সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
, ১৩ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৬ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
নাজাত (نجاة) আরবী শব্দ। শাব্দিক অর্থ মুক্তি লাভ করা, জান্নাত লাভ করা, রেযামন্দি মুবারক লাভ করা। যে নূর মুবারক লাভের মাধ্যমে মাখলুকাত জাহান্নাম হতে মুক্তি লাভ করে, জান্নাত লাভ করে, চিরস্থায়ী রেযামন্দি হাছিল করে, উনাকে নূরুন নাজাত মুবারক হিসেবে অভিহিত করা হয়। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে যা দম বা রক্ত নামে অভিহিত হয়, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে তা ‘নূরুন নাজাত মুবারক’ নামে সম্বোধন করতে হবে। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن ابن عباس رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْه قال حجم النبي صلى الله عليه وسلم غلام لبعض قريش فلما فرغ من حجامته أخذ الدم فذهب به فشربه ثم أقبل فنظر في وجهه فقال ويحك ما صنعت بالدم قال يا رسول الله نفست على دمك أن أهريقه في الأرض فهو في بطني فقال إذهب فقد أحرزت نفسك من النار
অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরাইশী এক গোলাম নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূতপবিত্র জিসিম মুবারকে শিংগা মুবারক লাগালেন। অতঃপর, তিনি যখন শিংগা মুবারক লাগানোর কাজ হতে অবসর হলেন, তখন (শিংগা মুবারক লাগানোর কারণে প্রকাশিত বিশেষ নূর মুবারক) নিয়ে তিনি চলে গেলেন এবং তা পান করলেন। অতঃপর মুবারক খিদমতে আবার ফিরে আসলেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই ব্যক্তির দিকে তাকালেন এবং বললেন, (শিংগা মুবারক লাগানোর কারণে প্রকাশিত) বিশেষ নূর মুবারক আপনি কি করেছেন? তখন তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার বিশেষ নূর মুবারক আমি বিশেষ জমীনে রেখেছি। আর তা হচ্ছে আমার পেট। অর্থাৎ, তা আমি পান করে ফেলেছি। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই আপনি জাহান্নামের আগুন হতে নিজেকে চিরমুক্ত করলেন। (খ¦ছায়েছুল কুবরা)
অন্য হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عن أبي سعيد رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْه أن أباه مالك بن سنان رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْه لما أصيب رسول الله صلى الله عليه وسلم في وجهه يوم أحد مص دم رسول الله صلى الله عليه وسلم وازدرده فقال له أتشرب الدم ؟ قال أشرب دم رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال النبي صلى الله عليه وسلم من خالط دمي دمه لا يضره الله
অর্থ: হযরত আবূ সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি উনার পিতা হযরত মালেক ইবনে সিনান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে বলেন, উহুদের জিহাদে কাফিরদের ষড়যন্ত্রের কারণে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ নূর মুবারক প্রকাশিত হলে হযরত মালেক ইবনে সিনান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তা চুষে চুষে পান করেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আপনি কি তা পান করছেন? তিনি বলেন, আমি তা পান করছি। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার বিশেষ নূর মুবারক যার রক্তের সাথে মিশ্রিত হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি কখনোই তাকে পাকড়াও করবেন না। অর্থাৎ, তিনি সুনিশ্চিতভাবে নাজাত লাভ করবেন। (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ)
অর্থাৎ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ নূর মুবারক যে বা যারাই লাভ করেছেন, তাদের প্রত্যেকের জন্য নাজাত তথা জান্নাত ওয়াজিব এবং জাহান্নাম হারাম হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ।
অতএব, সাধারণত মানুষ যাকে রক্ত হিসেবে সম্বোধন করে থাকে; নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে তা নূরুন নাজাত মুবারক নামে সম্বোধন করতে হবে।
-আহমদ নুছাইর।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












