মন্তব্য কলাম
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মদের বিরুদ্ধে দিয়েছে অসংখ্য সতর্কবাণী ও নির্দেশনা। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে দেয়া হবে মদের লাইসেন্স! মদ-জুয়ার প্রসার মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অসন্তুষ্টির কারণ। যার পরিণতি হতে পারে খোদায়ী গযব। নাউযুবিল্লাহ!
, ০৪ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২২ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মন্তব্য কলাম

বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ‘অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০২২’ জারি করেছে। এটি ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮’-এর অধীনে করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে প্রথমবারের মতো অ্যালকোহল বা মদ উৎপাদন, কেনাবেচা, পান করা, পরিবহন, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়মনীতি স্পষ্ট করা হলো।
বিধিমালা অনুযায়ী, মদ কেনাবেচা, পান, পরিবহনের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, পারমিট ও পাস নিতে হবে। কোথাও কমপক্ষে ১০০ জন মদের পারমিটধারী থাকলে ওই এলাকায় অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে। আর ২০০ জন হলে দেওয়া হবে বারের লাইসেন্স। ২১ বছরের কম বয়সের ব্যক্তি মদপানের অনুমতি পাবে না। বিধিমালায় ‘অন শপ’ এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যে স্থান থেকে বিদেশি নাগরিক বা পারমিটধারী দেশীয় নাগরিক বিলাতি মদ বা বিদেশি মদ বা অ্যালকোহলজাতীয় পানীয় কিনে ওই স্থানে বসে পান করতে পারে। রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যে কোনো একটি বা একাধিক পথে অ্যালকোহল বহন বা পরিবহন করা যাবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মদের লাইসেন্স প্রদানের পর বিভিন্ন মহল থেকে এর প্রতিবাদ করা হয়েছে। কেউবা স্বাস্থ্যগত ক্ষতি তুলে ধরছে আবার কেউবা দেশের ভেতর মাদকের বিস্তার বেড়ে যাবে ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রতি আলোকপাত করছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান। বাংলাদেশের সংবিধানে দ্বীন ইসলাম রাষ্ট্রদ্বীন হিসেবে বিধিবদ্ধ রয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিসহ বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে নিজেদের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পক্ষের সরকার হিসেবে দাবী করেছে। প্রচার-প্রসার করেছে। সেই প্রেক্ষিতে মদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যগত ক্ষতিসহ বাহ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মদকে কঠোরভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বিভিন্ন জায়গায় মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মদ নামক এই ঘৃণ্য বস্তুটির বিরুদ্ধে কঠোরভাবে হুশিয়ারী এবং সাবধানতা কালাম উচ্চারণ করেছেন-
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ
* ‘হে মু’মিনগণ! নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (পবিত্র সূরা মায়েদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯০)।
* ‘শয়তান তো মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ এবং নামাযে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?’ (পবিত্র সূরা মায়েদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯১)
পবিত্র হাদীছ শরীফ
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘তোমরা মদ পান করো না। কারণ তা সকল অপকর্ম ও অঘটনের চাবিকাঠি। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘প্রত্যেক নেশাকর বস্তুই মদ বা মদ জাতীয়। আর প্রত্যেক নেশাকর বস্তুই হারাম। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, প্রত্যেক নেশাকর বস্তুই হারাম এবং যে বস্তুটির বেশি পরিমাণ নেশাকর তার সামান্যটুকুও হারাম”।
* হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মদ সংশ্লিষ্ট দশজনের প্রতি লা’নত করেছেন। (১) যে মদ তৈরি করে (২) যে মদ তৈরির ফরমায়েশ দেয় (৩) যে মদ পান করে (৪) যে মদ বহন করে (৫) যার জন্য মদ বহন করা হয় (৬) যে মদ পান করায় (৭) যে মদ বিক্রি করে (৮) যে এর মূল্য ভোগ করে (৯) যে মদ ক্রয় করে (১০) যার জন্য মদ ক্রয় করা হয়।
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘অভ্যস্ত মাদকসেবী মূর্তিপূজক সমতুল্য। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘অভ্যস্ত মাদকসেবী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘মদ পান করা আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কাঠের খুটিকে ইবাদত করা একই কথা। কারণ দুইটিই একই অপরাধ। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি মদজাতীয় দ্রব্য পান করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার ৪০ দিনের নামায কবুল করবেন না। যদি এ অবস্থায় মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে যাবে। যদি তওবা করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার তওবা কবুল করবেন। লোকটি যদি চতুর্থবার মদ পান করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে কিয়ামতের দিন আগুনের তাপে জাহান্নামীদের শরীর থেকে গলে পড়া রক্ত ও পুঁজমিশ্রিত গরম তরল পদার্থ পান করাবেন। নাউযুবিল্লাহ!
মূলত; পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে অপকারিতাসহ বাহ্যিক এবং আখিরাতসহ সর্ব জায়গায় মদ কিভাবে একজন ব্যক্তিকে ধ্বংস করবে তার বিস্তারিত সতর্কবাণী প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে মদের লাইসেন্স প্রদানের আগে শত সহস্র সাবধানবাণীর দিকে দৃষ্টি দেয়া হলো না। নাউযুবিল্লাহ!
