সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, সেটা সরাসরি হোক বা ইশারা ইঙ্গিতেই হোক- তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড।
, ২৯ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যে কোন ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। শুধু তাই নয়, তাদেরকে শরঈ শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো লক্ষ কোটি গুণ বেশি কঠিনভাবে লাঞ্ছনাদায়ক শরঈ শাস্তি দিয়ে হত্যা করতে হবে। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একই হুকুম’
হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
وَاَفْـتٰـى فُقَهَاءُ الْقَيْرَوَانِ وَاَصْحَابُ سَحْنُوْنٍ بِقَتْلِ اِبْرَاهِيْمَ الفَزَارِىِّ وَكَانَ شَاعِرًا مُّتَفَنِّنًا فِـىْ كَثِيْرٍ مِّنَ الْعُلُوْمِ وَكَانَ مِـمَّنْ يَّـحْضُرُ مَـجْلِسَ حَضْرَتْ اَلْقَاضِىْ اَبِـى الْعَبَّاسِ بْنِ طَالِبٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ لِلْمُنَاظَرَةِ فَرُفِعَتْ عَلَيْهِ اُمُوْرٌ مُّنْكَرَةٌ مِّنْ هٰذَا الْبَابِ فِـى الْاِسْتِهْزَاءِ بِاللهِ وَاَنْۢبِيَائِهٖ وَنَبِيِّنَا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاَحْضَرَ لَهُ الْقَاضِىَ يَـحْيَـى بْنَ عُمَرَ وَغَيْرَهٗ مِنَ الْفُقَهَاءِ وَاَمَرَ بِقَتْلِهٖ وَصَلْبِهٖ فَطُعِنَ بِالسِّكِّيْنِ وَصُلِبَ مُنَكَّسًا ثُـمَّ اُنْزِلَ وَاُحْرِقَ بِالنَّارِ وَحَكٰى بَعْضُ الْمُؤَرِّخِيْنَ اَنَّهٗ لَمَّا رُفِعَتْ خَشَبَتُهٗ وَزَالَتْ عَنْهَا الْاَيْدِىُ اسْتَدَارَتْ وَحَوَّلَتْهُ عَنِ الْقِبْلَةِ فَكَانَ اٰيَةً لِّـلْجَمِيْعِ وَكَبَّرَ النَّاسُ وَجَاءَ كَلْبٌ فَوَلَغَ فِـىْ دَمِهٖ فَقَالَ حَضْرَتْ يَـحْيَـى بْنُ عُمَرَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ صَدَقَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَذَكَرَ حَدِيْثًا عَنْهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّهٗ قَالَ لَا يَلَغُ الْكَلْبُ فِـىْ دَمِ مُسْلِمٍ
অর্থ: “কায়রাওয়ানের সম্মানিত ফক্বীহগণ এবং হযরত ইমাম সাহনূন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনুসারীগণ উনারা ইবরাহীম ফাযারীকে হত্যা করার ফতওয়া দেন। ইবরাহীম অভিজ্ঞ ও খ্যাতনামা কবি ছিলো এবং দর্শনশাস্ত্র ও যাহিরী বিদ্যার অন্যান্য শাখায় অনেক পারদর্শী ছিলো। সে কাযী হযরত আবুল আব্বাস ইবনে তালিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মজলিসে বিভিন্ন বিষয়ে মুনাযারাহ বা বিতর্ক করার জন্য উপস্থিত হতো। তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছিলো যে, সে অনেক কাব্যে মহান আল্লাহ পাক উনার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ কটূক্তি করেছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন কাযী হযরত আবুল আব্বাস ইবনে তালিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাকে কায়রাওয়ানের ক্বাযী ও ফক্বীহ ইয়াহ্ইয়া ইবনে উমর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আদালতে উপস্থিত করেন, ঐ সময় আদালতে অসংখ্য খ্যাতনামা যুগশ্রেষ্ঠ ফক্বীহগণ উপস্থিত ছিলেন। শাস্তিস্বরূপ বিচারক তাকে ক্বতল করার এবং ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানোর ও আগুনে পুড়ানোর আদেশ মুবারক দেন। তাই, তাকে ছুরি দ্বারা আঘাত করে উল্টিয়ে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর তার মৃতদেহ নামিয়ে আগুনে পোড়ানো হয়। সুবহানাল্লাহ! কোনো কোনো ঐতিহাসিকগণ বলেন, যখন তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়, তার ফাঁসির রশি এমনিতে ঘুরতে শুরু করে। যখন তার চেহারা সম্মানিত ক্বিবলা উনার বিপরীত হয়ে যেতো, তখন ফাঁসির রশি ঘুরা বন্ধ হয়ে যেতো। উপস্থিত লোকজন এটাকে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কুদরত মুবারক উনার নিদর্শন মুবারক মনে করে তাকবীর ধ্বনি উচ্চারণ করেন। এরপর কুকুর এসে তার রক্ত খেয়ে ফেলে। তখন হযরত ইমাম ক্বাযী ইয়াহ্ইয়া ইবনে উমর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যথার্থই ইরশাদ মুবারক করেছেন যে,
لَا يَلَغُ الْكَلْبُ فِـىْ دَمِ مُسْلِمٍ
কুকুর মুসলমানের রক্ত খায় না। ” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২১৮, নাসীমুর রিয়াদ্ব ৪/ ৩৪৫-৩৪৬পৃ.)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সর্বাধিক বিশুদ্ধ ফতওয়া হচ্ছেন- যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, মানহানী করবে, তাকে শরঈ শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো অত্যধিক কঠিনভাবে যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে তাকে মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। কেননা স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেছেন,
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللهُ فِـى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর দুনিয়া ও আখিরাতে মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)
আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা কষ্ট দিবে তাদেরকে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রদানের কথা বর্ণনা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
(অপেক্ষায় থাকুন। )
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৫)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪০)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৯)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরানী হুলিয়া মুবারক (৪র্থ পর্ব)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৮)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার ইন্তিজামকারী বিনা হিসাবে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবেন
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুল ফাতাহ” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩১)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৭)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












