সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৫৩)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ১২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৪ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ২৬ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশে শাদী মুবারক সুসম্পন্ন:
দাড়গরের শাসক, সূফী সাধকগণের প্রভাব-প্রতিপত্তি মেনে নিতে পারেনি। তাই সে মাঝে মধ্যে মুসলমানগণের উপর চোরা গুপ্তা হত্যা চালায়। মুসলমানগণের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্ষতি সাধন করে। দাড়গরের পাশে ছিলো মুসলমানগণের সেনা ছাউনী। সেই সেনা ছাউনীর প্রধান ছিলেন মালিক খত্তাব হাকিম রহমতুল্লাহি আলাইহি। সঙ্গত কারণেই উনার নেতৃত্বে দাড়গড়ের শাসকের বিরুদ্ধে একটি জিহাদ পরিচালিত হয়। সেই যুদ্ধে দাড়গড়ের শাসক পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়। অনেক ধনসম্পদ মুসলমানগণের হস্তগত হয়। সেই সাথে শাসকের অনন্যা ও খুব ছুরত কন্যাও বন্দী হয়।
হযরত মালিক খত্তাব হাকিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশিষ্ট মুরীদ ও আশিক। তিনি উক্ত রাজ কন্যাকে সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফে হাজির করলেন। বললেন যে, হুযূর! বেয়াদবী ক্ষমা চাই। ইনি দাড়গড়ের শাসকের কন্যা। আমার এক সেনা উনাকে বন্দী করে আমার হাতে সোপর্দ করেছেন। আমি আপনার মুবারক খিদমতের জন্য আপনাকে হাদিয়া পেশ করছি।
এ দিকে সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র চেহারা মুবারক দেখে রাজকন্যা বিস্ময়ে অভিভূত হন। তাছাড়া সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একপলকের দৃষ্টিতে রাজকন্যার অন্তরের সকল মলিনতা ও আবিলতা দূরীভূত হয়ে দুনিয়ার মোহ হতে মুক্তি লাভ করলেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মালিক! উনাকে বন্দী জীবন থেকে মুক্তি দান করুন। উনাকে নিজ ঘরে ফিরে গিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করার সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
রাজকন্যা বললেন, হুযূর! বেয়াদবী ক্ষমা চাই আমি আর স্বদেশে ফিরে যাবো না। আমি আজীবন হুযূর মহোদয় উনার খিদমত মুবারকে জীবন উৎসর্গ করবো।
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি রাজকন্যার আদব-শরাফত, আক্বল-সমঝ, বুদ্ধিমত্তা ও ইস্তিক্বামত বা দৃঢ়তা দেখে অত্যন্ত খুশি হলেন। অসংখ্য ছূফীগণের উপস্থিতিতে শাদী মুবারক সুসম্পন্ন হলো। তিনি উনাকে আমাতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা তথা মহান আল্লাহ পাক উনার খাদিমা নামে নামকরণ করলেন। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দ্বিতীয় আহলিয়া বা স্ত্রীর নাম মুবারক ইসমাতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা তথা মহান আল্লাহ পাক উনার নিস্কলুস বান্দী। সুবহানাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দ্বিতীয় আহলিয়া বা স্ত্রী উনার নাম মুবারক হযরত ইছমাতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা
عِصْمَةُ الله (ইছমাতুল্লাহ) অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার নিস্কলুস বান্দী। হযরত সাইয়্যিদ হাসান মাশহুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি আজমীর শরীফের প্রধান শাসক ছিলেন। তিনি ভীম রাজের সাথে যুদ্ধে শহীদ হন। ভীম রাজ নতুন হিন্দু রাজা হিসেবে সিংহাসনে আরোহন করে। অল্প কিছু দিন পরেই কুতুবুদ্দীন আইবেকের সাথে তার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে ভীমরাজ পরাজিত ও নিহত হয়। আজমীর শরীফ পুনরায় মুসলমানগণের অধীনে আসে। নতুন শাসক হিসেবে মনোনীত হন সাইয়্যিদ হাসান মাশহুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চাচা সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন মাশহুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন মাশহুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিবাহযোগ্য একজন কন্যা ছিলেন। উনার নাম মুবারক সাইয়্যিদা বিবি ইসমাতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা। সীরত-ছূরত মুবারকে তিনি ছিলেন অনন্যা। উনার বয়স মুবারক হয়েছে অনেক। কিন্তু উনার যোগ্য কোন পাত্র না পাওয়ার কারণে পাত্রস্থ করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কিছুটা চিন্তিত ছিলেন।
একদিন রাতে তিনি স্বপ্নে দেখেন- ইমামুল মুহাক্কিকীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জাফর ছাদিক আলাইহিস সালাম উনাকে। তিনি উনাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার বংশধর, সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক হচ্ছে যে, আপনি আপনার এই আওলাদ বা সন্তানকে সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে বিবাহ দিন। ”
হযরত সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বপ্ন দেখার পর সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফে হাজির হলেন। স্বপ্নটির কথা উনার খিদমত মুবারকে পেশ করেন। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