অতীতে বহুবার মদপান এবং অবাধ্যতার কারণে বিভিন্ন ভূখন্ডে মহান আল্লাহ পাক উনার গযব নাযিল হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশেও যখন লাইসেন্সের মাধ্যমে মহল্লায় মহল্লায় মদের দোকান তৈরী হবে, জায়গায় জায়গায় মানুষ মদ খেয়ে মাতাল হয়ে পড়ে থাকবে তখন স্বাভাবিকভাবে জাহেলী যুগের আচরণে অভ্যন্ত হবে দেশের মানুষ। যা আযাব-গযব আসার অন্যতম কারণ। নাউযুবিল্লাহ!
আমরা মনে করি, দেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে সরকারের উচিত, পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে মদের লাইসেন্স তো অবশ্যই নয় পাশাপাশি দেশের যে মহলটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম রাষ্ট্রে মদের অবাধ প্রসারের সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়, জনগনকে মাদকসেবী বানাতে চায়, মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করতে চায় তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নাটক-সিনেমা করা ও দেখা হারাম- ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তা মানে না। ভারতীয় অপরাধমূলক টিভি সিরিজ দেখে হত্যা, ব্যাংক ডাকাতি, পরকিয়ার মতো অপরাধ আয়ত্ত্ব করছে দেশবাসী। কিন্তু নাটক-সিনেমার ভয়াবহ কুফল রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারছে না। ডিশ এন্টেনার প্রসারে হিন্দি সিরিয়ালের কুপ্রভাবে দেশ জাতি বিপর্যস্ত।
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কুরবানী আসে-যায় মৌসুমী কসাইরা অরক্ষা আর অবহেলাতেই থেকে যায়। তাদের অনেকে আহত হয়, পঙ্গু হয়, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যায়- মৌসুমী কসাইদের প্রশিক্ষণ ও পৃষ্টপোষকতার পাশাপাশি ঈদুল আদ্বহায় বিশেষ স্বাস্থসেবা চালু করা দরকার।
১২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
০৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাড়ছে পরকীয়া, বাড়ছে তালাক সমাজে বাড়ছে কলহ-বিবাদ, শিথিল হয়ে পড়ছে পারিবারিক বন্ধন দ্বীনী মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ। সরকারের উচিত- জাতীয়ভাবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূর করা।
০৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মানবতা বা মনুষ্যত্ব শব্দ উচ্চারণের অধিকার বিশ্ববাসীর আর নাই গাজার শিশুদের আর্তনাদ, গাজার মায়ের আহাজারি যে বিশ্ব শুনতে পায় না- “সে বিশ্ব বধির”। গাজার শেষ হাসপাতাল ধ্বংস
০৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কেবল কুরবানীর পশুই বিক্রি হয় ১ লাখ কোটি টাকার পাশাপাশি চামড়া সংশ্লিষ্ট খাত, খামার সংশ্লিষ্ট কর্মসংস্থান, মশলার বাজার ইত্যাদি মিলিয়ে মোট কুরবানী অর্থনীতির আকার প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার শুধুমাত্র চামড়াই নয় বর্তমানে বাংলাদেশে গরুও রপ্তানী হচ্ছে ভারতের গরু ব্যবসায়ী থেকে কুখ্যাত মোদীর মাথায় এখন হাত
০২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
রাজনৈতিক সমালোচক মহল বলছেন দেশে এখন মাফিয়া ও লুটেরা সরকার চলছে তারা দেশের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের জন্য মরীয়া হয়ে উঠেছে দুদক, হামলা-মামলা দিয়ে দেশীয় ব্যবসায়ীদেরকে ত্রাসের মধ্যে আটকে রাখা হচ্ছে
০১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা ও ক্বিয়ামতের তথ্য
৩১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পরিবেশবান্ধব চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার বাধা বলে যেসব তথাকথিত পরিবেশবাদীরা ট্যানারিগুলোকে স্থানান্তরিত করলো, আজকে চামড়া শিল্পের ধ্বংসে তাদের কর্মতৎপরতা কোথায়?
৩০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চামড়া সংরক্ষণে সারাদেশে সরকার ৬০০ চামড়া গুদামের কথা বললেও প্রয়োজন ছোট বড়ো মিলিয়ে হাজারেরও বেশী গুদাম পাশাপাশি শুধু চামড়া গুদামই নয় সরকারের উচিত সাভারের ট্যানারি শিল্পের সঙ্কটও নিরসন করা চামড়া শিল্পের সঙ্কট নিরসন করলে চামড়া খাতের রফতানি আয় ছাড়াবে হাজার কোটি ডলারেরও বেশি
২৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বড় বড় কোম্পানীগুলোর কব্জায় গরুর খাদ্য। কুরবানীর গরুর উচ্চমূল্যও তাদের কারসাজির কারণে। গো-খাদ্যের দাম কমানোর পাশাপাশি কুরবানীর গরু প্রকল্পে সরকারের প্রণোদনা দেয়া উচিত।
২৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সংস্কারের দাবিদার বর্তমান সরকারও প্রচলিত রপ্তানির বৃত্তের মধ্যেই আবদ্ধ। আম রপ্তানির ২৬টি বাধা দূরীকরণে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নয়। বাংলাদেশে বৎসরে ১ কোটি টন আম উৎপাদন সম্ভব ইনশাল্লাহ। হাজার হাজার কোটি টাকা রপ্তানিও সম্ভব ইনশাল্লাহ।
২৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)