মসজিদে মহিলাদের জামায়াত জারি করার অর্থ হলো- হযরত ছাহাবা আজমাইন উনাদের বিরোধিতা করা, নাউযুবিল্লাহ!
, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ
অর্থঃ- “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক উনার এবং তোমাদের মধ্যে যাঁরা ‘উলিল আমর’ উনাদেরকে অনুসরণ করো” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯)
হযরত মুফাস্সিরীনে কিরামগণ সকলেই একমত যে, উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফে বর্ণিত ‘উলিল আমর’ দ্বারা প্রথমঃ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাই হচ্ছেন প্রথম স্তরের ‘উলিল আমর’।
আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ
অর্থঃ- “তোমাদের জন্যে আমার সুন্নত মুবারক ও হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুন্নত মুবারক পালন করা অপরিহার্য র্কতব্য।” (মিশকাত শরীফ)
সুতরাং, উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে অনুসরণ করা উম্মতের জন্য ফরয, ওয়াজিব। পক্ষান্তরে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বিরোধিতা করা ও উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা হচ্ছে কুফরী। অর্থাৎ যার ভিতরে কুফরী রয়েছে কেবল সে ব্যক্তিই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের বিরোধিতা করে থাকে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালামে পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
لِيَغِيْظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ
অর্থাৎ কাফিরেরাই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের বিরোধিতা করে বা উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে।” (পবিত্র সূরা ফাত্হ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ২৯)
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ غَاظَ اَصْحَابَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُوَ كَافِرٌ
অর্থ: “যে ব্যক্তি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের বিরোধিতা করে বা উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, সে কাফির।”(নাসীমুর রিয়াদ্ব)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
حُبُّ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ إِيمَانٌ، وَبُغْضُهُمَا كُفْرٌ
অর্থ: “হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম ও হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাদের প্রতি মুহব্বত করা হচ্ছে ঈমান। আর উনাদের বিরোধিতা করা হচ্ছে কুফরী।” (বুখারী শরীফ)
তাই অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদগণ উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফের উপর ভিত্তি করে ফতওয়া দেন যে, মহিলাদের পাঁচ ওয়াক্ত, জুমুয়া, দু’ ঈদ ও তারাবীহ নামাযের জামায়াতের জন্য মসজিদ ও ঈদগাহে যাওয়া আম ফতওয়া মুতাবিক হারাম। আর খাছ ফতওয়া মুতাবিক কুফরী। কারণ খাছভাবে ফিকির করলে এটাই প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের জামায়াতের জন্যে মসজিদে যাওয়া এবং এটাকে জায়িয বলার অর্থই হলো- (১) মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র আয়াত শরীফ অস্বীকার ও অবজ্ঞা করা। নাঊযুবিল্লাহ!
(২) উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ অস্বীকার ও অমান্য করা। নাঊযুবিল্লাহ! (৩) হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিাছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে ইহানত বা অবজ্ঞা করা। নাঊযুবিল্লাহ! (৪) আমীরুল মু’মিনীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বিরোধিতা করা ও অবজ্ঞা করা। নাঊযুবিল্লাহ! (৫) হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের বিরোধিতা করা। নাঊযুবিল্লাহ! (৬) নিজেকে হযরত মু’মিনীন আছ ছালিাছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সহ সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে বেশী জ্ঞানী ও বড় মনে করা। নাঊযুবিল্লাহ! (৭) হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জায়িযকে নাজায়িয করেছেন বলে উনাদেরকে দোষারোপ করা। নাঊযুবিল্লাহ! (৮) হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের প্রকাশ্য বিরোধিতা করা ও বিদ্বেষী হওয়া। নাঊযুবিল্লাহ! (৯) পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ দ্বারা প্রমাণিত পর্দার ফরযকে অস্বীকার করা ও বেপর্দাকে প্রশ্রয় দেয়া। নাঊযুবিল্লাহ! (১০) পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত ‘উলিল আমর’ উনাদের বিরোধিতা করা ও উনাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা। নাঊযুবিল্লাহ! (১১) সম্মানিত শরীয়ত উনার অন্যতম একটি দলীল ‘ইজ্মা’কে অস্বীকার করা বা ইজ্মার বিরোধিতা করা। নাঊযুবিল্লাহ! যার সবগুলিই কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। ঈমানদার বা মুসলমান হয়ে যে কুফরী করে, সে মুরতাদ হয়ে যায়।
কাজেই মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদ বা ঈদগাহে যাওয়া খাছ ফতওয়া মুতাবিক যে কুফরী তা বলার অপেক্ষাই রাখে না।
-আল্লামা সাইয়্যিদ আবূ খুবাইব
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায আদায় করা নাজায়িজ
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নারীর মৌলিক অধিকার ‘পর্দা পালনের অধিকার’ কেড়ে নেয়া হচ্ছে কেন?
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহিলাদের সুন্নতী লিবাস, অলংকার ও সাজ-সজ্জা (২২)
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তথাকথিত নারীবাদীরা কী মানুষ হিসেবে গণ্য হতে চায় না?
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য (১৩)
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পিতা-মাতা হিসেবে সন্তানের প্রতি দায়বদ্ধতা
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ: ‘তারিখ’ হিসেবে পালিত না হয়ে ‘বার’ হিসেবে পালিত হওয়ার হাক্বীক্বত
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মু’মিন-মুত্তাক্বী উনারাই লাভ করেন ‘আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ’ উনার নিয়ামত মুবারক
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুমহান বরকতময় ‘আখিরী চাহার শোম্বাহ’ শরীফ
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নিকাহ বা বিবাহের ফযীলত (১২)
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৪)
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)