ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৭)
, ১০ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিশর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য ÒConfession of British Spy and British enmity against IslamÓ গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
আমি ছয় মাস লন্ডনে অবস্থান করেছিলাম এবং সে সময়ে আমার চাচাতো বোন ‘মারিয়া ইসভয়’কে বিয়ে করি। তখন আমার বয়স ছিল ২২ এবং মারিয়ার ২৩ বছর। মারিয়া ইসভয় ছিল অত্যন্ত সুন্দরী। তবে তার বুদ্ধি বিবেচনা গড়পড়তা এবং সাধারণ সংস্কৃতিমনা মহিলা। তার সঙ্গে যতটুকু সময় কাটিয়েছি তা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে সুখময় এবং মধুর সময়।
আমার স্ত্রী যখন গর্ভবতী এবং আমরা একজন নতুন অতিথির অপেক্ষায় তখনই বার্তা পেলাম যে আমাকে ইরাকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হবে। আমাদের সন্তান আসার সময়ে এ রকম বার্তা পেয়ে মনটাই খারাপ হয়ে যায়। তবে ছেলের বাবা কিংবা কারো স্বামী হবার যে আবেগ আমার ছিল তার চেয়েও আমার কাছে আমার নিজের দেশ এবং বিশেষত আমার সহকর্মীদের মধ্যে প্রথম হবার গৌরবের বিষয়টি আমার কাছে বেশী গুরুত্ব পায়। ফলে বিনা দ্বিধায় আমি এই দায়িত্বভার গ্রহণ করি। আমার স্ত্রী চেয়েছিল সন্তান ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত যেন আমি মিশন স্থগিত রাখি। তথাপি আমি তার কথাকে উপেক্ষা করি।
আমরা যখন একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিলাম, দু’জনেই ফুপিয়ে কাঁদছিলাম। আমার স্ত্রী বললো, আমাকে চিঠি লেখা বন্ধ করো না। আমি তোমাকে আমাদের নতুন সংসার সম্পর্কে লিখবো যা সোনার মত দামী। তার সে সকল কথা আমার হৃদয়ে ঝড় তুলে। আমি প্রায় বাতিল করে দিতে চাচ্ছিলাম আমার সফর। তবু আমি আমার আবেগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি এবং বিদায় জানিয়ে চুড়ান্ত নির্দেশ নিতে মন্ত্রনালয়ের দিকে যাত্রা করি। ছয় মাস পরে আমি ইরাকের বসরা নগরীতে পৌঁছি। এই নগরীর অধিবাসীদের আংশিক সুন্নী এবং আংশিক শিয়া। বসরায় ছিল আরবী, পারসী এবং স্বল্প সংখ্যক খ্রিষ্টান গোত্রের বসবাস। জীবনে আমি তখন পারসিয়ান লোকের দেখা পাই।
যাই হোক প্রথম এবারে শিয়া ও সুন্নী মতবাদ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। শিয়াদের মতে তারা আলী বিন আবু তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর অনুসারী। হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন মুসলমানদের নবীর (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপন চাচাতো ভাই। শিয়ারা বলে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে খলীফা নিযুক্ত করেন এবং আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর পরে খলীফা হবার জন্যে তাঁর বংশের আরো বারোজনকে ইমাম নিয়োগ করেন। যতটুকু আমি বুঝতে পেরেছি, খলীফা হবার ব্যাপারে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন উপযুক্ত গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। ইসলামের ইতিহাস পড়ে যতটুকু বুঝতে পেরেছি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন বৈশিষ্টম-িত ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন এবং প্রগার জ্ঞানের অধিকারী। আবার হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে খলীফা নিযুক্তের বিষয়টিও ছিল সঠিক। তবে নবী (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ছেলে এবং আটজন দৌহিত্রকে খলীফা নিযুক্ত করার বিষয়টি আমার নিকট সন্দেহজনক প্রতীয়মান হয়েছে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওফাতের সময় হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন বালক এবং তিনি কি করে জানতেন যে, তাঁর আটজন দৌহিত্রের আগমন হবে? যদি হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সত্যি সত্যি নবী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আল্লাহ পাক-এর ওহীর মাধ্যমে ভবিষ্যত জানতে পারেন। যেমনটি ঈসা আলাইহিস সালাম ভবিষ্যতের ব্যাপারে জানতেন। তথাপি খ্রিষ্টানদের কাছে হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নবী হবার বিষয়টি সন্দেহের উর্ধ্বে নয়।
ভাষান্তর : আবুল বাশার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












