মুসলমানগণ কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ঐক্যবদ্ধ হবেন (৪)
, ০৮ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৪ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৩ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২০ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ক্ববরে রাখার পর মাইয়্যিতকে যে প্রশ্নগুলো করা হয়। সেখানেও মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে- হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-
تَلَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ آمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ فَقَالَ ذَالِكَ إِذَا قِيْلَ لَهُ فِي الْقَبْرِ مَنْ رَبُّكَ؟ وَمَا دِيْنُكَ؟ وَمَنْ نَبِيُّكَ؟ فَيَقُوْلُ اللهُ رَبِّيْ وَالْإِسْلَامُ دِيْنِيْ وَ سَيِّدُنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيِّيْ جَاءَنَا بِالْبَيِّنَاتِ مِنْ عِنْدِ اللهِ فَآمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُهُ فَيُقَالُ صَدَقْتَ عَلَى هَذَا حَيِيْتَ وعَلَيْهِ مِتَّ وَعَلَيْهِ تُبْعَثُ إِنْ شَاءَ اللهُ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করেন, ‘যারা ঈমান এনেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে ইহকাল ও পরকালে মজবুত কথা দিয়ে শক্তি যোগাবেন। ’ (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭)
এরপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এই পবিত্র আয়াত শরীফ ঐ সময়ের জন্য প্রযোজ্য, যখন মাইয়্যিতকে কবরে জিজ্ঞাসা করা হবে-‘তোমার রব কে? তোমার দ্বীন কি? আর তোমার সম্মানিত নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কে?’ তখন সে বলবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার রব, ইসলাম আমার সম্মানিত দ্বীন, আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার মহাসম্মানিত নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম; যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আমাদের নিকট তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। আমরা উনার প্রতি ঈমান এনেছি, উনার কথা মুবারক সত্য বলে মেনে নিয়েছি। তখন তাকে বলা হবে, তোমার উত্তর সঠিক। এ কথার উপর তুমি জীবন কাটিয়েছো, এরই উপর তোমার ইন্তেকাল হয়েছে, আর এই কথার উপরই তোমাকে (ক্বিয়ামতের দিন) উঠানো হবে ইনশাআল্লাহ! (ইছবাতু আযাবিল ক্ববর ২৯ পৃষ্ঠা)
হযরত ইকরিমা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ فِيْ قَوْلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ آمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْآخِرَةِ الشَّهَادَةُ يُسْأَلُوْنَ عَنْهَا فِيْ قُبُوْرِهِمْ بَعْدَ مَوْتِهِمْ قَالَ قُلْتُ لِعِكْرِمَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ مَا هُوَ؟ قَالَ يُسْأَلُوْنَ عَنْ إِيْمَانِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَمْرِ التَّوْحِيْدِ قَالَ وَيُضِلُّ اللهُ الظَّالِمِيْنَ قَالَ تِلْكَ الشَّهَادَةُ فَلَا يَهْتَدُوْنَ أَبَدًا
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ‘যারা ঈমান এনেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে ইহকাল ও পরকালে মজবুত কথা দিয়ে শক্তি যোগাবেন। ’ (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ সম্পর্কে বলেন, এখানে ঐ সাক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে, যার সম্পর্কে মানুষের মৃত্যুর পর তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। (বর্ণনাকারী বলেন,) আমি হযরত ইকরিমা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম সেটা কি? তিনি বলেন, তা হলো- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এবং তাওহীদ বা একত্ববাদ সম্পর্কে মানুষকে জিজ্ঞেস করা হবে। ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে পথহারা করে দিবেন। ’ এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হচ্ছে- উপরোক্ত সাক্ষ্য তারা কখনোই সঠিকভাবে দিতে পারবে না। নাঊযুবিল্লাহ! (ইছবাতু আযাবিল ক্ববর ৩১ পৃষ্ঠা)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত যে, ঈমানদার হওয়ার জন্য তাওহীদ ও রিসালাত অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের প্রতি ঈমান আনা আবশ্যক। অন্যথায় কেউ কস্মিনকালেও ঈমানদার হতে পারবে না। আর যারা ঈমানদার না, তাদের সাথে মুসলমানদের কখনোই ঐক্য হতে পারে না। যারা বলে, ঐক্যের ভিত্তি হচ্ছে তাওহীদ তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল ও মিথ্যা। কাফিরদের সাথে মুসলমানদের বিরোধের মূলেই হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। কারণ কাফিররাও মহান আল্লাহ পাক উনাকে বিশ্বাস করতো এবং করে। কিন্তু তারা কাফির হওয়ার কারণ হলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অস্বীকার করা, উনার প্রতি ঈমান না আনা, উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা। নাঊযুবিল্লাহ!
তাই একটু গভীরে ফিকির করলে দেখা যায়, মুসলমানদের ঐক্যের একমাত্র ভিত্তি হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। (অসমাপ্ত)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












