মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বপ্রথম নূর মুবারক সৃষ্টির বিষয়ে খারেজিদের মিথ্যাচারের জবাব
, ০৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৬ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৫ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
খারেজি ফিরকার দাবি হচ্ছে পূর্ববর্তী যে কিতাবসমূহে পবিত্র হাদীছে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বা সর্বপ্রথম পবিত্র নূর মুবারক সৃষ্টি বিষয়ক রেওয়ায়েত রয়েছে তা ভুল করে চলে এসেছে এবং মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাকে এ ধরনের কোন বর্ণনা ছিলো না। নাঊযুবিল্লাহ! আজকে এ কথারই জবাব দিবো ভুল করে আসেনি বরং অত্যন্ত তাহক্বীক ও নির্ভরতার সাথে উনারা দলীল এনেছেন।
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ, ফক্বীহ হযরত ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত: ৯৭৪ হিজরী) উনাকে আর নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। উনার ভুবন বিখ্যাত একখানা কিতাবের নাম হচ্ছে “ফতওয়ায়ে হাদিস্যিয়াহ”। এই কিতাবের ৩৮০ পৃষ্ঠায় ৩১৬নং প্রশ্নে একটা হাদীছ শরীফ এনে হযরত ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে এর বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়-
وسئل نفع الله به: عن حديث:" أنا من الله والـمؤمنون مني" من رواه؟
আমি আল্লাহ পাক থেকে আর মু’মিনগন আমার থেকে এ রেওয়ায়েত কেমন?
জবাবে তিনি বলেন-
فأجاب بقوله: هو كذب مـختلط وإن ذكره الديلمي بلا إسناد
“এটার আবিষ্কারক মিথ্যাবাদী। যা হযরত দায়লামী রহমতুল্লাহি আলাইহি সনদ ছাড়া বর্ণনা করেছেন। ”
এখান থেকে আমরা জানতে পারলাম হযরত দায়লামী রহমতুল্লাহি আলাইহি সনদ ছাড়া হাদীছ বর্ণনা করেছেন এবং এ প্রসঙ্গে অন্য কোন সনদে বর্ণনা না থাকায় তিনি কিন্তু বর্ণনাটাকে মিথ্যা বলে রায় দিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে ফতওয়া দিতে বিন্দুমাত্র ছাড় দেন নাই।
এরপর চলুন দেখে নেয়া যাক ঠিক তার পরবর্তী প্রশ্নে। উক্ত কিতাবের ৩৮০ পৃষ্ঠার ৩১৭ নং প্রশ্নে-
وسئل نفع الله به: أول ما الله روحي والعالـم بأسره من نوري كل شيء يرجع إلي صلة من رواه؟ صلى الله عليه وسلم
সর্বপ্রথম মহান আল্লাহ পাক আমার রূহ মুবারক সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টি জগত আমার নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন। প্রত্যেক বস্তু তার মূলের দিকে ফিরে যায়, কে বর্ণনা করেছেন?
فأجاب بقوله : لا أعلم أحدا رواه كذلك وإنـما الذي رواه عبد الرزاق أنه صلى الله عليه وسلم قال:" إن الله خلق نور مـحمد قبل الأشياء من نوره"
জবাব: উপরোক্ত রেওয়ায়েত সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। তবে নিশ্চয়ই হযরত ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে একটা রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম সম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টি করেছেন সকল সৃষ্টির পূর্বে উনার কুদরতী নূর মুবারক থেকে। ” অর্থাৎ সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সৃষ্টি করেছেন।
ইমাম ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এ বক্তব্য দ্বারা বোঝা গেলো অন্য বর্ণনাগুলো সনদ বা সত্যতা না থাকলেও ইমাম হযরত আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুছান্নাফে পূর্ণ সনদসহই এ পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনার জানা ছিলো। যদি তা না হতো তবে উনি স্পষ্টই বলে দিতেন ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুছান্নাফে উক্ত হাদীছ শরীফ বা এধরনের রেওয়ায়েত নেই। এটি একটি জাল রেওয়ায়েত। যেমন তিনি ৩১৬ নং প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন। অথচ পবিত্র হাদীছে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ক্ষেত্রে তিনি কিন্তু তা বলেন নাই। বরং নিজ থেকেই এ হাদীছ শরীফখানা প্রশ্নকারীর প্রশ্নে জবাবে দলীল হিসাবে এনেছেন।
বোঝা গেলো, মূল মুছান্নাফের প্রাচীন পান্ডুলিপিতে হাদীছে জাবিরের অস্তিত্ব স্পষ্টই ছিলো, পরবর্তীতে কোন কূটকৌশলে তা বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। তা না হলে হযরত ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কোনভাবেই মুছান্নাফের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করে সম্মানিত নূর মুবারক উনার হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতেন না ৩১৭নং প্রশ্নে জবাবে। ৩১৬নং জবাবের মত বিনা সনদে বর্ণনার অভিযোগে জাল বলে উড়িয়ে দিতেন। কিন্তু তিনি তা করেন নাই। এখানেই শেষ নয় তিনি উক্ত “ফতোয়ায়ে হাদিস্যিয়াহ” কিতাবের ৮৫ পৃষ্ঠাতেও হাদীছ শরীফ খানা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন। সুতরাং প্রমাণ হলো মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাকে উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছিলো।
-খাজা মুহম্মদ নূরুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












