সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬০)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ১৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে হযরত খাজা গরীব নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি চিশতীয়া খান্দানের পরবর্তী শাহানশাহ মনোনীত করে গদীনশীন করা:
এ বিষয়ে হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বীয় গ্রন্থ “দলীলুল আরেফীন” কিতাবের মধ্যে বলেছেন, ইয়াওমুল খমীস (বৃহস্পতিবার), স্থান আজমীর শরীফ জামে মসজিদ। আমি অধম সুলত্বানুল হিন্দ, হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত ক্বদম মুবারকে চুম্বন করলাম। এটি ছিলো হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে আমার শেষ মজলিস।
মজলিসে উপস্থিত ছিলেন, উনার বন্ধু বান্ধব, আপনজন, সূফি দরবেশ এবং বহু বুযূর্গ ব্যক্তিগণ। আলোচনা শুরু হলো; “মালাকুল মউত” (হযরত আযরাইল আলাইহিস সালাম) সম্মন্ধে। সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত দুনিয়ার মূল্য এক কড়িও নেই।
উপস্থিত দরবেশ উনাদের মধ্য হতে একজন বললেন, “হুযূর! বিষয়টি আমাদের বোধগম্য হলো না”। হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَلْـمَوْتُ جَسَرٌ يُـوْصِلُ الْـحَبِيْبَ إِلَى الْحَبِيْبِ
অর্থ: মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মৃত্যু একটি সেতু তুল্য যার উপর দিয়ে বন্ধু বন্ধুর নিকট গমন করে।
এরপর বললেন, বন্ধুত্ব তাকেই বলা হয়, যে বন্ধুকে অন্তরের মধ্যে গেঁথে রাখে। শুধুমাত্র মুখে বন্ধু বললে বন্ধুত্ব হয় না। বন্ধুত্বকে এমনভাবে সাজিয়ে রাখতে হবে যেন মুখে অন্য কারও কথা না আসে। এরপর বললেন, ক্বলব বা অন্তর ঐ জন্যই সৃষ্টি হয়েছে যেন সে আরশের চতুর্দিকে তাওয়াফ করে এবং করতে পারে। এরপর পেয়ে যান “মুহব্বত”।
কিতাবে বর্ণিত আছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার বান্দা! যখন আমার পবিত্র যিকির তোমাদেরকে বিমোহিত করে এবং তোমাদের অন্তর মনকে প্রভাবান্বিত করে তখন আমি তোমাদের আশিক হয়ে যাই। অর্থাৎ তোমার সঙ্গে আমার মুহব্বত হয়ে যায়। এরপর বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার আরিফগণ উনাদেরকে সূর্যের সঙ্গে তুলনা করা হয়। সমস্ত জগতের উপর উনাদের উজ্জ্বল্যের আলো নিপতিত হয় এবং সেই আলোতে মহান আল্লাহ পাক উনার আশিক বান্দাগণ আলোকিত হন।
আর অন্যান্য সৃষ্টিগণ সেই খুশবুতে মাতোয়ারা হয়। এ বয়ান বর্ণনা করার পর তিনি কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, আমাকে এ স্থানে এ জন্য আনা হয়েছে যেন আমি এখানেই সমাহিত হই। আশা করি আমি কিছুদিনের মধ্যেই মহান আল্লাহ পাক উনার দীদার মুবারকে চলে যাবো।
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাতিব, শায়েখ আলী সনজরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি উনাকে আদেশ মুবারক করলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে আদেশনামা লিখুন। আমি উনাকে খাজেগানে চীশতিয়ার খিলাফত (প্রতিনিধিত্ব) ও সাজ্জাদাহ (বুযুর্গীর আসন) দান করলাম। তিনি এটা প্রাপ্তির পর দিল্লী চলে যাবেন।
আমার সম্মানিত শায়েখ, সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমাকে বললেন, আপনার হিদায়েতের কেন্দ্রস্থল দিল্লী। আপনি সেখানে গিয়ে সম্মানিত তরীকার শাসনকার্য পরিচালনা করবেন। অতঃপর যখন “খিলাফত নামা” লিখা শেষ হলো, তখন আমাকে সেটা দান করলেন।
আমি সম্মানিত শায়েখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শুকরিয়া আদায় করলাম। তিনি নির্দেশ মুবারক করলেন, সামনে আসুন। আমি একেবারে উনার কাছাকাছি চলে গেলাম। তিনি উনার পবিত্র হাত মুবারক দ্বারা নিজের পাগড়ী মুবারক মাথা হতে খুলে আমার মাথায় পরিয়ে দিলেন। হযরত খাজা উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পক্ষ থেকে হাদিয়াকৃত লাঠি মুবারক, জায়নামায মুবারক ও উনার নিজের হাত মুবারকে লিখিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ আমায় দান করে বললেন, এসবই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আমানত। যা খাজেগানে চীশতের মাধ্যমে আমি লাভ করেছিলাম।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












