রাজধানীর সব ভবনে ছাদ বাগানের হাজারো কোটি টাকার উপরে আয় এবং অতিরিক্ত অক্সিজেন প্রাপ্তিসহ বহুবিধ সুফলের পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তাও অনেক। রাজধানীবাসীর উচিত স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছাদ বাগান কার্যক্রমে এগিয়ে আসা।
, ২১ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০১, মে, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মন্তব্য কলাম
![রাজধানীর সব ভবনে ছাদ বাগানের হাজারো কোটি টাকার উপরে আয় এবং অতিরিক্ত অক্সিজেন প্রাপ্তিসহ বহুবিধ সুফলের পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তাও অনেক। রাজধানীবাসীর উচিত স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছাদ বাগান কার্যক্রমে এগিয়ে আসা।](https://www.al-ihsan.net/uploads/1714506747_pen-clipart.png)
রাজধানীতে ছাদে বাগান করতে নগরবাসীর পক্ষ থেকে তেমন সাড়া মিলছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছে, এক্ষেত্রে নগরবাসীকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি ছাদে বাগান করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছে, রাজধানীর আবাসিক-বাণিজ্যিক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ ভবনের ছাদ খালি পড়ে আছে। নগরীর পরিবেশ ভালো রাখতে ভূমিকা রাখতে পারে ছাদ বাগান। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (রাজউক) ছাদে বাগান করা বাধ্যতামূলক করার চিন্তা করছে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে মহানগরী ঢাকার পরিবেশ দিন দিন বিষিয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে গ্রীষ্মকালের অস্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং বাতাসে দূষণ মাত্রা বৃদ্ধি রোধে ছাদে বাগান হতে পারে উত্তম সমাধান।
ছাদে বাগান বিস্তারের মাধ্যমে ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হবে। স্বাস্থ্য ও মন সুরক্ষায় রাখবে অসামান্য ভূমিকা। তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ ও শব্দদূষণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা যাবে। জার্মানীতে শতকরা ১২ ভাগ ছাদ ‘সবুজ’ এবং টোকিও আইনে সব নতুন ছাদের অন্তত শতকরা ২০ ভাগ সবুজ হতে হয়। টোকিও সরকারের হিসাব মতে, যদি তাদের অর্ধেক ছাদ সবুজ হয়, তাহলে প্রতিদিন এয়ার কন্ডিশনে ব্যবহৃত জ্বালানি বাবদ এক মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়। সিঙ্গাপুরে এক গবেষণায় দেখা যায়, যে ৫ তলা বাণিজ্যিক ভবনের ছাদে প্রতিষ্ঠিত বাগান দ্বারা বছরে জ্বালানি খরচের ০.৬-১৪.৫% সাশ্রয় হয়। অনেক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ দেশে ভবন গরম ও শীতলকরণে শতকরা ৩০ ভাগ বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন হয়ে থাকে। ছাদ বাগানের মাধ্যমে কম খরচে স্থায়ীভাবে জ্বালানি ব্যবহার কমানো, ভবনের বাহ্যিকরূপের উন্নতি ও তাপমাত্রা হ্রাস করা সম্ভব।
‘গার্ডেন সিটি প্রোগ্রাম’ শিরোনামে ষাটের দশকে গৃহীত একটি পরিকল্পনার আওতায় ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুর ‘সবুজ ও পরিচ্ছন্ন সিঙ্গাপুর’ গড়ে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে টানা তিন দশক ধরে তারা বহুমুখী প্রচেষ্টা চালিয়েছে। রাস্তার পাশে পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানো হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে পার্ক ও মুক্তাঞ্চলের সুবিস্তৃত নেটওয়ার্ক। পাশাপাশি এসব বৃক্ষ ও পার্ক সুরক্ষার জন্য প্রণীত ও গৃহীত হয়েছে যথাযথ আইনি বর্মও।
ঢাকা শহরের বাড়ির ছাদে সবজি চাষ করে বছরে হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। এতে শুধু রাজধানীর পরিবেশই রক্ষা পাবে না, মানুষের পুষ্টির উন্নয়ন ঘটবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এক হিসাবে আড়াই কাঠার একটি বাড়ির ছাদে বাগান করে নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে বছরে ৫০ হাজার টাকা বাড়তি আয় করা সম্ভব। বলাবাহুল্য, এটা করা সম্ভব হলে ইট-পাথরের মহানগরী ‘সিটি গার্ডেনে’ পরিণত হবে।
ছাদে বাগান করলে পানি ব্যবহারের কারণে বাড়ির দেয়াল ও মেঝে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিরসনে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে ওয়াটারপ্রুফ সলিউশন। বাগান করার আগে ওয়াটারপ্রুফ সলিউশন দিয়ে দেয়াল ও মেঝে ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিলে দেয়াল ও মেঝে নষ্ট হয়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কাই থাকবে না। ইতোমধ্যে ছাদকৃষি কিছুটা হলেও শুরু হয়েছে এবং সবচেয়ে বড় কথা, এটা ক্রমশই সম্প্রসারিত হচ্ছে। আর এটা রুফ গার্ডেনার কনসেপ্ট হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে।
ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘোষণা দিয়েছে যে, ছাদে বাগান করলে ১০ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করা হবে। পাশাপাশি ছাদে বাগান করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা- মাটি, টব ও সার দিয়েও সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে। ২০১৬ সালেও ঢাকা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ঢাকা শহরকে সবুজায়নের জন্য বাসাবাড়ির ছাদ ও বেলকনিতে রুফ গার্ডেন গড়ে তোলার জন্য প্রচারণা চালানো শুরু হয়েছিলো। যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। গ্রিন ঢাকা কর্মসূচির মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমিয়ে আনা সম্ভব। আর রুফ গার্ডেন করলে ওই ভবনের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কমবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় দেড় লাখ হোল্ডিং আছে। এর মধ্যে অসংখ্য অ্যাপার্টমেন্ট আছে। এসব ছাদে বাগান করে ঢাকার চেহারাই পাল্টে দেয়া সম্ভব। ইনশাআল্লাহ!
