে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন, প্রতিবেশী কুয়েত দখল করলে- শুরু হয় প্রথম পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্র-মিত্র আরব রাজতন্ত্রগুলোর অনুরোধে সামরিক অভিযানে নামে। কুয়েত দখলমুক্ত করতে জাতিসংঘ-ও 'সব ধরনের প্রয়োজনীয় শক্তি ব্যবহারের' অনুমতি দেয়।
১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশাল বিমান হামলা শুরু হয়, যার পরিণতিতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারান এবং যুক্তরাষ্ট্র পারস্য উপসাগরে স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে।
ইরাকের প্রতিরোধ ভেঙে পড়ার পর, ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন, যার মাধ্যমে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের অবসান ঘটে। পুরো যুদ্ধের সময়, আনুমানিক ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ ইরাকি সেনা নিহত হয় বলে ধারণা করা হয়। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক হবে, এছাড়া বেসামরিক প্রাণহানিও ঘটে অসংখ্য।
তবে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র আবারও ইরাকে ওপর সামরিকভাবে মনোযোগ জোরদার করে। ২০০২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ইরাকে অস্ত্র পরিদর্শক দল ফেরানোর দাবি জানান। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি ছিল, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ইরাকের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে, বা তারা এমন অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এর ঠিক এক বছর পর, বুশ ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইরাক ছাড়ার আল্টিমেটাম দেন। সাদ্দাম হোসেন সেই আহ্বানে সাড়া না দেওয়ায় শুরু হয়-দ্বিতীয় পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ, যা এখন 'ইরাক যুদ্ধ' নামেই অধিক পরিচিত।
২০০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর, মার্কিন বাহিনী সাদ্দাম হোসেনকে আটক করে। পরে, ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে তাঁর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। এই সময়ে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক সংঘাতে নারী, শিশুসহ লাখ লাখ ইরাকি প্রাণ হারায়। ধবংসস্তূপে পরিণত হয় একের পর এক জনপদ।
যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে।
আফগান যুদ্ধ (২০০১-২০২১)
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র যখন তার বিশ্বব্যাপী 'সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ'-এর ঘোষণা দেয়, তখন আফগানিস্তান হয়ে ওঠে তাদের প্রধান লক্ষ্য। ওই বছরের ৭ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট আফগানিস্তানে ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে, যার নেতৃত্বে ছিল মার্কিন এবং ব্রিটিশ বাহিনী। দুই দশক ধরে চলা এই সংঘাত আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত।
'অপারেশন এনডিউরিং ফ্রিডম' নামে পরিচিত এই সামরিক অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়েদা নেটওয়ার্ককে ধ্বংস করা। প্রথমেই তালেবান এবং আল-কায়েদার অবস্থান, বিশেষ করে কাবুল, কান্দাহার, জালালাবাদ, কুন্দুজ এবং মাজার-ই-শরিফে ব্যাপক বিমান হামলা চালানো হয়।
এরপর স্থল অভিযান শুরু হলে ১২ নভেম্বর তালেবান বাহিনী কাবুল ত্যাগ করে। পরবর্তী এক মাসের মধ্যে তাদের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি কান্দাহারও পতনের মুখে পড়ে। ২০০২ সালের মধ্যে হামিদ কারজাইয়ের নেতৃত্বে কাবুলে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।
তবে এই যুদ্ধ চলার মধ্যেই, যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ আফগানিস্তান থেকে সরে ইরাকের দিকে যাওয়ার সুযোগে-তালেবান আবার সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট বুশ অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং ২০০৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে সেখানে মার্কিন সেনাসংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮,৫০০।
পরবর্তীতে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবার পর এই সংখ্যা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১ লাখে করেন। ২০১১ সালে ওসামা বিন লাদেন হত্যার পর ওবামা সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। যদিও এই সিদ্ধান্তে বারবার মতবিরোধ দেখা যায়। অবশেষে ২০২১ সালে তালেবান এবং ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে একটি চুক্তি হয়, যেখানে বলা হয়, তালেবান যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা এবং আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালের মধ্যেই সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করবে।
সে বছরের আগস্টে তালেবান কাবুলে প্রবেশ করলে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সেনাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
সিরিয়ার যুদ্ধ (২০১১)
২০১১ সালে সিরিয়ায় শুরু হয় বিক্ষোভ, যা ধীরে ধীরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনবিরোধী পূর্ণমাত্রার গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। পরিস্থিতি খারাপ হলে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং পশ্চিমা দেশগুলো সরাসরি বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা ত্যাগের আহ্বান জানান।
পরবর্তীতে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয়।
২০১৩ সালে ওয়াশিংটন জানায়, আসাদ সরকার দামেস্কের কাছে রাসায়নিক হামলা চালিয়ে ১,৪০০'র বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। ওই হামলার পর ওবামা সিরিয়ায় সামরিক হামলার পরিকল্পনা করেন, তবে শেষ মুহূর্তে তিনি সরে আসেন এবং মস্কোর সঙ্গে একটি চুক্তি করেন, যার লক্ষ্য ছিল সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ভা-ার ধ্বংস করা।
