মন্তব্য কলাম
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মদের বিরুদ্ধে দিয়েছে অসংখ্য সতর্কবার্তা ও নির্দেশনা। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে দেয়া হবে মদের লাইসেন্স! মদ-জুয়ার প্রসার মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অসন্তুষ্টির কারণ। যার পরিণতি হতে পারে খোদায়ী গযব। নাউযুবিল্লাহ!
, ৮ই রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ৯ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ২২ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম

বিধিমালা অনুযায়ী, মদ কেনাবেচা, পান, পরিবহনের ক্ষেত্রে লাইসেন্স, পারমিট ও পাস নিতে হবে। কোথাও কমপক্ষে ১০০ জন মদের পারমিটধারী থাকলে ওই এলাকায় অ্যালকোহল বিক্রির লাইসেন্স দেওয়া হবে। আর ২০০ জন হলে দেওয়া হবে বারের লাইসেন্স। ২১ বছরের কম বয়সের ব্যক্তি মদপানের অনুমতি পাবে না। বিধিমালায় ‘অন শপ’ এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, যে স্থান থেকে বিদেশি নাগরিক বা পারমিটধারী দেশীয় নাগরিক বিলাতি মদ বা বিদেশি মদ বা অ্যালকোহলজাতীয় পানীয় কিনে ওই স্থানে বসে পান করতে পারে। রেল, সড়ক, নৌ ও আকাশপথের যে কোনো একটি বা একাধিক পথে অ্যালকোহল বহন বা পরিবহন করা যাবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে মদের লাইসেন্স প্রদানের পর বিভিন্ন মহল থেকে এর প্রতিবাদ করা হয়েছে। কেউবা স্বাস্থ্যগত ক্ষতি তুলে ধরছে আবার কেউবা দেশের ভেতর মাদকের বিস্তার বেড়ে যাবে ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রতি আলোকপাত করছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান। বাংলাদেশের সংবিধানে দ্বীন ইসলাম রাষ্ট্রদ্বীন হিসেবে বিধিবদ্ধ রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে মদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যগত ক্ষতিসহ বাহ্যিক ক্ষতির পাশাপাশি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মদকে কঠোরভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বিভিন্ন জায়গায় মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মদ নামক এই ঘৃণ্য বস্তুটির বিরুদ্ধে কঠোরভাবে হুশিয়ারী এবং সাবধানতা কালাম উচ্চারণ করেছেন-
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ
* ‘হে মু’মিনগণ! নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (পবিত্র সূরা মায়েদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯০)।
* ‘শয়তান তো মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায় এবং তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণ এবং নামাযে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?’ (পবিত্র সূরা মায়েদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯১)
পবিত্র হাদীছ শরীফ
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘তোমরা মদ পান করো না। কারণ তা সকল অপকর্ম ও অঘটনের চাবিকাঠি। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘প্রত্যেক নেশাকর বস্তুই মদ বা মদ জাতীয়। আর প্রত্যেক নেশাকর বস্তুই হারাম। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, প্রত্যেক নেশাকর বস্তুই হারাম এবং যে বস্তুটির বেশি পরিমাণ নেশাকর তার সামান্যটুকুও হারাম”।
* হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মদ সংশ্লিষ্ট দশজনের প্রতি লা’নত করেছেন। (১) যে মদ তৈরি করে (২) যে মদ তৈরির ফরমায়েশ দেয় (৩) যে মদ পান করে (৪) যে মদ বহন করে (৫) যার জন্য মদ বহন করা হয় (৬) যে মদ পান করায় (৭) যে মদ বিক্রি করে (৮) যে এর মূল্য ভোগ করে (৯) যে মদ ক্রয় করে (১০) যার জন্য মদ ক্রয় করা হয়।
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘অভ্যস্ত মাদকসেবী মূর্তিপূজক সমতুল্য। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘অভ্যস্ত মাদকসেবী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘মদ পান করা আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কাঠের খুটিকে ইবাদত করা একই কথা। কারণ দুইটিই একই অপরাধ। ’
* পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি মদজাতীয় দ্রব্য পান করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার ৪০ দিনের নামায কবুল করবেন না। যদি এ অবস্থায় মারা যায় তাহলে সে জাহান্নামে যাবে। যদি তওবা করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার তওবা কবুল করবেন। লোকটি যদি চতুর্থবার মদ পান করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে কিয়ামতের দিন আগুনের তাপে জাহান্নামীদের শরীর থেকে গলে পড়া রক্ত ও পুঁজমিশ্রিত গরম তরল পদার্থ পান করাবেন। নাউযুবিল্লাহ!
মূলত; পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে অপকারিতাসহ বাহ্যিক এবং আখিরাতসহ সর্ব জায়গায় মদ কিভাবে একজন ব্যক্তিকে ধ্বংস করবে তার বিস্তারিত সতর্কবাণী প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে মদের লাইসেন্স প্রদানের আগে শত সহস্র সাবধানবাণীর দিকে দৃষ্টি দেয়া হলো না। নাউযুবিল্লাহ!
