সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৫১)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ২৭ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ১৩ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছোহবত মুবারকের তা’ছীর বা প্রভাব:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ رَحْمَتَ اللهِ قَرِيْبٌ مِّنَ الْمُحْسِنِيْنَ
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুহসিন তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের নিকটে। (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِنَّ اللهَ لَمَعَ الْمُحْسِنِيْنَ
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি মুহসিন তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের সাথেই আছেন। (পবিত্র সূরা আনকাবুত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৯)
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রহমত, বরকত, সাকীনাহ, দয়া-দান, ইহসান মুবারক ওলীআল্লাহগণ উনাদের উপর সদা বর্ষিত হয়। কাজেই ওলীআল্লাহগণ উনাদের সাথে বসা, নিকটবর্তী হওয়া, সেটা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথেই বসা ও নিকটবর্তী হওয়ার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উনাদের ছোহবত মুবারকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারকের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়।
মূলত উনারা হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া স্বরূপ।
যার বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে সুলত্বানুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জীবনী মুবারকে। সুবহানাল্লাহ! উনার ছোহবত মুবারক উনার তা’ছীর বা প্রভাব ছিল অসাধারণ। উনার পবিত্রতম ছোহবত মুবারকে যারাই এসেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকেই খাছভাবে কবুল করেছেন। উনার পবিত্রতম ছোহবত মুবারকের বদৌলতে প্রায় এক কোটি লোক পৌত্তলিকতার অসারতা উপলব্ধি করতে পেরে পৌত্তলিকতা ত্যাগ করেছে। পরে তারা মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খালিছ বান্দা ও উম্মতে পরিণত হয়েছে। উনার পবিত্রতম ছোহবত মুবারকের তা’ছীর বা প্রভাব কত প্রভাবশালী প্রতিক্রিয়াশীল ছিলো সে সম্পর্কে দু একটি ঘটনা আলোচ্য নিবন্ধে উল্লেখ করবো। ইনশাআল্লাহ!
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রাথমিক জীবনে দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত ছিলেন। তিনি এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন যে, কেউ কোনদিন ভাবতেও পারেনি যে, তিনি দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে ছূফীদের ন্যায় জীবন যাপন করতে পারবেন।
আজমীর শরীফ হতে কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত নাগুরাবাদ শহর। সেই শহরের অনতি দূরে ছওয়ালী নামক স্থানে বসবাস করতেন ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
উনার আর্থিক অবস্থা ছিল খুুবই খারাপ। অনেক দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করতেন। কিন্তু তিনি ছিলেন খুব ছূরত মুবারকের অধিকারী। কেউ উনার দিকে একবার দৃষ্টি দিলে সহজে দৃষ্টি ফিরাতে পারতো না। এমনকি অনেকেই উনার আশিক হয়ে যেত। উনাকে পাওয়ার জন্য অভিজাত-সম্ভ্রান্ত ও ধনাঢ্য মেয়েরাও তাদের ধন-সম্পদ, ছূরত-সীরত সবকিছু বিসর্জন দিতে দ্বিধা করতো না।
আর তিনিও বাধ্য হয়েই তাদের মুহব্বতে গরক ছিলেন। সেই মুহব্বতের বেড়াজালে এমনভাবে আবদ্ধ ছিলেন যে, সেখান থেকে মুক্তির কোন পথই ছিল না।
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কারামতের কথা লোক মুখে শুনতে পেয়েছেন অনেকবার। তাই একদিন উনাকে স্বচক্ষে দেখার ইচ্ছা জাগ্রত হলো। তিনি আজমীর শরীফ চলে গেলেন। মুবারক সাক্ষাত করার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করলেন। অনুমতি দেয়া হলো। তিনি পবিত্র খানকা শরীফ উনার ভিতরে প্রবেশ করলেন।
তিনি সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নূরানী চেহারা মুবারকের তাজাল্লিয়াত সহ্য করতে পারলেন না। বেহুশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন।
বেশকিছু সময় এভাবে অতিবাহিত হলো। যখন হুশ ফিরলো তখন তিনি আবেদন করলেন, “হুযূর! আমাকে গোলামীর সনদ দান করুন। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক দান করুন। ” এমন আদব-ইহতিরাম, মুহব্বত ও বিনয়ের সাথে কথাগুলো বলছিলেন যে, উপস্থিত যারা ছিলেন সবাই উনার প্রতি দয়া পরবশ হলেন। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উলামায়ে সূ’ ধর্ম ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ও হাক্বীক্বত (৯)
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশি বেশি মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশি বেশি পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩৪)
২১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন রোগই ছোঁয়াচে নয়, ছোঁয়াচে বিশ্বাস করা কুফরী
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩৩)
২০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত শি‘য়ার বা নিদর্শন মুবারকসমূহ পালন করা, তা’যীম করা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে অবমাননাকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৭)
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা কবীরা গুনাহ ও অসন্তুষ্টির কারণ
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)