উল্লেখ্য, পৃথিবীর অনেক শহরের চেয়ে ঢাকার ভৌগোলিক অবস্থা ভালো। শহরের চারপাশে নদী রয়েছে। এখন এটাকে কাজে লাগাতে হবে রুফ গার্ডেন ধারণা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকা শহরকে পরিবেশবান্ধব ও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার মাধ্যমে।
বিশেষ করে সরকারি ও বাণিজ্যিক ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের ছাদে বাগান বাধ্যতামূলক করা যায়। এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের মার্কেটসমূহকে মডেল গার্ডেন হিসেবে গড়ে তোলা যায়। তবে সত্যিকার ফলপ্রসূ করতে চাইলে সরকারকে অনতিবিলম্বে আইনের মাধ্যমে রাজউকের বিল্ডিং কোডে ছাদে বাগান বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং রিহ্যাব ও সিটি করপোরেশনকে তা বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। ব্যাপক প্রশিক্ষণ ও ফলোআপের ব্যবস্থা করতে হবে।
এজন্য প্রয়োজন শুধু সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত ও কার্যকর ব্যবস্থা। আর তা হলো রাজউকের প্লান পাসের সময় বাড়ির ছাদে বাগান করার বাধ্যতামূলক শর্ত জুড়ে দিতে হবে। তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ঢাকা শহর ‘গ্রিন রুফ গার্ডেন সিটি’তে পরিণত হবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদারের আহবান প্রধানমন্ত্রীর।
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অপারেশনের ওষুধের টাকা জোগাড় করতে করতে ক্লান্ত রোগীরা ওষুধ আর পরীক্ষার জন্য রোগী পাঠানো হয় বাইরে সব হাসপাতালে দালালচক্র সক্রিয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের শিক্ষার মান ক্রমশই নিম্নমুখী। সার্টিফিকেট ও মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রতে পরিণত হচ্ছে শিক্ষা। কর্মমূখী ও বাস্তবিক শিক্ষার অভাবে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে উঠছে না বাংলাদেশে। সরকারের উচিত, এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার
১৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা দরকার ইনশাআল্লাহ
১৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নমরুদের মশা আর এডিস মশার মধ্যে যেমন পার্থক্য নেই তেমনি পার্থক্য নেই নমরুদবাদ আর ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মধ্যে। নমরুদ মশার ও এডিস মশার গযব থেকে বাঁচতে হলে অবিলম্বে নমরুদবাদ তথা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রত্যাহার করতে হবে।
১৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
১৪ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মদের বিরুদ্ধে দিয়েছে অসংখ্য সতর্কবাণী ও নির্দেশনা। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে দেয়া হবে মদের লাইসেন্স! মদ-জুয়ার প্রসার মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অসন্তুষ্টির কারণ। যার পরিণতি হতে পারে খোদায়ী গযব। নাউযুবিল্লাহ!
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের যোগ্যতা ৩.৭৫, তবুও ২.৯৫ পেয়ে অধ্যাপক অন্যান্য দেশে অধ্যাপক হতে ২০ বছর লাগলেও বাংলাদেশে লাগে মাত্র ১২ বছর! গবেষণায় যোগ্যতা না থাকার পরও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ পাচ্ছে নামধারী অধ্যাপকরা। গবেষণা কমছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, প্রশিক্ষণ না পেয়ে দেশ ছাড়ছে গবেষণায় উৎসাহী মেধাবীরা।
১২ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কর্মক্ষম জনশক্তি তথা কর্মক্ষমতার স্বর্ণযুগে বাংলাদেশ অথচ যথাযথ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদেশে কর্মরত দেশীয় শ্রমিক স্বদেশে তো ফিরবেই পাশাপাশি বিদেশি কর্মশক্তি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে।
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কমিশনের লোভে ১০০ টাকার ওষুধের পরিবর্তে ১৫০০ টাকার বিদেশী ওষুধ লেখেন চিকিৎসকরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নই চিকিৎসক দুর্বৃত্তায়নকে পালন ও প্রসার করছে ওপেন সিক্রেট ডাক্তারদের কমিশন বাণিজ্য বন্ধে চাই ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবন
০৯ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)