সারাবিশ্বে এক দিনে ঈদ পালন সম্ভব কি? একটি দলীলভিত্তিক বিশ্লেষণ.... (৩)
, ৩রা রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৫ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ৪ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সমগ্র পৃথিবীতে একই দিনে বা একদিনে ঈদ পালন করা অসম্ভব- এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা:
প্রতিপাদ স্থান: ভূপৃষ্ঠের উপর অবস্থিত কোনো বিন্দুর ঠিক বিপরীত বিন্দুকে সেই বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান বলে। প্রতিপাদ স্থান সম্পূর্ণভাবে একে অন্যের বিপরীত দিকে থাকে। প্রতিপাদ স্থান নির্ণয় করার জন্য ভূপৃষ্ঠের কোনো বিন্দু থেকে পৃথিবীর কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে একটি কল্পিত রেখা পৃথিবীর ঠিক বিপরীত দিকে টানা হয়। ওই কল্পিত রেখা যে বিন্দুতে ভূপৃষ্ঠের বিপরীত পাশে এসে পৌঁছায় সেই বিন্দুই পূর্ব বিন্দুর প্রতিপাদ স্থান।
কোনো স্থানের অক্ষাংশ জানা থাকলে তার প্রতিপাদ স্থানেরও অক্ষাংশ নির্ণয় করা যায়। কোনো স্থানের অক্ষাংশ যত ডিগ্রি, এর প্রতিপাদ স্থানের অক্ষাংশ তত ডিগ্রি হবে।
স্থান দুইটি একটি নিরক্ষরেখার উত্তরে ও অপরটি দক্ষিণে অবস্থিত হবে। দুইটি স্থান দুই গোলার্ধে হবে। একটি স্থানের অক্ষাংশ ৭০° উত্তর হলে তার প্রতিপাদ স্থানের অক্ষাংশ ৭০° দক্ষিণ হবে। কোনো স্থানের দ্রাঘিমা এবং এর প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা যোগ করলে ১৮০° হবে। সুতরাং ১৮০° থেকে কোন স্থানের দ্রাঘিমা বাদ দিলে এর প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা পাওয়া যায়। কোন স্থানের দ্রাঘিমা পূর্বে হলে এর প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা পশ্চিমে হবে। যেমন, ৪০° পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত স্থানের প্রতিপাদ স্থানের দ্রাঘিমা হবে ১৮০°- ৪০° = ১৪০° পশ্চিম। স্থান দুইটির মধ্যে সময়ের পার্থক্য হবে ১২ ঘণ্টা।
পৃথিবীর প্রায় ৮০% ভূমির প্রতিপাদ স্থান সাগর বা মহাসাগরের মধ্যে পতিত হওয়ায় সরাসরি প্রতিপাদ স্থান খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন, তাই পৃথিবীর কয়েকটি শহর ও তার প্রতিপাদ স্থানের তালিকা দেয়া হলো-
সারণী: কয়েকটি শহর ও তার প্রতিপাদ শহর:
শহর প্রতিপাদ শহর
পালেম্বঙ্গ, ইন্দোনেশিয়া নেইভা, কলম্বিয়া
প্যাদাং, ইন্দোনেশিয়া ইস্মেরাল্ডাস, ইকুয়েডর
হোয়ানগারেই, নিউজিল্যান্ড তানজিয়ার, মরক্কো
জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া বগোতা, কলম্বিয়া
গুয়াকুইল, ইকুয়েডর মেদান, ইন্দোনেশিয়া
দোহা, কাতার পিটকেয়ার্ন দ্বীপপুঞ্জ
কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া কুইংকা, ইকুয়েডর
শার্ম এল শেখ, মিশর রাপা ইতি, ফরাসি পলিনেশিয়া
ঢাকার প্রতিপাদ স্থান দক্ষিণ আমেরিকার অন্তর্গত চিলির নিকট প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত।
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার দুই পাশে অবস্থিত দু’টি দেশ ভিন্ন তারিখে ঈদ পালন করে: সামওয়া ও নিউজিল্যান্ড দু’টো দেশ আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার দুই পার্শ্বে অবস্থিত। সূর্য মোটামুটি একই সময় এই দু’টো স্থানে উদিত ও অস্ত যায়। ১৪২৯ হিজরীর শাওওয়াল মাসের চাঁদ এই দু’টো দেশে একই দিনে একই সময়ে দৃশ্যমান হয়। দেশ দু’টিতে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার তথ্য উপস্থাপন করা হলো-
বিষয় সামওয়া নিউজিল্যান্ড
সময় সন্ধ্যা ৭টার কাছাকাছি সন্ধ্যা ৭টার কাছাকাছি
বার ছুলাছা বা মঙ্গলবার আরবিয়া বা বুধবার
তারিখ ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০০৮ ঈসায়ী ১লা অক্টোবর ২০০৮ ঈসায়ী
একই সময়ে এই দু’টো দেশের অধিবাসীরা ১৪২৯ হিজরীর শাওওয়াল মাসের চাঁদ দেখতে পেলেও আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার দু’পার্শ্বে অবস্থানের কারণে একই তারিখে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি।
কাছাকাছি অবস্থিত দুটি দেশেও একই তারিখে ঈদ পালন করা সম্ভব নয়: কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ার পরও সামওয়া ও নিউজিল্যান্ড যেমন ভিন্ন দুটি তারিখে ঈদ উদযাপন করেছে ঠিক তেমনি এই দু’টো দেশে কখনো কখনো একই দিনেও ঈদ উদযাপন করা সম্ভব নয়।
১৪১৭ হিজরীর শাওওয়াল মাসের চাঁদ সামওয়াতে যখন দৃশ্যমান হয় তখন চাঁদের বয়স ৪০ ঘণ্টারও বেশি। সেদিন সূর্য অস্ত যাওয়ার প্রায় ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যায়। একই দিন সন্ধ্যায় নিউজিল্যান্ডে যখন সূর্যাস্ত হয় তখন চাঁদের বয়স ২৪ মিনিট এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার মাত্র ৮ মিনিট পর চাঁদ অস্ত যায় ফলে চাঁদ দৃশ্যমান হয়নি। দেশ দু’টিতে চাঁদ দৃশ্যমান হওয়ার তথ্য নিম্নরূপ-
বিষয় সামওয়া নিউজিল্যান্ড
সময় ৭টা ৩০ মিনিট ৭টা ৩০ মিনিট
বার সাবত বা শনিবার আহাদ বা রোববার
তারিখ ৮ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ ঈসায়ী ৯ই ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ ঈসায়ী
৯ই ফেব্রুয়ারি, রোববার সকালে সামওয়াবাসীরা যখন ঈদ উদযাপন করেছিল সেদিন নিউজিল্যান্ডবাসীরা ঈদ পালন করতে পারেনি। নিউজিল্যান্ডে চাঁদ দেখা গিয়েছিলো ১০ই ফেব্রুয়ারি, চাঁদের বয়স যখন ৬৫ ঘণ্টারও বেশি। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












