সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৬)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ২২শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৬ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ০৯ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণে পৃথ্বিরাজকে দাওয়াত:
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র হাত মুবারকে শাদীদেব, অজয় পালসহ হিন্দুদের গন্য-মান্য অনেক লোক সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করলো। এবার তিনি পৃথ্বিরাজকে আনুষ্ঠানিকভাবে দাওয়াত দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। তাই তিনি পৃথ্বিরাজকে বলে পাঠালেন, পৃথ্বিরাজ! তুমি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মহানুভবতা, শক্তিমত্তা ও নিদর্শনরাজী স্বচক্ষে দেখেছো।
দ্বীন ইসলামই মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত দ্বীন। উনার দ্বারা পূর্ববর্তী সকল ধর্ম যেমন রহিত হয়েছে তেমনি অন্যান্যগুলো মনগড়া ও অসাড় বলে পরিগণিত হয়েছে।
কাজেই তুমি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করো। ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জীবনে কামিয়াব হবে। তোমার বাদশাহীও থাকবে। আর তুমি পরকালে সম্মানিত জান্নাতে অবস্থান করতে পারবে। অন্যথায় তোমার জন্য রয়েছে কঠিন বিপদ সামনে অপেক্ষমান। একদিকে যেমন রাজ্যহারা হবে। অপরদিকে পরকালীন কঠিন আযাব-গযবের সম্মুখীন হবে। যা বরদাশত করা তোমার পক্ষে কখনো সম্ভব হবে না।
পৃথ্বিরাজ সবকিছু হারিয়ে মর্মাহত হয়ে পড়েছে। ফলে কুতুবুল মাশায়িখ, সুলত্বানুল হিন্দ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং উনার মুরীদ-মু’তাকিদগণের প্রতি বিদ্বেষভাব আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। সে নতুন মুসলমানগণের উপর কঠিন জুলুম নির্যাতন আরম্ভ করেছে। বিশেষ করে তার সভাসদদের মধ্যে একজন লোক ছিলেন। যিনি সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ ছিলেন। উনাকে শারীরিক ও মানসিক অমানবিক কষ্ট দেয়া শুরু করলো। এক পর্যায়ে সেই মুরীদ তিনি তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন, হুযূর! বেয়াদবী ক্ষমা চাই। আপনি পৃথ্বিরাজকে একটু বলুন, সে যেন আমাদের প্রতি অত্যাচার বন্ধ করে দেয়। সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পৃথ্বিরাজকে বলে পাঠালেন যে, মুসলমানগণের উপর অত্যাচার বন্ধ করো। তাদের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকো। অন্যথায় তোমাকে কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে।
পৃথ্বিরাজ এ হুকুমের কোন গুরুত্ব দিলো না। বরং অত্যাচারের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিলো। নাউযুবিল্লাহ! সাথে সাথে রাজ্যে এ আদেশ জারি করলো যে, এদেশ ও মাটি আমার। আমি এ দেশের রাজা ও মালিক। অতএব, আমি আদেশ দিচ্ছি যে, আপনি এক সপ্তাহের মধ্যে মুরীদ- মু’তাকিদগণকে নিয়ে এ দেশ ত্যাগ করে চলে যাবেন। নতুবা আমি সব মুসলমানকে শহীদ করবো। নাউযুবিল্লাহ!
কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পৃথ্বিরাজের স্পর্ধা দেখে আশ্চর্য হলেন। তিনি পৃথ্বিরাজের বাহককে একটি চিরকুট দিলেন, যাতে লিখলেন-
من ترا زندہ بدست لشکر اسلام بسپردم
অর্থ: আমি তোমাকে জীবিত অবস্থায় মুসলমান সৈন্যদের হাতে সোপর্দ করলাম। (ইসরারুল আউলিয়া ৫৫, সিয়ারুল আউলিয়া ৪৯, ফাওয়ায়িদুস সালিকীন ১১১, মালফুযাতে খাজেগানে চিশত ১১২)
শিহাবুদ্দীন ঘুরীকে সুসংবাদ দান:
সুলতান শিহাবুদ্দীন ঘুরী সে সময় তার নিজ দেশ খোরাসানে অবস্থান করছিলেন। ৫৮৮ হিজরীর মুহররমুল হারাম শরীফ মাস। সেদিন ছিল ইয়াওমুল খমিস (বৃহস্পতিবার)। শিহাবুদ্দীন ঘুরী তিনি স্বপ্নে দেখতে পেলেন যে, নূরে নূরানী একজন মহান ব্যক্তিত্ব। তিনি বলছেন, হে শিহাবুদ্দীন! মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাকে হিন্দুস্থানের রাজত্ব দান করেছেন। তুমি জেগে উঠো। হিন্দুস্থানের পথে রওয়ানা হও। অহংকারী ও অবাধ্য রাজা পৃথ্বিরাজকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করে সমুচিত শাস্তি দাও। একথা বলে তিনি মানষপট থেকে সরে গেলেন।
সাথে সাথে উনার ঘুম ভেঙ্গে গেল। এখনও উনার কানে একই আওয়াজ ভেসে আসছে উঠো এবং হিন্দুস্থানের পথে চলো। বিজয় তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। সকালে উনার সভাসদ সবাইকে ডাকলেন। স্বপ্নের কথা খুলে বললেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করতে বললেন। তারা সবাই এক বাক্যে স্বীকার করলেন যে, ইহা একজন বুযূর্গ ব্যক্তির সুসংবাদ। কাজেই, অবশ্যই এর মধ্যে দোয়া, কল্যাণ ও বিজয় নিহিত রয়েছে। আপনাকে এই সুসংবাদের মূল্যায়ন করা উচিত। আপনি হিন্দুস্থান বিজয়ের দিকে মনোনিবেশ করুন। (ছিয়ারুল আউলিয়া, হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি পূর্ণাঙ্গ জীবনী-১৬১) (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (৩)
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হক্ব তালাশীদের জন্য সার্বিক দিক-নির্দেশনা রয়েছে পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ উনার মধ্যেই
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (২)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযীমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (১০)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (১)
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)