মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাফির মুশরিকদের চক্রান্ত এবং তা থেকে বাঁচার উপায় (৪)
, ০৭ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০৫ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
১) শত্রু চিনতে হবে:
কাফিরদের নানান কায়দায় চক্রান্ত থেকে বাঁচতে মুসলমানদের প্রথমে শত্রু চিনতে হবে। আর এজন্য শত্রু সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হলে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ ভালোভাবে পাঠ করতে হবে এবং সেখান থেকে দৃঢ় আক্বীদা পোষণ করতে হবে কাফির, মুশরিকরা হচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা মানুষের মধ্যে তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদী ও মুশরিকদেরকে অর্থাৎ সমস্ত বিধর্মীদেরকে। আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “ইহুদী, নাছারা তথা আহলে কিতাবদের মধ্যে অনেকেই প্রতিহিংসাবশত: চায় যে, মুসলমান হওয়ার পর তোমাদেরকে কোন রকমে কাফির বানিয়ে দিতে।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৯)
মহান আল্লøাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “ইহুদী, নাছারারা তথা কাফির, মুশরিকরা কখনও তোমাদের (মুসলমানদের) প্রতি সন্তুষ্ট হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাদের ধর্ম গ্রহণ না করবে বা অনুগত না হবে।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২০)
২) শত্রু তথা কাফির, মুশরিককে বন্ধুরূপে গ্রহণ করা যাবে না:
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- “হে মু’মিনগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ কর না, তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন হবে।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫১)
“মু’মিনগণ যেন মু’মিনগণ ব্যতীত কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যে এরূপ করবে তার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কোন সম্পর্ক থাকবে না।” (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
৩) শত্রু তথা কাফির, মুশরিকদের কিছুতেই অনুসরণ করা যাবে না:
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তারা এটাই কামনা করে যে, তারা যেরূপ কুফরী করেছে তোমরাও সেরূপ কুফরী কর, যাতে তোমরা তাদের সমান হয়ে যাও।” (পবিত্র সূরা আন নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৯)
যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (সুনানে আবূ দাউদ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
মুসলমানদের এখন করণীয় কি?
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِن تَصْبِرُوْا وَتَتَّقُوا لَا يَضُرُّكُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا
অর্থ: “যদি তোমরা ধৈর্য্যধারণ করো এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করো অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের উপর ইস্তিক্বামত থাকো তবে কাফির মুশরিকদের কোন ষড়যন্ত্রই তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১২০)
আর এ জন্য প্রয়োজন একজন হক্কানী ওলীআল্লাহ উনার নিকট বাইয়াত গ্রহন করা, ছোহবত ইখতিয়ার করা, যিকির-আযকার করা। কেননা এটা ব্যতীত কেউ ইহুদী, খ্রিস্টান তথা কাফির মুশরিকদের চক্রান্ত বুঝতে সক্ষম হবে না এবং তাদের চক্রান্ত থেকে বাঁচতেও পারবে না। কারণ হক্কানী ওলীআল্লাহগণ উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে ইলমে গায়িব উনার অধিকারী হন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা যারা জানো না, যাঁরা আহলে যিকির বা আল্লøাহওয়ালা উনাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও।” (পবিত্র সূরা নাহল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৩)
সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত দুনিয়ার মুহব্বত ত্যাগ করে পরকালের আমল না করবে অর্থাৎ হাক্বীক্বী মু’মিন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কাফির, মুশরিকের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব নয়। হক্কানী ওলীআল্লাহগণ খাছ করে বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, গাউছুল আ’যম, হাবীবুল্লাহ রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছোহবতে এসে ক্বলব ইছলাহ বা পরিশুদ্ধ করে ঈমানী বলে বলীয়ান হলেই কাফির, মুশরিকদের সকল চক্রান্ত থেকে হিফাযত হওয়া সম্ভব। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক উছীলায় সকল মুসলমানকে কাফির, মুশরিকদের সকল চক্রান্ত ও যুলুম নির্যাতন থেকে হিফাজত করুন। আমিন। (সমাপ্ত)
-মুহম্মদ আমীনুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












