মুসলমানদের জন্য কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা, অনুসরন করা জায়েয নেই
, ১৯ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৩ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ০৬ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, অবশ্যই তোমাদের সকলের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যেই উত্তম আদর্শ মুবারক রয়েছেন। সুহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ: ২১)
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত মুসলমানদের জন্য উত্তম আদর্শ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাই প্রত্যেক অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। পোশাক থেকে শুরু করে উঠা বসা, চলাফেরা খাওয়া, ওযু, ইস্তিঞ্জা, ঘুম অর্থাৎ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব অবস্থায় সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। তবেই ইহকাল ও পরকালে সব অবস্থায় সব জায়গায় কামিয়াবী হাছিল করা যাবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন, যদি তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত (সন্তুষ্টি) পেতে চাও তাহলে আমার অনুসরণ করো। তাহলেই মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে মুহব্বত করবেন তোমাদের গুনাহখাতা ক্ষমা করে দিবেন এবং তোমাদের প্রতি দয়ালু হবেন। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ থেকে জানা গেলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইত্তিবা বা অনুসরণ-অনুকরণ করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি মুহব্বত করবেন, গুনাহখাতা ক্ষমা করবেন অর্থাৎ মাছুম নিষ্পাপ করে দিবেন এবং দয়ালু হবেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি দয়ালু হয়ে ইহকাল-পরকালে গায়েবী মদদ বা সাহায্য করবেন, সন্তুষ্টি-রেযামন্দি, মুহব্বত-মা’রিফাত তায়াল্লুক, নিসবত, কুরবত মুবারক দান করবেন। ফলে মুসলমানরা কামিয়াবী হাসিল করবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর মুসলমানদের জন্য কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীন যারা রয়েছে এদেরকে কখনো অনুসরণ করা, বন্ধুত্ব রাখা, উঠা-বসা করা যাবে না; যদি কোন মুসলমান এদের সাথে বন্ধুত্ব রাখে অথবা এদের চাল-চলন অনুসরণ করে এদের সাথে উঠা-বসা করে তবে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদী ও নাস্তিকদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু তোমাদের মধ্যে যে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে সে তাদেরই দলভুক্ত হবে। নাঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা কাফির মুনাফিকদের অনুসরণ করো না। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ০১)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথে হবে (মুসনাদে আহমদ শরীফ, সুনানে আবু দাউদ শরীফ)
এ প্রসঙ্গে বনী ইসরাঈল যুগে একটি ওয়াকিয়া তাফসীরে উল্লেখ করা হয়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইউশা বিন নূন আলাইহিস সালাম উনার উপর সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল করলেন, হে আমার নবী! আপনার উম্মতের মধ্যে এক লক্ষ লোককে ধ্বংস করে দেয়া হবে যার মধ্যে ৬০ হাজার লোক সরাসরি গুনাহে লিপ্ত (গোমরাহ) তখন হযরত ইউশা বিন নূন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “আয় আল্লাহ পাক, ৬০ হাজার লোক সরাসরি গুনাহে লিপ্ত তাই তাদের ধ্বংস করে দেয়া হবে, কিন্তু বাকি ৪০ হাজার লোককে ধ্বংস করা হবে কেন? মহান আল্লাহ পাক তিনি তখন বললেন, যেহেতু তারা ঐ গুনাহে লিপ্ত লোকদের সাথে মেলামেশা করে; সম্পর্ক রাখে; আর গুনাহের কাজে বাধা দেয় না তাই তাদেরকেসহ ধ্বংস করে দেয়া হবে। নাউযুবিল্লাহ!
এখান থেকেও জানা যায় যে, কাফির-মুশরিক বেদ্বীন-বদদ্বীন এদের সাথে কোন মুসলমান চলা-ফেরা করতে পারবে না, উঠা-বসা অর্থাৎ সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। এদের আমলের সঙ্গে মিল রেখেও কোন আমল করা যাবে না। যদি মুসলমান সেটা করে, তাহলে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। নাঊযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন সমস্ত মুসলমানদেরকে কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের বদ তাছীর থেকে হিফাজত করেন। আমীন।
-আহমদ ওমর।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র ছলাত বা দরূদ শরীফ পাঠ করার বেমেছাল ফযীলত
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র ই’তিকাফ এর হুকুম-আহকাম
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৫৪)
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে রোযা অবস্থায়- ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন ও টিকা নেয়া অবশ্যই রোযা ভঙ্গের কারণ (১৪)
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার কতিপয় কারামত মুবারক
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ফাতহে মক্কা অর্থাৎ পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় দিবস
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে রোযা অবস্থায়- ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন ও টিকা নেয়া অবশ্যই রোযা ভঙ্গের কারণ (১৩)
১৭ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৭ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)