মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হুকুম আহকাম ও আদেশ নির্দেশ মুবারক পালনেই রয়েছে কামিয়াবী
, ৩রা রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৫ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ৪ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার সম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম! আপনার নিকট যখন কোন বান্দা জানতে চায়, জিজ্ঞাসা করে আমার (আল্লাহ পাক) সম্পর্কে। আপনি বলে দিন, নিশ্চয়ই আমি অতি নিকটে রয়েছি। যখন তারা আমাকে ডাকে আমি তাদের ডাকে সাড়া দেই। তাদেরও উচিত আমার ডাকে সাড়া দেয়া, আপনার প্রতি ঈমান আনা। ”
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা বুঝা যায়, মহান আল্লাহ পাক তিনি সবসময় বান্দার নিকটে থাকেন। দেখা যায়, মানুষ মানুষের নিকটে থাকে কিন্তু তার চেয়েও মহান আল্লাহ পাক তিনি অতি নিকটে থাকেন এবং আছেন। সেই মহান আল্লাহ পাক তিনি জানিয়ে দিচ্ছেন, “আমি তোমাদের শাহরগের/প্রাণরগের চেয়েও নিকটে। কিন্তু তোমরা তা দেখতে পাও না। ”
আবার অন্যত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তিনি (মহান আল্লাহ পাক) তোমাদের সাথে রয়েছেন। ” সুবহানাল্লাহ!
বলাবাহুল্য, যারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ডাকে সাড়া দিবে তাদের নিকট দুঃখ-কষ্ট পৌঁছার পরেও তাদের মধ্য থেকে যারা নেক কাজ করে এবং ইখলাছ অর্জন করে, তাক্বওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য রয়েছে মহান প্রতিদান। আর সেই প্রতিদান দুনিয়া ও আখিরাতে থাকবে। আর যারা ঈমান এনে, আমলে ছলেহ করেন উনাদের ডাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাড়া দেন এবং উনার অনুগ্রহ বাড়িয়ে দেন। সুবহানাল্লাহ!
এখানে জানার বিষয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে বান্দাদেরকে ডাকেন, কেন ডাকেন? কী ডাকেন? আসলে, তাগুত মানুষকে জাহান্নামের দিকে ডাকতে থাকে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমা ও জান্নাতের দিকে ডাকতে থাকেন।
আসলে এখানে ডাকে সাড়া দেয়ার অর্থ হলো: মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম আহকাম মানা। আর এই হুকুম আহকাম মানার জন্য একান্ত কর্তব্য হলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনা এবং উনাকে সর্বশেষ রসূল হিসেবে অন্তরে বিশ্বাস স্থাপন করা। কেননা, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সত্য নিয়ে এসেছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা ফাতাহ শরীফ উনার ২৮ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি পূর্ববর্তী সমস্ত ধর্ম/মতবাদকে বাতিল ঘোষণা করে হিদায়েত ও সত্য দ্বীন সহকারে পাঠিয়েছেন। আর এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাক্ষ্যদাতা হিসেবে যথেষ্ট। ”
সুতরাং এই আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে, উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি সত্য দ্বীন দিয়ে পাঠিয়েছেন। তাই এই সত্য দ্বীন ইসলাম উনাকে অনুসরণ করতে হবে। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ১৫১নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি তোমাদের মাঝে এমন একজন রসূল প্রেরণ করেছি, যিনি তোমাদেরকে আমার আয়াত শরীফসমূহ তিলাওয়াত করে শুনাবেন, তোমাদেরকে তাযকিয়া তথা পরিশুদ্ধ করবেন এবং তেমাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবেন এবং আরো এমন বিষয় শিক্ষা দিবেন যা তোমরা জানতে না।
আর সেই তিলাওয়াত মুবারক শুনতে হবে, জানতে হবে, মানতে হবে এবং ফিকির করতে হবে। শুধু জানলেই হবে না, আমলও করতে হবে। যারা জানলো কিন্তু আমল করলো না, তারা কিতাব বহনকারী গাধার মত। মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তির ডাকে সাড়া দেন, যারা উনার পবিত্র কালাম মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং তা ফিকির করেন। আর যারা মৃত উনাদেরকে পুণরুত্থিত করবেন এবং তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকেই প্রত্যাবর্তন করা হবে। আরো বলা হয়, যারা এই ক্বওল শরীফ, শ্রবণ করে এবং তা উত্তমভাবে অনুসরণ করে উনাদেরকেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সঠিক পথ দান করেন। আর উনারাই হচ্ছেন আলিম। আর উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি শান্তির নিবাসের দিকে ডাকেন অর্থাৎ দারুস সালাম উনার দিকে ডাকেন। দারুস সালাম হচ্ছেন জান্নাত উনার ১টি নাম। উনারা অনন্তকাল সেখানে অবস্থান করবেন।
অতএব, যারা জান্নাতী এবং যারা জাহান্নামী উভয়ই কী সমান? কখনোই না। কেননা যারা জান্নাতী উনারা কামিয়াবী হাছিল করেন। যে ব্যক্তি তার রব উনার কাছে অপরাধী হিসেবে আসবে তার জন্য থাকবে জাহান্নাম। সে জাহান্নামে মারাও যাবে না এবং জীবিত থাকার মতোও জীবিত হবে না। আর যে ব্যক্তি মু’মিন হিসেবে উপস্থিত হবে, আমলে ছলেহ উনার অধিকারী উনাদের জন্য রয়েছে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন জান্নাতুল আদন। তা এমন জান্নাত যার নিচ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হয়। উনারা অনন্তকাল সেখানে অবস্থান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে সেই কুওওয়াত ও হিম্মত দান করেন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












