সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৪)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ১৩ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৯ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ০১ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে খিলাফত মুবারক লাভ:
উল্লেখ্য যে, আবহমানকাল থেকে ভারত উপমহাদেশের সূফী-মাশায়িখ তথা তরীক্বতপন্থীগণের মাঝে এ কথা প্রচারিত রয়েছে যে, রিয়াজত-মাশাক্কাত তথা চেষ্টা-কোশেশের পথে তাকমিলে (পূর্ণতায়) পৌঁছার জন্য সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অনুমোদন প্রয়োজন। উনার অনুমোদন বা সত্যায়ন ব্যতীত কেউ কামিল বা পূর্ণতায় পৌঁছেছেন বলে গণ্য করেন না। পক্ষান্তরে যারা বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেয়নি বা অস্বীকার করেছে, তারা বিলায়েতহারা অবস্থায় দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে।
অপর একটি বর্ণনা রয়েছে, তিনি খিলাফত মুবারক লাভ করতঃ চিন্তিত হয়ে পড়লেন যে, ভারতবর্ষে কিভাবে যাবেন। কোনো পথ-ঘাট জানা ছিল না। এমতাবস্থায় স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র যিয়ারত মুবারক লাভ হলো। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, মুঈনুদ্দীন! আপনি চিন্তিত কেন? তিনি আবেদন করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার তো কোনো পথ-ঘাট জানা নেই। তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি মুরাকাবায় বসুন। তিনি মুরাকাবায় বসলেন। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ভারতবর্ষে যাওয়ার সমস্ত রাস্তা-ঘাট সবকিছু দেখিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! মাটির একটি টুকরা উনার হাত মুবারকে দিয়ে বললেন, এই মাটির টুকরাটি যে মাটির সাথে মিলে যাবে সেটাই হবে আপনার অবস্থানস্থল। আজমীর শরীফের মাটির সাথে সেই মাটির টুকরা মুবারক মিলে যায়। তাই তিনি উনার অবস্থানস্থল আজমীর শরীফকে নির্দিষ্ট করে নেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে ভারত উপমহাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দয়া-দান, ইহসান ও নির্দেশ মুবারক পেয়ে সুলত্বানুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে ভারত উপমহাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। পথিমধ্যে বাগদাদ শরীফে বিরতি করলেন। সেখানে স্বীয় শায়েখ ইমামুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছোহবত মুবারকে ২৮ দিন অবস্থান করলেন। সে সময় তিনি বাগদাদ শরীফে অবস্থান করছিলেন। তিনি সুলত্বানুল হিন্দ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি ই’তিকাফ করবো। বাইরে বের হবো না। কেউ যেন আমার কাছে না আসে। তবে প্রতিদিন চাশতের সময় আপনি আমার এখানে আসবেন। আপনাকে বিশেষ কিছু কথা বলবো, যা আমার অবর্তমানে আপনার কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রতিদিন যথাসময়ে উনার মুবারক খিদমতে উপস্থিত হতেন। আর উনার যবান মুবারক থেকে যা বলতেন, তিনি তা লিখে রাখতেন। এভাবে ২৮টি মজলিসের অমীয় বাণী মুবারক জমা করেছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার মেহেরবানীতে তার নামকরণ করেছেন- “আনীসুল আরওয়াহ”
পরে ইমামুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্বদমবুছী করতঃ দোয়া নিলেন। হারূনী আরিফীন, ফকীহুল মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহিসহ কতিপয় দরবেশ সাথে নিয়ে বাগদাদ শরীফ থেকে ভারত উপমহাদেশের উদ্দেশ্য রওয়ানা করলেন। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যে সমস্ত নামধারী আলিমরা শাসকদের দরবারে আসা-যাওয়া করে তারাই উলামায়ে সূ এবং সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব (১)
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৭)
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কথিত স্বজন-পরিজন হলেও কাফিরদেরকে বন্ধু বা অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৭)
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৫)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে নিজে পর্দা করে না ও অধীনস্তদের পর্দা করায় না সে দাইয়ুস
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত তৃতীয় কোনো লিঙ্গের অস্থিত্ব নেই (২)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)