সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা সারা কায়িনাত
, ২৮ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৩ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৫ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
ফানা-বাক্বার বেনযীর দৃষ্টান্ত মুবারক-
কাট্টা কাফির কা’ব বিন আশরাফকে হত্যা:
এই ঘটনাটি বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফসহ বিভিন্ন হাদীছ শরীফ, সীরাত, তারীখ ও তাফসীরগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
কাট্টা কাফির কা’ব বিন আশরাফ ছিলো বনী নাযীর গোত্রের কুখ্যাত এক কবি। সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ কবিতা রচনা করতো। বিশেষ করে সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক উনার পর সে আরো বেশি করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ নানা অবমাননাকর ও বেআদবীমূলক কথা-বার্তা বলতে থাকে এবং অশ্লীল-অশালীন কবিতা রচনা করতে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! শুধু তাই নয়; প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে বড় বড় মোড়ে মোড়ে, বাজারে বাজারে লোকজন জমা করে নাচ-গানের আসর করে নর্তকী ও গায়িকাদেরকে নিয়ে এই সকল কুফরীমূলক কবিতাগুলো পাঠ করতো এবং শরাব পান করতো। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! তাছাড়া সে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দিতো এবং হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল-অশালীন অপবাদ আরোপ করতো। না‘ঊযুবিল্লাহ!
স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তার এই মানহানীকর ও কুফরীমূলক কাজে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে তার মৃত্যুদ- ঘোষণা মুবারক করেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مَنْ لِكَعْبِ بْنِ الأَشْرَفِ فَإِنَّهُ قَدْ آذَى اللَّهَ وَرَسُولَهُ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ حَضْرَتْ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَتُحِبُّ أَنْ أَقْتُلَهُ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَأْذَنْ لِي أَنْ أَقُولَ شَيْئًا قَالَ قُلْ
‘কা’ব বিন আশরাফের জন্য কে আছেন? কেননা নিশ্চয়ই সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দিচ্ছে। ’ হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কি চান যে, আমি তাকে হত্যা করি?’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, ‘হ্যাঁ। ’ তখন হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে আপনি দয়া করে আমাকে (কাট্টা কাফির কা’ব বিন আশরাফের সাথে কৃত্রিম) কিছু কথা বলার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অনুমতি মুবারক দান করুন। ’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, ‘বলুন। ’
হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এই কাট্টা কাফিরকে হত্যা করার জন্য উনার সাথে হযরত আবূ নায়িলাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে, হযরত আবূ আব্স ইবনে জাব্র রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা উনাকে, হযরত হারিছ ইবনে আউস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত আব্বাদ ইবনে বিশ্র রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য যে, হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত আবূ নায়িলাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা দুজন ছিলেন সম্পর্কের দিক থেকে কা’ব বিন আশরাফের দুধ ভাই।
হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কা’ব বিন আশরাফের নিকট গিয়ে বললেন, ‘এই ব্যক্তি (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি আমাদের কাছে ছাদক্বাহ্ চান এবং তিনি আমাদেরকে অনেক কষ্টে ফেলেছেন। তাই বাধ্য হয়ে আমি তোমার কাছ থেকে কিছু ঋণ গ্রহণের জন্য এসেছি। ’
কা’ব বিন আশরাফ বললো, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! উনার কারণে আপনারা আরো বিরক্ত হবেন, আরো অতিষ্ট হবেন। আমি আপনাকে প্রথম থেকেই বলে আসছি। আমি যা বলছি তাই ঘটবে। ’ না‘ঊযুবিল্লাহ! হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, ‘আমরা তো উনাকে অনুসরণ করছি। পরিণাম ফল কি দাঁড়ায় তা না দেখে এখনই উনার সঙ্গ পরিত্যাগ করা ভালো মনে করছি না। এখন আমি তোমার কাছে এক ওয়াসাক্ব বা দুই ওয়াসাক্ব খাদ্য ধার চাই। ’
কা’ব বিন আশরাফ বললো, ‘হ্যাঁ; (ঋণ তো পেয়ে যাবেন তবে) আমার কাছে কিছু বন্ধক রাখুন। ’ হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, ‘তুমি কোন্ জিনিস (বন্ধক) চাও?’ সে বললো, ‘আপনাদের আহলিয়া উনাদেরকে আমার নিকট বন্ধক রাখুন। ’ না‘ঊযুবিল্লাহ! (হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত আবূ নায়িলাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ) উনারা বললেন, ‘তুমি আরবের সুদর্শন লোক, আমরা আমাদের আহলিয়া উনাদেরকে তোমার কাছে কি করে বন্ধক রাখব?’ তখন সে বললো, ‘তাহলে আপনাদের সন্তান উনাদেরকে আমার কাছে বন্ধক রাখুন। ’ উনারা বললেন, আমরা আমাদের সন্তান উনাদেরকে তোমার কাছে কি করে বন্ধক রাখি? যদি আমরা তা করি, তাহলে আমাদের সন্তান উনাদেরকে লোকজন এই বলে সমালোচনা করবে যে, ‘মাত্র এক ওয়াসাক্ব বা দুই ওয়াসাক্ব খাদ্যের বিনিময়ে আপনাদেরকে বন্ধক রাখা হয়েছিলো। ’ এটাতো আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার বিষয়। তবে আমরা তোমার কাছে অস্ত্রশস্ত্র বন্ধক রাখতে পারি। কা’ব বিন আশরাফ এই প্রস্তাবে রাজি হলো। অবশেষে হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কা’ব বিন আশরাফকে পুনরায় যাওয়ার ওয়াদা দিয়ে চলে আসলেন।
(অপেক্ষায় থাকুন। )
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৫)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৪০)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৯)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরানী হুলিয়া মুবারক (৪র্থ পর্ব)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ মুবারক
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৮)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল উনার ইন্তিজামকারী বিনা হিসাবে সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবেন
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুল ফাতাহ” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩১)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩৭)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












