সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৯ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ১৬ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ০২ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
জয়পাল বা অজয়পালের
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ:
উল্লেখ্য যে হিন্দুদের মধ্যে যারা যোগসাধন করে তাদেরকে বলা হয় যোগী। জয়পাল ছিলো যোগী রাজ। সবাই তাকে গুরু মানতো। কেউ কেউ তাকে অজয়পাল বলেও সম্বোধন করেছে।
সব শুনে জয়পাল পৃথ্বিরাজকে আশ্বস্ত করে বললো, তুমি চিন্তা করো না। আমি মুসলমান সূফী সাধকগণকে ভারতবর্ষ থেকে বিতাড়িত করার সকল ব্যবস্থা যথাযথভাবে করবো।
তবে একটি কাজ করলে ভালো হতো। যদি রাজ্যের সমস্ত লোক মুসলমানগণের পরাজয়ের এ দৃশ্য স্বচক্ষে দেখতে পায় তাহলে কেউ কখনো আর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করতো না। কাজেই সকল লোককে সমবেত করা উচিত। প্রস্তাবটি পৃথ্বিরাজের পছন্দ হলো। সে রাজ্যের সমস্ত লোককে সেদিন উপস্থিত থাকার নির্দেশ জারি করলো।
নির্দিষ্ট দিনে যথাসময়ে সমস্ত লোকজন হাজির হলো। জয়পাল তার যাদুর কার্যক্রম শুরু করলো।
প্রথমে সে তারাগড় পাহাড়ের উপর থেকে বিশাল বিশাল পাথরের ছাইগুলোকে সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র খানকা শরীফ উনার উপর চালান দিলো। সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পবিত্র হাত মুবারকের ইশারা দিলেন। আর সাথে সাথে সেগুলো সরে গিয়ে পরিষ্কার হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ!
এ দৃশ্য দেখে পৃথ্বিরাজ জয়পালকে বললো, যোগীরাজ! এটা কেমন হলো? জয়পাল বললো, ভাবনার কোন কারণ নেই। এটা তো কেবল মাত্র শুরু।
তারপর জয়পাল অগ্নিবান নিক্ষেপ করলো। অগ্নিবানগুলো সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র খানকা শরীফ উনার নিকবর্তী হওয়ার সাথে সাথে নিভে গিয়ে মাটির সাথে মিশে গেল। সুবহানাল্লাহ!
জয়পাল ব্যর্থ হয়ে আবারো যাদু মন্ত্র পাঠ করতে লাগলো। এবার অনেকগুলো অজগর সাপ দৃষ্টিগোচর হলো। সে সাপগুলোকে নির্দেশ দিলো, তোমরা সকলে একযোগে গিয়ে সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র খানকা শরীফ আক্রমণ করো। সাপগুলো অগ্রসর হলো। কিন্তু পবিত্র খানকা শরীফের নিকটবর্তী হতেই মাথা নিচু করলো। অতঃপর অদৃশ্য হয়ে গেল।
জয়পাল সবাইকে আশ্বস্ত করে বললো, তোমরা কেউ নিরাশ হবে না। আমি স্থল পথ ছেড়ে আকাশ পথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবো। সকলের দৃষ্টি এখন আকাশের দিকে। আকাশ যুদ্ধে জয়পাল আকাশে গমন করলো। আর হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে যাদু মন্ত্র পাঠ করতে লাগলো। সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র খানকা শরীফের দিকে চক্রবান, অগ্নিবান নিক্ষেপ করলো।
একটার পর একটা অগ্নি গোলক পবিত্র খানকা শরীফ উনার দিকে ছুটে আসছে। আর পবিত্র খানকা শরীফ উনার নিকটবর্তী হওয়ার সাথে সাথে সব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জয়পাল এখন হতাশ। কিংকর্তব্যবিমূঢ়। পরাজিত হয়ে এক পর্যায়ে আকাশ পথে ভাসতে ভাসতে পালাতে বাধ্য হলো। সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তখন উনার না’লাইন শরীফ বা সেন্ডেল মুবারক জয়পালের উদ্দেশ্যে নিক্ষেপ করলেন। উনার নিক্ষিপ্ত না’লাইন মুবারক গিয়ে জয়পালকে আঘাত করতে লাগলো। এক পর্যায়ে জয়পালকে সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্বদম মুবারকে লুটে পড়লো। যোগীরাজ জয়পাল সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্বদম মুবারক জড়িয়ে ধরে অঝোর নয়নে কাঁদতে লাগলো। কৃতকর্মের জন্য বার বার ক্ষমা প্রার্থনা করলো। হিন্দু ধর্ম পরিত্যাগ করতঃ মুসলমান হওয়ার জন্য আকুতি মিনতি করলো। বললো সম্মানিত দ্বীন ইসলামই হচ্ছে প্রকৃত ও সত্য ও সম্মানিত দ্বীন-ধর্ম। এছাড়া সবই মিথ্যা, অলীক, কল্পনাপ্রসূত, মনগড়া ও অসার।
সুলতানুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পবিত্র হাত মুবারক বাড়িয়ে দিলেন। জয়পাল কালিমা শরীফ পাঠ করে খালিছ মুসলমান হলো। মুসলমান হওয়ার পর তিনি উনার নাম মুবারক রাখলেন আব্দুল্লাহ। উত্তরকালে উনার সেই নাম মুবারকের সাথে বিয়াবানি শব্দ মুবারক সংযোজিত হয়। তিনি আব্দুল্লাহ বিয়াবানি নামে পরিচিতি লাভ করেন। এ দৃশ্য দেখে জয়পালের সাথে আসা শিষ্যরাও সকলে তওবা ইস্তিগফার করতঃ বাইয়াত হয়ে মুসলমান হয়ে গেলো। তারপর থেকে প্রতিদিন দলে দলে লোক কুতুবুল মাশায়িখ, সুলতানুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য আসতে লাগলো। সকলেই বাইয়াত গ্রহণ করতঃ মুসলমান হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! সে নব মুসলিম যাদের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