অতীতে বহুবার মদপান এবং অবাধ্যতার কারণে বিভিন্ন ভূখন্ডে মহান আল্লাহ পাক উনার গযব নাযিল হয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশেও যখন লাইসেন্সের মাধ্যমে মহল্লায় মহল্লায় মদের দোকান তৈরী হবে, জায়গায় জায়গায় মানুষ মদ খেয়ে মাতাল হয়ে পড়ে থাকবে তখন স্বাভাবিকভাবে জাহেলী যুগের আচরণে অভ্যন্ত হবে দেশের মানুষ। যা আযাব-গযব আসার অন্যতম কারণ। নাউযুবিল্লাহ!
আমরা মনে করি, দেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে সরকারের উচিত, পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে মদের লাইসেন্স তো অবশ্যই নয় পাশাপাশি দেশের যে মহলটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম রাষ্ট্রে মদের অবাধ প্রসারের সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়, জনগনকে মাদকসেবী বানাতে চায়, মুসলিম বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন করতে চায় তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র দ্বীন ইসলাম অন্যান্য ধর্মের সাথে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সহাবস্থানে থাকতে পারে না। পবিত্র দ্বীন ইসলাম কখনোই কথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র অধীন হতে পারে না।
২৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাত্র জনতার সরকার দাবী করে- আপনাদের বহুল উচ্চারিত সংস্কারের জন্য আপনারা গুটি কতক রাজনৈতিক দলগুলোর উপরই আবদ্ধ আছেন কেন? সংস্কারের জন্য জনতার এবং জনমতের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি নেই কেনো?
২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে- সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল ফযীলত মুবারক বর্ণনা
২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছাত্ররা চেয়েছিলো ‘কোটা’ আর জনতা চেয়েছিলো ‘তাগুত হাসিনা’র পতন। এই চেতনায়ই হয়েছিলো জুলাই গণঅভ্যূথান। ৫ই আগষ্টের আগে ছাত্র-জনতার দাবীতে কোন সংস্কারের কথা ছিল না। সংস্কারের কোনো প্রচারণা বা ঘোষণা ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার গণমানুষের গণসমর্থন ছাড়াই সংস্কারের নামে মরীয়া। কিন্তু কেনো?
২২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গাজায় যেখানে শিশুদেরও একবেলা খাবারেরও নিশ্চয়তা নাই প্রতি মুহুর্তেই মুহুর্মুহু বোমায় ঝলসে যাচ্ছে গাজাবাসী যেখানে সৌদি আরবে হচ্ছে ডিজে পার্টি আর কাতারে হচ্ছে আতশ বাজি প্রদর্শনী
২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
“ইসলামী বিশেষজ্ঞ মহল এবং ইসলামী মিডিয়ার মতে- বর্তমান বহুত্ববাদী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী মনোভাবই পালন এবং ধারন বাস্তবায়ন করে চলছে
২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাগরের বুকে তৈরি হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ অনেক বেড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের আয়তন খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় চললে বাংলাদেশ এত বড় হতে পারে যে বর্তমান ৪০ থেকে ৫০ কোটি জনসংখ্যার পরও বাংলাদেশেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাজের জন্য লোক আসবে ইনশাআল্লাহ!
১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও অবমূল্যায়নের কারণে দেশ ছাড়ছে মেধাবী বিজ্ঞানীরা। অথচ তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যায়নে বাংলাদেশ হতে পারে তথ্য-প্রযুক্তিসহ সকল খাতে এশিয়ার সুপার পাওয়ার। দেশের গবেষক-বিজ্ঞানীদের মূল্যায়ন না করলে দেশ কোনোসময়ই উন্নত হবেনা, আর উন্নয়নের দাবীও করা যাবেনা।
১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পৃষ্ঠপোষকতার অভাব ও অবমূল্যায়নের কারণে দেশ ছাড়ছে মেধাবী বিজ্ঞানীরা। অথচ তাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে মূল্যায়নে বাংলাদেশ হতে পারে তথ্য-প্রযুক্তিসহ সকল খাতে এশিয়ার সুপার পাওয়ার। দেশের গবেষক-বিজ্ঞানীদের মূল্যায়ন না করলে দেশ কোনোসময়ই উন্নত হবেনা, আর উন্নয়নের দাবীও করা যাবেনা।
১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শুধু অর্থনৈতিক উন্নতিই মুসলমানদের জন্য উন্নয়ন হিসেবে গৃহীত হতে পারেনা। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ নয়; নিদেন পক্ষে মধ্যম ত্বাকওয়ার মুসলমানের দেশ চাই।
১৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
স্বাধীনতা উত্তর এ পর্যন্ত কখনও জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি দিবস ঘোষণা করা হয়নি। এমনকি অন্তবর্তী সরকারের ২০২৫ সালের জাতীয় দিবস ঘোষণার পরিপত্রেও তা ছিলো না। হঠাৎ করে ৯ই এপ্রিল জাতীয় চৈত্র সংক্রান্তি দিবস ঘোষণা হলো কিভাবে? মাদরাসায় চৈত্র সংক্রান্তি পালনের নির্দেশের অর্থ হলো মুসলমানদের ইসলাম ত্যাগ করার নির্দেশ। মুসলমানদের হিন্দু ও উপজাতি হওয়ার নির্দেশ। মুসলমানদের হরেক রকমের পূজা করার নির্দেশ।
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)