সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৫২)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ৫ই রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৭ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ৬ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৯ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছোহবত মুবারকের তা’ছীর বা প্রভাব:
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জওয়াবে ইরশাদ মুবারক করলেন, প্রথমে তোমার অন্তর রাজ্য থেকে গাইরুল্লাহর মুহব্বত দূর করো। যেখানে শত শত মেয়েদের মুহব্বতের বাসা সেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইশক-মুহব্বত প্রবেশ করবে কিভাবে? মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেতে হলে সবকিছুকেই বিসর্জন দিতে হবে। কারো মুহব্বত বা আকর্ষণ অন্তরে থাকতে পারবে না। অন্তরকে একেবারে খালি করতে হবে। ”
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আপনার পবিত্রতম চেহারা মুবারক দেখার সাথে সাথে আমার অন্তর রাজ্য থেকে সবকিছুর আকর্ষণ দূর হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
আপনার মুহব্বত মুবারক ব্যতিত আর কোনো মুহব্বতই অনুভূত হচ্ছে না। অন্তর থেকে সবকিছুই উধাও হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার অবস্থা দেখে উনার প্রতি দয়াদ্র হলেন। উনার কথা শুনে আরো খুশি হলেন। উনাকে বাইয়াত করালেন এবং নিজের মুরীদের দলভুক্ত করে নিলেন। সুবহানাল্লাহ!
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তওবা করতঃ বাইয়াত হয়েছেন। একথা উনার বন্ধু মহলে বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়লো। বন্ধু-বান্ধব তারা সবাই উনার দিকে ছুটে আসলো। আর উনাকে পূর্ব পাপ পথে ফিরে আসার জন্য উৎসাহ ও উদ্দীপনা দিতে লাগলো। তিনি ঘৃণাভরে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করলেন। বললেন, আমি দুনিয়ার দিকে ফিরে যাওয়ার সব পথ ভুলে গেছি। এখন জান্নাতী ‘হূর’ও যদি আমার সামনে নাচতে থাকে তবুও আমি তোমাদের পথে ফিরে যেতে পারবো না। সুবহানাল্লাহ!
যখন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারকের সন্ধান পাইনি, তখন তোমাদের পথে হেটেছি। আর মহাপবিত্র মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারকের সন্ধান পাওয়ার পর ওগুলোকে আজ তুচ্ছ ও নগন্য মনে হচ্ছে।
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি পরবর্তী জীবনে অনেক বড় ওলীআল্লাহ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। মানুষ উনাকে শায়খুল মাশায়িখ এবং সুলত্বানুল আরিফীন লক্বব মুবারক দ্বারা স্মরণ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ পূর্ণাঙ্গ জীবনী-১৮০)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশে শাদী মুবারক সুসম্পন্ন:
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বয়স মুবারক তখন ৯০ বছর। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দেয়ার কাজে নিবেদিত। যার ফলে তখনও শাদী মুবারক করার সুযোগ হয়নি। তাছাড়া তিনি তো প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক ব্যতীত কোন কাজ করেন না।
একদিন একটি মুবারক স্বপ্ন দেখতে পেলেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে মুঈনুদ্দীন! সত্যি আপনি আমার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সাহায্যকারী। সম্মানিত দ্বীন উনার ধারক বাহক। সুবহানাল্লাহ!
আপনি আমার বিলুপ্ত প্রায় সমস্ত সুন্নত মুবারক উনার যিন্দাকারী। সুবহানাল্লাহ! আপনি আমার সকল সুন্নত মুবারকই পালন করেছেন বটে। কিন্তু এখনো একটি সুন্নত মুবারক আদায় করা বাকী রয়েছে।
ঘুম ভেঙ্গে গেল। তিনি জাগ্রত হয়ে চিন্তা করতে লাগলেন, কোন সেই সুন্নত মুবারক আদায় করা এখনো বাকী রয়েছে? চিন্তা-ফিকিরের এক পর্যায়ে পবিত্র মানসপটে ভেসে আসলো, নব্বই বছর বয়স মুবারক হয়েছে। বিবাহ করা হয়নি। নিকাহ বা বিবাহ করা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক। এই মুবারক স্বপ্ন দেখার পর তিনি পর পর দুইটি শাদী বা বিবাহ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, যে রাতে সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বপ্নযোগে শাদী বা বিবাহ মুবারক করার নির্দেশ মুবারক পেলেন। পরের দিনই কুদরতীভাবে উনার নিকট কনে এসে হাজির হলেন। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রথম আহলিয়া ছিলেন একজন রাজকন্যা। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












