পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে
রোযা অবস্থায়- ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন ও টিকা নেয়া অবশ্যই রোযার ভঙ্গের কারণ (৪)
, ২৭ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১০ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৫ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এখানে “উলিল আমর” বলতে ইমাম, মুজতাহিদ ও আউলিয়া-ই-কিরামগণকেই বুঝানো হয়েছে। সুতরাং “উলিল আমর” যেমন ক্বিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে থাকবেন, তদ্রুপ ইজতিহাদের দরজাও ক্বিয়ামত পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর ইজমা ক্বিয়াস এ ইজতিহাদেরই অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, পৃথিবীতে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত নতুন সমস্যারই উদ্ভব হোক না কেন, তার ফায়সালা অবশ্যই পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে করতে হবে।
এ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে “রোযা অবস্থায় ইনজেকশন, ইনহেলার, স্যালাইন নিলে অবশ্যই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে” এই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে, যা অস্বীকার করার উপায় নেই।
কেননা বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে চিকিৎসার মাধ্যম হিসাবে ইনজেকশনের ভূমিকা অপরিসীম, বিশেষ করে কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে নিয়মিত ইনজেকশন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। সুতরাং রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নেওয়া, না নেওয়ার ব্যাপারে অনেকেই সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগেন, যেহেতু কিছু সংখ্যক মুফতি ইনজেকশনের কার্যকারিতা সম্পর্কে না জানার কারণে ভুল ফতওয়া দিয়েছে যে, “রোযা রাখা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোযা ভঙ্গ হয়না” নাঊযুবিল্লাহ! অথচ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার উছূল মোতাবেক যা সম্পূর্ণ ভুল। অর্থাৎ রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে অবশ্যই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ মুতাবিক সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার সাধারণ উছূল হলো-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰـى عَنْهُ مِنْ قَوْلِهٖ اِنَّـمَا الْوُضُوْءُ مِـمَّا خَرَجَ وَلَيْسَ مِـمَّا دَخَلَ وَالْفَطْرُ فِى الصَّوْمِ مِـمَّا دَخَلَ وَلَيْسَ مِـمَّا خَرَجَ.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে- ওযূর ব্যাপারে নিয়ম হলো- শরীর হতে কিছু বের হলে ওযূ ভঙ্গ হবে, প্রবেশ করলে ভঙ্গ হবে না। আর রোযার ব্যাপারে নিয়ম হলো- শরীরের ভিতর কিছু প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হবে, বের হলে নয়।” (বায়হাক্বী শরীফ, ত্ববারানী শরীফ, মুওয়াত্বা মালিক শরীফ)
অবশ্য কিছু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এই উছূলের ব্যতিক্রম লক্ষণীয়। কিন্তু খাছভাবে রোযার ব্যাপারে ইমামে আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যে উছূল, অর্থাৎ “বাহির থেকে রোযা অবস্থায় যে কোন প্রকারে বা পদ্ধতিতে শরীরের ভিতর কিছু প্রবেশ করলে, যদি তা পাকস্থলী অথবা মগজে প্রবেশ করে, তবে অবশ্যই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে,” এই উছূলের উপরেই ফতওয়া এবং অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদগণও এ ব্যাপারে একমত যে, যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, ওষুধ মগজ অথবা পাকস্থলীতে পৌঁছেছে, তবে অবশ্যই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
উপরোক্ত উছূলের ভিত্তিতে যে কোন প্রকারে বা যে কোন পদ্ধতিতে ইনজেকশন নিলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
যেহেতু যে কোন প্রকারের বা পদ্ধতিতেই ইনজেকশন নেওয়া হোক না কেন, ইনজেকশনের ওষুধ কিছু সময়ের মধ্যে রক্তস্রোতে মিশে যায়, রক্ত এমন একটি মাধ্যম, যার সাথে সরাসরি শরীরের প্রত্যেকটি কোষ (ঈবষষ) ও কলা (Tissue)-এর সংযোগ রয়েছে। ফলে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং রক্তের মাধ্যমে তা কয়েক মিনিটের মধ্যে মগজে পৌঁছে যায়। অর্থাৎ রোযাদার রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে অবশ্যই রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র কুরবানী ও কুরবানীদাতার ফযীলত (২)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৮)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জীবানু অস্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদীদের জাতি নিধনের ষড়যন্ত্র (২)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ত্বাহারাতের ইস্তিব্রা ও ইস্তিন্ক্বার আহকাম
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৭)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত হাম্বলী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আত তাক্বউইমুশ শামসী”একটি নতুন সৌর সন (২)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৬)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৫)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হক্কানী-রব্বানী আলিম তথা ওলীআল্লাহ উনাদের সাথে তায়াল্লুক বা সম্পর্ক রাখা পরকালে নাযাত লাভের অন্যতম উছীলা
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত কা’ব বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার একটি ঈমানদীপ্ত পরীক্ষা
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)