اَلْمُقَدِّمَةُ (আল মুক্বদ্দিমাহ্)

اَلْـحَمْدُ وَالصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ لِشَيْخِنَا مَـمْدُوْحْ مُرْشِدْ قِـبْـلَةْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ سُلْطَانٍ نَّصِيْـرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَعَلـٰى اَهْلِ بَـيْـتِهِ الْكَرِيْـمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ وَالصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ عَلـٰى سَيّـِدِ الْاَنْۢبِيَاءِ وَالْـمُرْسَلِـيْـنَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلـٰى اَهْلِ بَـيْـتِهِ الْكَرِيْـمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ وَالْـحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِـيْـنَ. اَمَّا بَـعْدُ

খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اِنَّ اللهَ وَمَلٰٓئِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِـىِّ

“নিশ্চয়ই যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার সকল সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পেশ করে যাচ্ছেন অর্থাৎ উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: ৫৬)

মহান আল্লাহ পাক তিনি তো কোনো আমল করেন না; কিন্তু এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে প্রমাণিত যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ পালন করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার চেয়ে বড় ও ফযীলতপূর্ণ আর কোনো আমল নেই। সুবহানাল্লাহ! বান্দার তরফ থেকে সর্বশেষ মাক্বাম হচ্ছে- আবদিয়াতের মাক্বাম আর মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ মাক্বাম মুবারক হচ্ছেন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করলে বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসান কত বড় নেয়ামত লাভ করবে এবং তা পালন করার কত বেমেছাল ফযীলত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!

তাই, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরয হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাভ করতে পারার কারণে শুকুর গুজারীর সাথে খুশি মুবারক প্রকাশ করে উনার পক্ষ থেকে পশু যবেহ করার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আক্বীক্বাহ্ মুবারক করে হাক্বীক্বীভাবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা। যদি করতে পারে, তাহলে তারা ইহকাল ও পরকালে সর্বোচ্চ হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারবে। সুবহানাল্লাহ!

কিন্তু সম্মানিত মুসলমান উনাদেরকে এই সীমাহীন নিয়ামত ও ফযীলত মুবারক থেকে মাহরূম করার জন্য বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকেরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আক্বীক্বাহ্ মুবারক করে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বিষয় নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে থাকে, নানা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তাই, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি সর্বোচ্চ পর্যায়ের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাভ করতে পারার কারণে শুকুর গুজারীর সাথে খুশি মুবারক প্রকাশ করে উনার পক্ষ থেকে পশু যবেহ করার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আক্বীক্বাহ্ মুবারক করে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা খাছ সুন্নত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যার মাধ্যমে বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকদের সর্বপ্রকার বিভ্রান্তি ও চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বালকে চিরতরে মাটিতে দাফন করে দেয়া হয়েছে। বক্ষমান কিতাব মুবারক-এ সেই বিষয়টিই অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

তাই, সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে এই কিতাব মুবারকখানা ভালোভাবে অধ্যয়ন করা এবং উনার ব্যাপক প্রচার-প্রসার করা।

যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আক্বীক্বাহ্ মুবারক দেয়া এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রাখা:

সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম) তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আক্বীক্বাহ্ মুবারক দিয়েছেন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন-

১ম দলীল

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

فَـلَمَّا كَانَ الْـيَـوْمُ السَّابِعُ ذَبَحَ عَنْهُ وَدَعَا لَهٗ قُـرَيْشًا فَـلَمَّا اَكَلُوْا قَالُوْا يَا سَيِّدَنَا حَضْرَتْ جَدَّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ) اَرَاَيْتَ اِبْـنَكَ هٰذَا الَّذِىْ اَكْرَمْتَـنَا عَلـٰى وَجْهِهٖ مَا سَـمَّـيْـتَهٗ قَالَ سَـمَّـيْـتُهٗ سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالُوْا فَمَا رَغِبْتَ بِهٖ عَنْ اَسْـمَاءِ اَهْلِ بَـيْـتِكَ قَالَ اَرَدْتُّ اَنْ يَّـحْمَدَهُ اللهُ فِـى السَّمَاءِ وَخَلْقُهٗ فِـى الْاَرْضِ

“সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে পশু যবেহ করে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আক্বীক্বাহ্ মুবারক করেন এবং কুরাঈশদেরকে দাওয়াত মুবারক করেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে সম্মানিত মেহমানগণ বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সন্তান মুবারক উনার সম্মানার্থে আজকের এই মহাসম্মানিত মেহমানদারী মুবারক উনার আয়োজন; আপনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক কী রেখেছেন? সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আমি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রেখেছি ‘সাইয়্যিদুনা মাওলানা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। কুরাইশগণ বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি কারণে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রাখার ব্যাপারে আগ্রহী হলেন? কিভাবে রাখার ফিকির করেছেন? যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনারা কিংবা আপনার সম্প্রদায়ের কেউ কোনো দিন রাখেননি? জবাবে তিনি বললেন, এই উদ্দেশ্যে রেখেছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমানে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক এবং প্রশংসা মুবারক করবেন আর সমস্ত সৃষ্টি যমীনে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক এবং প্রশংসা মুবারক করবে। ” সুবহানাল্লাহ! (খ¦ছাইছুল কুবরা ১/৮৫, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ লিলবাইহাক্বী ১/১১৩, আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ২/৩২৫, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ইত্যাদি)



(অসমাপ্ত)

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আবূ আহমাদ ছিদ্দীক্বাহ্।