সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে অনন্তকালব্যাপী আয়োজিত বিশেষ মাহফিলে আজিমুশান নছীহত মুবারক:
যখন ইলিম সলব হয়ে যাবে তখন আজাব-গজব নেমে আসবে
, ০২ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৯ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৮ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ১৪ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আজকের পত্রিকা
আল ইহসান ডেস্ক:
প্রতিদিনের ন্যায় পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ উনার সম্মানে বিশেষ মাহফিল মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। গত ১লা মুহররমুল হারাম শরীফ বাদ ইশা মহান মুর্শিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি কূল-কায়িনাতের সকলের উদ্দেশ্যে নছীহত মুবারক পেশ করেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ আলাইহিস সালাম তিনি দেশব্যাপী সুন্নতী মালামাল প্রচার ও আনজুমান সফরের ইজাজত মুবারক ও দিকনির্দেশনা মুবারক দান করেন।
তিনি নছীহত মুবারক করে বলেন- আনজুমানের কাজ করতে হলে শক্তভাবে সেই কাজ করতে হবে। এতে কোনপ্রকার গাফলতি করা যাবে না। ৯০ দিনব্যাপী মাহফিল মুবারক প্রচার প্রসারের বহুবিধ কাজ রয়েছে। গতবার যারা যেভাবে খিদমত করেছে তারা সেটা ঠিক রাখবে বরং এবার আরো বেশী করে প্রচার প্রসারের জিনিসপত্র নিতে হবে। মহাসম্মানিত ইন্তেজামের যত কাজ রয়েছে সেগুলোতে শরীক হয়ে খিদমত গোলামীতে আনজাম দিতে হবে। প্রত্যেকের এলাকায় তোরণ নির্মাণ করা দরকার। বড় ঝান্ডাও টানানো দরকার। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতেই সব করতে হবে। সবার জন্য উচিত ছিলো ২৪ ঘন্টা উনার ছানা-ছিফত মুবারক করা। অন্তত সুন্নত মুবারক ইত্তেবা করার মাধ্যমে উনাকে স্মরণ করুক। উনার আজিমুশ্বান বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে সব জায়গায় তোরণ বানানো উচিত। গ্রাম দেশে কলা গাছ দিয়েও তোরণ বানানো হয়। আকল-বুদ্ধি থাকলে কম পয়সায়ও অনেক কিছু করা যায়। বাঁশ দিয়েও তোরণ নির্মাণ করা যায়। চলাচলের যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য উঁচা করে তোরণ বানাতে হবে। আর কেউ যদি অনেক বড় তোরণ বানাতে পারে সেটাতো আরো ভালো সেটা তার ইখতিয়ার। প্রত্যেক মহল্লায় মহল্লায় তোরণ করা যায়। যারা বড় পারবে না তারা ছোট করে হলেও করুক। সবাইকে এসব বিষয় জানাতে থাকো। সবাইকে ৯০ দিনব্যাপী মাহফিলে আসতে হবে। আকল-বুদ্ধি থাকলে এলাকাভিত্তিক ভাগ করে ১০ দিন পর পর আসতে পারে সবাই। তবে ওয়াজ মাহফিল সবার পুরোটাই শুনা উচিত। অনেক গুরুত্বপুর্ণ আলোচনা হয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শান মুবারক বিষয়ে। কিতাব পড়েতো সবাই পারবে না, শুনলে একটা বুঝ পয়দা হবে।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- আজকে তো পহেলা তারিখ শুরু হয়ে গেলো বৎসরের। নতুন বছর শুরু হলো- বিগত এক বছরে আমলের লাভ লোকসান কি হলো সেটারতো হিসাব করতে হবে। এখন মানুষের দ্বীনদারী নাই তো। দ্বীনদারী না থাকলে কি আর হবে। যারা বাতিল ফিরকা তারা ব্যবসা বানিজ্য চাকরী সব বন্ধ করে বছরে ৪০ দিন করে দুইবার সময় দেয়। নেক কাজে সবাই গাফেল আর গাফেলের দ্বারা তো কাজ হয় না। যিকির নাই ফিকির নাই ইলিমের কোন চর্চা নাই। জাহেরী ইলিমের প্রতি কোন আগ্রহ নাই আর বাতেনী ইলিমের প্রতিও কারো আগ্রহ নাই। কামিয়াবী হাছিল করতে হলে দুটা ইলিমের প্রতিই আগ্রহ থাকতে হবে। এখনতো মানুষ পড়াশোনাই করে না। অনেক পড়াশোনা করা দরকার। সীমিত কিতাবের মধ্যে সীমিত বিষয়গুলো থাকে। সব বিষয়গুলো তো থাকেনা। ইলিম শিক্ষা হলো নিজের কাছে। মাদরাসায় তো সব পড়ানো যাবে না। মাদরাসায় ইলিমের মূল বুঝটা দেয়া হয়ে থাকে। বাকীটা নিজেকেই চর্চা করে শিখে নিতে হবে, নিজেকেই সবকিছু তাহকিক করে পড়াশোনা করে শিখতে হবে। এছাড়া মাদরাসায় পড়ার উদ্দেশ্যটা কি সেটাও বুঝার দরকার। এখনতো সবাই রছম রেওয়াজ পড়ে। কোটি কোটি মাদরাসা হতে লক্ষ লক্ষ প্রতিবছর ফারেগ হয়। এদের মধ্যে ইলিমের তাছির না থাকার কারণে তারা স্বকীয়তা ধরে রাখতে পারে না। ফাসেক ফুজ্জারদের সাথে এরা মিশে যায় তন্ত্রমন্ত্রে একাকার হয়ে যায়। নাউজুবিল্লাহ।