সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শারে’ বা সম্মানিত শরীয়ত প্রণেতা (৪)
, ২৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৮ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَاۤ اٰتٰىكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهٰىكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا
‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন তোমরা তা গ্রহণ করো, আকড়ে ধরো। আর যা থেকে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো। ’ (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে একখানা ওয়াক্বেয়া মুবারক বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ عَلْقَمَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ لَعَنَ اللهُ الْوَاشِمَاتِ وَالْمُوْتَشِمَاتِ وَالْمُتَنَمِّصَاتِ وَالْمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ الْمُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللهِ فَبَلَغَ ذَالِكَ امْرَأَةً مِنْ بَنِىْ اَسَدٍ يُقَالُ لَهَا حَضْرَتْ اُمُّ يَعْقُوْبَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهَا فَجَاءَتْ فَقَالَتْ اِنَّه بَلَغَنِىْ عَنْكَ اَنَّكَ لَعَنْتَ كَيْتَ وَكَيْتَ فَقَالَ وَمَا لِىْ اَلْعَنُ مَنْ لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَنْ هُوَ فِىْ كِتَابِ اللهِ فَقَالَتْ لَقَدْ قَرَأْتُ مَا بَيْنَ اللَّوْحَيْنِ فَمَا وَجَدْتُ فِيْهِ مَا تَقُوْلُ قَالَ لَئِنْ كُنْتِ قَرَأْتِيْهِ لَقَدْ وَجَدْتِيْهِ اَمَا قَرَأْتِ [وَمَا آتَكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا] قَالَتْ بَلَى قَالَ فَاِنَّه قَدْ نَهَى عَنْهُ
অর্থ: “বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত আলকামা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ সমস্ত নারীদের উপর লা’নত করেছেন, যারা অন্যের শরীরে উল্কি অংকন করে ও নিজ শরীরে উল্কি অংকন করায় এবং যারা সৌন্দর্যের জন্য ভ্রু-চুল উপড়িয়ে ফেলে ও দাঁতের মাঝে নিজ থেকে ফাঁক সৃষ্টি করে। এসব নারী মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিতে বিকৃতি সাধনকারী। উনার এই কথা মুবারক বনূ আসাদ গোত্রের একজন মহিলা ছাহাবীয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার নিকট পৌঁছলেন। যাঁকে হযরত উম্মে ইয়া’কূব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা বলা হতো। তিনি হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট এসে বললেন, আমি জানতে পেরেছি, আপনি নাকি (যারা অন্যের শরীরে উল্কি অংকন করে ও নিজ শরীরে উল্কি অংকন করায় এবং যারা সৌন্দর্যের জন্য ভ্রু-চুল উপড়িয়ে ফেলে ও দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে। ) এমন মহিলাদের প্রতি লা’নত করেন। হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, আমি কেন এমন লোকদের প্রতি লা’নত করব না, যাদের প্রতি স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি লা’নত করেছেন এবং যাদের কথা মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাবে রয়েছে? মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বললেন, আমি তো দুই ফলকের মাঝে যা আছে অর্থাৎ সম্পূর্ণ কুরআন শরীফ পড়েছি; কিন্তু আপনি যা বলছেন সেটা তো পাইনি। তিনি বললেন, আপনি যদি (ভালোভাবে বুঝে-শুনে) পড়তেন তবে অবশ্যই পেতেন। আপনি কি পড়েননি?
وَمَاۤ اٰتٰىكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهٰىكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا
‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন তোমরা তা গ্রহণ করো, আকড়ে ধরো। আর যা থেকে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো। ’ (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
উক্ত মহিলা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি বললেন, হ্যাঁ পেয়েছি। তখন হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই তো এ থেকে নিষেধ করেছেন। ” (বুখারী শরীফ- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৪৮৮৬, মুসলিম শরীফ- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২১২৫)
এই ওয়াক্বেয়া মুবারক উনার মাধ্যমে হযরত ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার সম্মানিত আয়াত শরীফ দিয়ে দলীল দিয়ে জানিয়ে দিলেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে যেসব বিষয় হালাল-হারাম করেছেন সেগুলোই শুধু হালাল-হারাম নয়। এর বাহিরেও অনেক বিষয় হালাল-হারাম রয়ে গেছে। যা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হালাল-হারাম করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আর এর মাধ্যমেও প্রমাণিত হলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শারে’ বা সম্মানিত শরীয়ত প্রণেতা। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শারে’ বা সম্মানিত শরীয়ত প্রণেতা। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ!
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
একমাত্র হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণে ‘খিলাফত’ ব্যবস্থা জারী করার মাধ্যমেই এদেশবাসী প্রকৃত সুখ-শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে (২)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
এক নজরে উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান বুলন্দী শান মুবারক প্রকাশ: ‘উম্মী’ শব্দ নিয়ে বাতিলপন্থীদের মিথ্যাচারের চূড়ান্ত জবাব (১)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১১)
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
একমাত্র হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণে ‘খিলাফত’ ব্যবস্থা জারী করার মাধ্যমেই এদেশবাসী প্রকৃত সুখ-শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী ক্বিবলা মুবারক
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ (১)
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কাফির মুশরিকদের বিরুদ্ধে যখন আমি বদদো‘আ করি, প্রতিদিন আমি দেখতে পাই যে, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তো আছেনই, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও খুব খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। উনারা বলেন যে, ‘এদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের জন্য আরো দো‘আ করা হোক’
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (২)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (৯)
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত খিলাফত মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া (৪)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা মহান আল্লাহ পাক উনার দায়িমী শান মুবারক (১)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)