সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল,
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (২১)
, ২২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৯ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ০৫ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
জন্মান্ধ ও মাজুর ছেলের আরোগ্য লাভ:
একটি লম্বা দস্তরখানা বিছানো হলো, যার উপর বিভিন্ন খাবার রাখা হলো। ঢাকনা দেয়া একটি বড় পাত্রও দস্তরখানার এক কিনারে রাখা হলো। অতঃপর দাওয়াতকারী আবু গালেব ফজলুল্লাহ বিন ইসমাইল বললেন, ‘খাওয়া শুরু করতে পারেন। সাইয়্যিদুল আউলিয়া, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মাথা মুবারক অবনত করে রাখলেন। তিনি নিজেও খেলেন না এবং অন্যদেরকেও খেতে বললেন না। সবাই একেবারে নিশ্চুপ বসে রইলেন।
কিছুক্ষণ পর তিনি আমাকে ও আলী হায়তী উনাকে সেই ঢাকনা দেয়া বড় পাত্রটি উনার সামনে নিয়ে আসার জন্য বললেন। আমরা গিয়ে পাত্রটি নিয়ে আসলাম। যদিও বা পাত্রটি খুবই ভারি ছিলো। আমরা পাত্রটি উনার সামনে আনলাম এবং উনার নির্দেশে ঢাকনা খুললাম। ঢাকনা খুলে দেখি, সেখানে এক জন্মান্ধ ও অর্ধাঙ্গগ্রস্ত কুড়ে ছেলে। ছেলেটি ছিলো ছাহিবে মেজবান আবু গালেব ফজলুল্লাহ বিন ইসমাইল উনার।
হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছেলেটির দিকে লক্ষ্য করে বললেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে উঠো। ’ ছেলেটি তখনি চোখ খুলে চারদিকে দেখতে লাগলো এবং তার শরীরে কোন রোগের লক্ষণ পরিলক্ষিত হলো না। সুবহানাল্লাহ! এ অবস্থা দেখে উপস্থিত সকলে বিস্মিত হয়ে গেলেন এবং চারদিকে হৈচৈ পড়ে গেলো। এ হৈচৈ এর মধ্যে হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন এবং কিছু খেলেন না।
আমি শায়েখ হযরত আবু সাঈদ কায়লবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে গিয়ে এ ঘটনা বর্ণনা করলাম। তিনি আমার কথা শুনে বললেন, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুমে অন্ধদেরকে দৃষ্টি দান, কুষ্ঠ রোগীদেরকে আরোগ্য দান এবং মৃতদেরকে জীবিত করতে পারেন। (যুবদাতুল আছার)
শরাব সিরকায় পরিণত হলো:
গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছাহিবজাদা কুতুবুল মাশায়িখ, হযরত আব্দুর রাযযাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আমার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউছুল আ’যম, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন জুমুয়া উনার নামায পড়ার জন্য বের হলেন।
আমি এবং আমার আরো দুই ভাই হযরত আব্দুল ওহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ঈসা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে ছিলাম। পথিমথ্যে বাদশাহর তিনটি শরাবের পাত্র আমাদের নিকট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। উহার দুর্গন্ধ এত অধিক মাত্রায় বের হচ্ছিলো যে, সহ্য করা যাচ্ছিলো না। তাদের সাথে রাজ কর্মচারীরাও ছিলো।
গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাদেরকে দাঁড়াতে বললেন। কিন্তু তারা উনার মুবারক কথায় কান দিলো না। বরং শরাব বহনকারী চতুষ্পদ জন্তুগুলোকে আরো জোরে হাঁকিয়ে নিয়ে যেতে লাগলো। তখন গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত চতুষ্পদ জন্তুগুলোকে থামতে বললেন। সাথে সাথে সেগুলো সে স্থানে অচেতন পদার্থের ন্যায় থেমে গেলো। কর্মচারীরা পশুগুলোকে কঠিনভাবে মারতে লাগলো। কিন্তু সেগুলো তাদের স্ব স্থান ত্যাগ করলো না।
রাজ কর্মচারীরা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়লো। তারা তৎক্ষণাৎ অত্যন্ত বেদনায় অস্থির হয়ে যমীনে গড়াগড়ি করতে লাগলো। পড়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরে কাতর স্বরে তওবা-ইস্তিগফার করলো। গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পায়ে পড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলো। তাদের ব্যথা-বেদনা দূর হলো। আর শরাবের গন্ধ সিরকার গন্ধে পরিবর্তিত হলো। তারা পাত্রগুলো খুলে দেখতে পেলো যে, সবই সিরকায় পরিণত হয়েছে। তখন চতুষ্পদ জন্তুগুলো চলতে শুরু করলো।
লোকেরা তাকবীর ধ্বনি দিতে লাগলো। বাদশাহর কাছে যখন এই সংবাদ পৌঁছলো, তখন বাদশাহ অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে কাঁদতে লাগলো। শরাব পান করাসহ অনেক নাজায়িয হারাম কাজ থেকে তওবা-ইস্তিগফার করলো। আর কোন দিন সেগুলো করবে না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো। (হযরত বড়পীর ছাহিবের জীবনী-৫৮) (অসমাপ্ত)
-আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












