মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির মুশরিকদের চক্রান্ত এবং তা থেকে বাঁচার উপায় (২)
, ০৫ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য কাফির-মুশরিকদের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যেমন- ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ, ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্স, চীনের এমএসএস, রাশিয়ান গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবি, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ইত্যাদি। উল্লেখ্য ১৮ শতাব্দীতে মুসলমানদের প্রাণকেন্দ্র আরবে মুসলমানদের ক্ষতি করার জন্য ব্রিটেন প্রায় ৩ লক্ষ গোয়েন্দা প্রেরণ করেছিল। এর মধ্যে শুধু হ্যামপার নামক এক গোয়েন্দা সফল হয়ে বাতিল ফিরকা ওহাবী মতবাদের জন্ম দিতে সক্ষম হয়। পরবর্তীকালে বিংশ শতাব্দীতে ইহুদী বংশধর সউদ পরিবারকে আরবের ক্ষমতায় স্থান করে দিতে অপর ব্রিটিশ গোয়েন্দা লরেন্স সফলতার সাথে কার্যক্রম চালায়।
মুসলমানদের জ্ঞান-বিজ্ঞান চুরি:
বর্তমানে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান বলতে যেটা বোঝায়, তার জনক হচ্ছে মুসলমানগণ। শুরু থেকেই মুসলমানগণ ছিলেন জ্ঞান বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ ও প্রাচুর্যময়, অপরদিকে কাফিররা ছিলো মূর্খ, অজ্ঞ ও বর্বর। উল্লেখ্য, ১২৫৮ সালে হালাকু খান মুসলিম জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু বাগদাদ নগরীতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। ধ্বংস করে মুসলিম জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্র বাইতুল হিকমাহ লাইব্রেরী। এই লাইব্রেরী থেকে মুসলমানদের অনেক জ্ঞান-বিজ্ঞান গবেষণা বই চুরি হয়ে যায়, যা পরবর্তীতে ইহুদী ও খ্রিষ্টান জাতি করায়ত্ব করে ফেলে। একইভাবে ১৪৯২ সালে অবসান ঘটে স্পেনে মুসলিম শাসনের। ঐ সময় স্পেন ছিলো মুসলিম সভ্যতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র, যেখানে বিশাল লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত ছিলো মুসলিম বিজ্ঞানীদের গবেষণাধর্মী বইসমূহ। স্পেন দখলের পর খ্রিষ্টানরা স্পেনের লাইব্রেরীগুলো দখল করে, তারা অনেক বই সরিয়ে ফেলে, অনেক বই নদীতে ফেলে দেয়, আবার অনেকগুলো আগুনে ধ্বংস করে ফেলে। ১৫শ’ শতাব্দীর শেষ দিকে মুসলিম বিজ্ঞানীদের থেকে চুরি করা বইগুলো নিয়েই ১৭শ’ শতাব্দীতে ইউরোপীয়দের মধ্যে জ্ঞান বিজ্ঞানের সূচনা ঘটে। তারা মুসলমানদের থেকে চুরি করা বইগুলো অনুবাদ করতো এবং নিজেদের নামে প্রচার করতো। তবে মুসলমানদের লিখিত অধিকাংশ বই ছিলো আরবী ভাষায়, খ্রিষ্টানরা আরবী খুব একটা বুঝতো না, কিন্তু ইহুদীরা বুঝতো। তাই খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের বইগুলো ইহুদীদের কাছে দিয়েছিলো অনুবাদের জন্য। ইহুদীরা ছিলো ধূর্ত।
তারা বলতো- ‘একটা একটা বই দিলে হবে না, সব দাও, আমরা ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ করে দিবো’। ইহুদীদের এ কথা শুনে খ্রিষ্টানরা তাদেরকে অধিকাংশ বই দেয়, যেখান থেকে ইহুদীরা বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা নিজেদের কাছে রেখে দেয়। এই কারণে বর্তমানে ইহুদীদের মধ্যে বেশিরভাগ কথিত বিজ্ঞানীর দেখা মিলে।
শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং সিলেবাসে কুফরী’র প্রবেশ:
ব্রিটিশরা এ উপমহাদেশে ক্ষমতা দখল করার পর এদেশে প্রায় ৮০ হাজার মক্তব বন্ধ করে দেয়, চালু করে তাদের প্রবর্তিত সিলেবাস অনুযায়ী কলকাতা আলিয়া মাদরাসা (১৭৮০ সালে ওয়ারেন হেস্টিং)। এরপর ভারতের দেওবন্দ মাদরাসা (প্রতিষ্ঠা সাল: ১৮৬৬) তৈরির জন্য জমি দেয় ব্রিটিশরা। পরবর্তীতে ব্রিটিশ অনুচর এই দেওবন্দীদের মাধ্যমেই ছড়ানো হয় বিভিন্ন কুফরী আক্বীদা। নাউযুবিল্লাহ!
বর্তমান সময়ে একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। আমাদের দেশের শিক্ষানীতি তথা পাঠ্যসূচি থেকে হযরত নবী- রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের জীবনী মুবারক তুলে দেয়া হয়েছে এবং প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়েছে কাফিরদের জীবনী। একই সাথে মুসলমানদের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে দিয়ে প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রবেশ করানো হয়েছে বিভিন্ন কুফরী তথা বেদ্বীনী-বদদ্বীনী কালচার। এ শিক্ষা সিলেবাসের মাধ্যমে একটি শিশুর মন-মস্তিষ্কে ছোটবেলা থেকেই হারাম ও কুফরী প্রবেশ করানো হচ্ছে, ফলে শিশুটি ছোট বেলা থেকেই কুফরীপন্থায় বেড়ে উঠছে। নাউযুবিল্লাহ!
সুদ ভিত্তিক অর্থনীতি চালু:
“মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যবসাকে হালাল করেছেন, সুদকে হারাম করেছেন।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: আয়াত শরীফ ২৭৫)
“যে ব্যক্তি এক পয়সা হারাম খায়, তার ৪০ দিনের ইবাদত কবুল হয় না।” (পবিত্র হাদীছ শরীফ)
অথচ দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে মুসলমান দেশগুলোতেও ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স, বীমা, সমিতি সর্বত্রই সুদের কারবার। হারাম সুদ ছাড়া আর্থিক ব্যবস্থা বর্তমানে খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর।
দুঃখজনক হলেও সত্য কাফির রাষ্ট্রগুলোতে ব্যাংকে সুদের হার যেখানে মাত্র ১ শতাংশ, সেখানে মুসলমানদের দেশে সুদের হার প্রায় ১৫ শতাংশ বা তদূর্ধ্ব। উপরন্তু ইহুদী এজেন্ট উলামায়ে সূ’রা ইসলামী ব্যাংকিং-এর নামে সুদ ভিত্তিক হারাম লেনদেন করে যাচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে কুফরীর নামান্তর। (চলবে)
-মুহম্মদ আমীনুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












