মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার তালবীনাহ-১
, ১৩ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২২ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالثَةِ الصَّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ اِذَا اَخَذَ اَهْلَهُ الْوَعْكُ أَمَرَ بِالْحَسَاءِ قَالَتْ وَكَانَ يَقُوْلُ إِنَّهٗ لَيَرْتُوْ فُؤَادَ الْحَزِيْنِ وَيَسْرُوْ عَنْ فُؤَادِ السَّقِيْمِ كَمَا تَسْرُوْ إِحْدَاكُنَّ الْوَسَخَ عَنْ وَجْهِهَا بِالْمَاءِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কেউ মহাসম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করতেন তখন তিনি হাসা (তালবীনাহ) বানানোর নির্দেশ মুবারক দিতেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করতেন, এটি অসুস্থ ব্যক্তির হৃদপি-কে শক্তিশালী করে এবং হৃদপি-ের অসুস্থতাকে এমনভাবে সুস্থ করে, যেমনিভাবে পানি দ্বারা মুখ ধোয়ার পর ময়লা দূর হয়ে যায়।” (ইবনে মাজাহ শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৪৪৫; তিরমিযী শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২০৩৯)
তালবীনাহ ও ছারীদ: তালবীনাহ ও ছারীদ একত্রে মিশিয়ে খাওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصَّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ زَوْجِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا كَانَتْ إِذَا مَاتَ الْمَيِّتُ مِنْ أَهْلِهَا فَاجْتَمَعَ لِذٰلِكَ النِّسَاءُ ثُمَّ تَفَرَّقْنَ إِلَّا أَهْلَهَا وَخَاصَّتَهَا أَمَرَتْ بِبُرْمَةٍ مِنْ تَلْبِيْنَةٍ فَطُبِخَتْ ثُمَّ صُنِعَ ثَرِيْدٌ فَصُبَّتِ التَّلْبِيْنَةُ عَلَيْهَا ثُمَّ قَالَتْ كُلْنَ مِنْهَا فَإِنِّيْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ التَّلْبِيْنَةُ مَجَمَّةٌ لِفُؤَادِ الْمَرِيْضِ تَذْهَبُ بِبَعْضِ الْحُزْنِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে কেউ যখন মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত দীদার মুবারকে প্রত্যাবর্তন করতেন (পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করতেন) তখন মহিলাগণ এসে সমবেত হতেন। অতঃপর নিকট আত্মীয়গণ ও বিশেষ ঘনিষ্ঠ মহিলাগণ ব্যতীত বাকী সবাই চলে গেলেন। এমন সময় তিনি ডেগে “তালবীনাহ” পাকাতে নির্দেশ মুবারক দিলেন। তা পাকানো হলো। এরপর “ছারীদ” (গোশতের মধ্যে রুটি টুকরো করে দিয়ে তৈরী খাবার) প্রস্তুত করা হলো এবং তাতে তালবীনাহ ঢালা হলো। তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তোমরা এখান থেকে খাও। কেননা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমি ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি যে “তালবীনাহ” রুগ্ন ব্যক্তির অন্তরে প্রশান্তি এনে দেয় এবং শোক দুঃখ দূর করে। (বুখারী শরীফ : কিতাবুত ত্বয়ামাহ্ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৫৪১৭; মুসলিম শরীফ : কিতাবুস সালাম : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২২১৬)
অন্য বর্ণনায় ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالثَةِ الصَّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْكُمْ بِالْبَغِيْضِ النَّافِعِ التَّلْبِيْنَةِ يَعْنِي الْحَسَاءَ قَالَتْ وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اشْتَكٰى أَحَدٌ مِنْ أَهْلِهٖ لَمْ تَزَلِ الْبُرْمَةُ عَلَى النَّارِ حَتّٰى يَنْتَهِيَ أَحَدُ طَرَفَيْهِ يَعْنِيْ يَبْرَأُ أَوْ يَمُوْتُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, (রোগীদের কাছে) অপ্রিয় কিন্তু উপকারী বস্তুটি তোমরা অবশ্যই গ্রহণ করবে। তা হলো তালবীনাহ অর্থাৎ হাসা (দুধ ও যবের আটা সহযোগে প্রস্তুতকৃত তরল পথ্য)। “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করলে হাসা-এর পাতিল চুলার উপর থাকতো, যতক্ষণ না মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মারিদ্বী শান মুবারক থেকে মহাসম্মানিত ওমহাপবিত্র ছিহহাতী শান মুবারক অথবা মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করতেন। (ইবনে মাজাহ শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৪৪৬) (অসমাপ্ত)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