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে, হযরত যিয়াদ বিন লাবিদ রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এক সময় ইলিম সলব হয়ে যাবে। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইলিম কি করে সলব হয়ে যাবে? যেখানে আমরা পবিত্র কুরআন শরীফ পড়ি প্রচার করি, আমাদের সন্তানরা পড়ে, এভাবে কিয়ামত পযর্ন্ত আমাদের সন্তানদের সন্তানরা শিক্ষা দিতে থাকবে। তাহলে কিভাবে ইলিম সলব হয়ে যেতে পারে! নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে যিয়াদ বিন লাবিদ রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনার মা আপনাকে হারাক! (এটা একটা আরবদের পরিভাষা) আমি তো আপনাকে মদীনা শরীফের একজন সমঝদার ব্যক্তি মনে করতাম, আপনি এটা কী বললেন, ইহুদী নাছারা তারা কি তাওরাত ইনজিল কিতাব পড়েনা? তারাওতো কিতাব পড়ে কিন্তু আমল করেনা, ঠিক আমার উম্মতও পবিত্র কুরআন শরীফ পড়বে কিন্তু আমল করবেনা। আর যখন ইলিম সলব হয়ে যাবে তখন আজাব গজব নেমে আসবে। তাওরাত ইনজিলে ঈমান আনার কথা বলা হয়েছে, সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছলাøল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে বলা হয়েছে। এরপরও তারাতো ঈমান আনে না। পবিত্র কুরআন শরীফ পড়ে, পবিত্র হাদীছ শরীফ পড়ে এবং পড়ায়, জুময়ার খুতবা দেয়, ওয়াজ মাহফিল করে, ছবি তোলে, তন্ত্রমন্ত্র করে, বেপর্দা মহিলাদের সাথে দেখা দেয়। এদের মধ্যে ইলিমের নূর নাই যার কারণে তারা হারাম কাজ করে। তাদের ছহীহ সমঝ নাই যার কারণে কুফরী কাজ করে সারাদিন। কতগুলো বিষয় পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সুস্পষ্ট দলীল থাকার পরও সেগুলো তারা অমান্য করে। তাহলে এরা মুসলমান থাকলো কি করে। পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফতো থাকবে কিন্তু আমল থাকবে না। বর্তমানে যারা আলেম ছুফি দরবেশ দাবী করে তারা সবাই ছবি ভিডিও করে, বেপর্দা হয় তন্ত্রমন্ত্র করে, হারামকে হালাল করে। কোন গুনাহকে হালাল বললে, সে কাফের হয়ে যায়। কোন গুনাহতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করাও কুফরী। পবিত্র ইলমে দ্বীন হাছিলের যে সমঝ থাকা দরকার সেটাতো তাদের নাই। তারা ওয়াজে বলে সুন্নত পালন করতে কিন্তু সে নিজেই সুন্নত আমল করে না, জানেও না। এক লক্ষ মতান্তরে দুই লক্ষ হযরত নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এসেছেন। উনাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়েছে এমনকি, ৭০ হাজার নবী রাসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে শহীদ করে দেয়া হয়েছে। যারা এটা করেছে তাদের বংশধর হলো ওলামায়ে ছু এরা, এদের বদ ছোহবত থেকে সবাইকে সতর্ক সাবধান থাকতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সঞ্চয় বাড়ছে কোটিপতিদের
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কৃষি মার্কেটে আগুন : পুকুর ধ্বংসের ভয়ংকর ফল
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে মুরগির বাজারও কি এবার কারসাজির খপ্পরে?
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বড়রা লুট করলেও কৃষকরা ফেরত দিচ্ছেন
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘১৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে এখন কিনছি ৪০ টাকায়’
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আমাদের সম্মানিত ছোট চাচা হুজুর কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি আজ ১১-৩০মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না-লিল্লাহী ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
১০ আগস্ট, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