এর ঠিক এক বছর পর, ২০১৪ সালে, যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব মিত্ররা সিরিয়ায় আইএসআইএল (ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট) এর বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে, যা ইতোমধ্যে ইরাকেও চলছিল।
২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে যুক্তরাষ্ট্র শায়রাত বিমান ঘাঁটিতে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ওই ঘাঁটি থেকেই রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে, যেখানে ৮৮ জন নিহত হয়।
২০১৮ সালে সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ডৌমা শহরে রাসায়নিক হামলায় ৪০ জন নিহত হলে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে সিরিয়ায় হামলা চালায়।
এরপর ওই বছরেই ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, সিরিয়ায় থাকা প্রায় ২,০০০ মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে, কারণ আইএসআইএল "পরাজিত" হয়েছে। কিন্তু এর এক বছর পরই সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি রেস্তোরাঁয় আইএসআইএলের আত্মঘাতী হামলায় চার মার্কিন সেনাসহ ১৫ জন নিহত হয়। এটিকে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
একই বছরের শেষ দিকে, যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে, যাতে তুরস্ক তাদের বহু প্রতীক্ষিত সামরিক অভিযান চালাতে পারে। এ সিদ্ধান্তে ওয়াশিংটনে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
ইয়েমেন যুদ্ধ
ইয়েমেন দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা বিশ্বের নজরবন্দি। তবে ওবামা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ড্রোন হামলার মাত্রা অনেক বেড়ে যায়, বলে জানিয়েছে 'মিডল ইস্ট আই'।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ড্রোন কর্মসূচির আওতায় এসব হামলা চালানো হতো এবং এগুলো সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ বলে হামলার পক্ষে যুক্তি দেওয়া হতো, বিশেষ করে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতাদের টার্গেট করার জন্য। একই সঙ্গে সৌদি আরবের হুথি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও সহায়তা করে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে হুথি বিদ্রোহীদের লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র 'অপারেশন প্রসপারিটি গার্ডিয়ান' শুরু করে। উল্লেখ্য, এসব হামলা শুরু হয়েছিল গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায়।
২০২৪ সালে বাইডেন প্রশাসন হুথিদের আবারও 'বিশ্বব্যাপী বিশেষভাবে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন (এসডিজিটি)' হিসেবে ঘোষণা করে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে তার পরিবেশবাদী তৎপরতা অন্য পরিবেশবাদীদের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তার পরিবেশবাদী প্রচারণা কার্যকলাপ আসলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নয় বরং বিশেষ প্রভুর নির্দেশনায় (প্রথম পর্ব)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না কেবলমাত্র ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব ইনশাআল্লাহ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গার্মেন্টসের চেয়েও বড় অবস্থানে তথা বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে অধিষ্ঠান হতে পারে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে শুধু মাত্র এ খাত থেকেই বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা অর্জন সম্ভব ইনশাআল্লাহ। যা বর্তমান বাজেটের প্রায় দেড়গুণ আর শুধু অনিয়ম এবং সরকারের অবহেলা, অসহযোগীতা দূর করলে বর্তমানেই সম্ভব প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা অর্জন জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সমৃদ্ধি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সরকারের গাফলতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জনগণের জন্যও জরুরী। (২য় পর্ব)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা আবশ্যক ইনশাআল্লাহ (দ্বিতীয় পর্ব)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিদেশি হাইব্রিড বীজের ফাঁদে দেশের কৃষি। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফসলের জাত, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ফুলে-ফেঁপে উঠছে বীজ কোম্পানিগুলো।
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুশরিক ভারতের প্রতি লা’নত ওদের জনসংখ্যা দিন দিন নিম্নমুখী পক্ষান্তরে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে খোদায়ী রহমত। (সুবহানাল্লাহ) বাংলাদেশে জনসংখ্যার এখন ৬৫ ভাগই কর্মক্ষম এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার উর্ধ্বগামী বাংলাদেশ ভোগ করছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ!
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে সতর্কতা তথা মধ্যম আয়ের স্থবিরতা তাওয়াক্কুল আর তাকওয়া অবলম্বনে সব সমস্যা দূর হয়ে অচিরেই বাংলাদেশ হতে পারবে শীর্ষ সমৃদ্ধশালী দেশ ইনশাআল্লাহ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রিজওয়ানার পরিবেশবাদী প্রচারণার বিপরীতে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে ইতিবাচক বার্তা এবং ইউনুসের পানি ও প্রকৃতি প্রেমের বানীর পরিবর্তে আপত্তি সত্ত্বেও একনেকে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদনে জনগণ তথা নেটিজনের মূল্যায়নটা কী?
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যখন কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধবিমান কিনে, তখন তা শুধু একটি বিমান কেনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সাথে যুক্ত হয় একাধিক শর্ত, নিষেধাজ্ঞা এবং জটিল টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












