যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূঁজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১৫)
, ২১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ মে, ২০২৫ খ্রি:, ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
লাত মূর্তি ধ্বংস করার নির্দেশ মুবারক
১ম দলীল
তায়েফের সম্মানিত জিহাদ মুবারক সংঘটিত হওয়ার পর সাক্বীফ গোত্রের লোকজন যখন মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যে সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন তার মধ্যে একটি ছিল এই যে,
اَنْ يَّدَعَ لَـهُمُ الطَّاغِيَةَ وَهِىَ اللَّاتُ لَا يَـهْدِمُهَا ثَلَاثَ سِنِـيْـنَ فَاَبٰـى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَـيْهِمْ فَمَا بَرِحُوْا يَسْاَلُوْنَهٗ سَنَةً سَنَةً وَيَـأْبٰـى عَلَيْهِمْ حَتّٰـى سَاَلُوْهُ شَهْرًا وَاحِدًا بَـعْدَ قُدُوْمِهِمْ فَاَبٰـى عَلَـيْهِمْ اَنْ يَّدَعَهَا شَيْـئًا مُّسَمّٰى
‘তায়েফবাসীদের ‘লাত’ নামক মূর্তিটি তিন বছর পর্যন্ত যেন না ভাঙ্গা হয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন। তারপরও উনারা এক বছর এক বছর করে কমিয়ে মূর্তিটি না ভাঙ্গার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আরযী পেশ করতে থাকেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের এই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করলেন। পরিশেষে উনারা উনাদের আগমনের পর মাত্র এক মাস মূর্তিটি রেখে দেওয়ার জন্য আরযী পেশ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উল্লেখিত কোনো মেয়াদেই উনাদের জন্য মূর্তিটি রেখে দিতে অস্বীকার করলেন। ’
২য় দলীল
সবশেষে উনারা যখন নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলেন,
اَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعَهُمُ حَضْرَتْ اَلْمُغِيْـرَةَ بْنَ شُعْـبَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ اَبَـا سُفْيَانَ بْنَ حَرْبٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ لِـيَـهْدِمَا الطَّاغِيَةَ (اَللَّاتُ) فَـتَـقَدَّمَ حَضْرَتْ اَلْمُغِيْـرَةُ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ فَـهَدَمَهَا
‘তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সাথে হযরত মুগীরাহ্ ইবনে শু’বাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে ‘লাত’ নামক মূর্তিটি ভাঙ্গার জন্য প্রেরণ করেন। হযরত মুগীরাহ্ ইবনে শু’বাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অগ্রসর হয়ে মূতিটি ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল কামিল ফিত তারীখ, শারহুয যারক্বানী, আর রওদ্বুল উনফ, তারীখুত ত্ববারী ইত্যাদি)
উপরোক্ত দলীলের মাধ্যমে এই বিষয়টি সুস্পষ্ট হলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত মূর্তি ও মূর্তির সংশ্লিষ্ট সবকিছু ধ্বংস করেছেন এবং ধ্বংস করতে শক্ত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের পর সমস্ত মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ফেলেছিলেন এবং ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন করার আদেশ মুবারকও করেছেন।
অথচ বর্তমান যামানার তথাকথিত নামধারী আলেম-ওলামা, মালানা, মুফতী অর্থাৎ ওলামায়ে সূ’রা সম্পূর্ণ বিপরীত আমল করে যাচ্ছে। যার ফলে তারা নিজেরা যেমন গুমরাহ, মুরতাদ ও কাফির হচ্ছে। সাথে সাথে সাধারণ উম্মতদেরকেও গুমরাহ, মুরতাদ ও কাফির বানাচ্ছে। সম্মানিত শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও কাট্টা মুরতাদ হয়েছে এবং তাদেরকে যারা অনুসরণ করছে এবং করবে তাদের প্রতিও একই হুকুম বর্তাবে এবং যারা তাদের কুফরী সম্পর্কে দ্বিমত পোষণ করবে তাদের প্রতিও একই হুকুম বর্তাবে। এদের ইমামতিতে নামাজ পড়া যায়েজ নেই। কারণ এরা মুরতাদ ও কাফির হয়ে গেছে। কেউ যদি তাদের পিছনে নামাজ পড়ে তাহলে তার নামাজ কখনোই হবে না। তাকে নামাজ অবশ্যই দোহরায়ে পড়তে হবে। অন্যথায় সে শুধুমাত্র নামাজ তরকের গুনাহে গুনাহগারই হবে না বরং সেও মুরতাদ ও কাফির হবে।
(চলবে)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












