সারাবিশ্বে এক দিনে ঈদ পালন সম্ভব কি? একটি দলীলভিত্তিক বিশ্লেষণ.... (৫)
, ২৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সউদী ওহাবী সরকার নিজেই ভ্রান্তভাবে আরবী মাস গণনা করে থাকে:
পবিত্র হাদীছ শরীফ মুতাবিক প্রতি মাসেই ২৯তম দিন শেষে আকাশে খালি চোখে চাঁদ দেখে মাস শুরু করতে হয়। কিন্তু অনেক নামধারী মুসলিম দেশ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুসরণ না করে মনগড়াভাবে চাঁদের তারিখ ঘোষণা করছে। গভীরভাবে তলিয়ে দেখার পর জানা গেল- এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্য নায়ক হচ্ছে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুসরণ বাদ দিয়ে এই সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে আরবী মাস উনার তারিখ ঘোষণা করছে। আর সেই ভ্রান্ত তারিখ দেখেই কিছু কিছু মুসলিম দেশের সরকার সেটাকে অন্ধ অনুসরণ করছে। নাঊযুবিল্লাহ!
(ক) সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার কর্তৃক মনগড়া পদ্ধতি অবলম্বন:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অনুসরণ না করে অর্থাৎ খালি চোখে চাঁদ দেখার চেষ্টা না করে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার এ পর্যন্ত ৪টি মনগড়া পদ্ধতি অবলম্বন করেছে-
(১) প্রথম মনগড়া পদ্ধতি (১৯৫০-১৯৭২ ঈসায়ী): সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার ৯ক্ক উপরে অবস্থান করলে মাস শুরু করতো। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ সূর্যাস্তের সময় চাঁদ দিগন্তরেখার ৯ক্ক উপরে অবস্থান করলেই আরবী মাস শুরু করা যায় না। চাঁদ শুধু ৯ক্ক নয়; তার চেয়ে বেশি উচ্চতায় থাকলেও দৃশ্যমান নাও হতে পারে। সম্মানিত শরীয়ত অনুযায়ী চাঁদ তালাশ করতে হবে এবং মাস শুরু করার জন্য খালি চোখে চাঁদ দেখতে হবে।
(২) দ্বিতীয় মনগড়া পদ্ধতি (১৯৭৩-১৯৯৮ ঈসায়ী): মধ্য রাতের পূর্বে অমাবস্যা সংঘটিত হলে পরের দিন থেকে নতুন মাস শুরু করতো। আবার সূর্যাস্তের সময় চাঁদের বয়স ১২ ঘণ্টার বেশি হলে নতুন মাস শুরু করতো। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ মহাকাশ বিজ্ঞানের তথ্যানুযায়ী ২৯তম দিন শেষে চাঁদ দেখতে পাওয়ার সর্বনিম্ন বয়স হলো ১৭ ঘন্টা থেকে ২৩ ঘণ্টা, এর পূর্বে চাঁদ খালি চোখে দেখা যাওয়ার আকৃতিতে আসে না।
(৩) তৃতীয় মনগড়া পদ্ধতি (১৯৯৮/৯৯-২০০১ ঈসায়ী): সূর্যাস্তের ১ মিনিট পরেও চন্দ্র অস্ত গেলে নতুন মাস শুরু করতো। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ সূর্যাস্তের পরে অমাবস্যার চাঁদও অস্ত যেতে পারে, তখন কোনভাবেই নতুন মাস শুরু হতে পারে না। আর যদি নতুন চাঁদও অস্ত যায়, সে সময় উক্ত চাঁদ খালি চোখে দেখা যাওয়ার আকৃতিতে নাও আসতে পারে, ফলে নতুন মাস কোনভাবেই গণনা সম্ভব নয়।
(৪) চতুর্থ মনগড়া পদ্ধতি (২০০৩ ঈসায়ী-বর্তমান সময় পর্যন্ত): যদি সূর্যাস্তের পর চন্দ্র অস্ত যায় এবং সূর্যাস্তের পূর্বে অমাবস্যা সংঘটিত হয়, তবে পরের দিন থেকে নতুন মাস শুরু করে। নাঊযুবিল্লাহ!
চাঁদ যদি সূর্যাস্তের পর অস্ত যায় এবং অমাবস্যা যদি সূর্যাস্তের পূর্বেই সংঘটিত হয়, তারপরও চাঁদ খালি চোখে দেখা যাওয়ার আকৃতিতে নাও আসতে পারে। কেননা উপরের কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করেই আরবী মাস শুরু করা সম্মানিত শরীয়ত উনার নির্দেশ নয় বরং সম্মানিত শরীয়ত অনুযায়ী চাঁদ খালি চোখে দেখে মাস শুরু করতে হবে।
উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে সমাজে তিন শ্রেণীর লোক দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে। এক শ্রেণীর লোক স্বাভাবিকভাবেই উপরোক্ত আলোচনা বিশ্বাস করবেন, যাদের পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার জ্ঞান আছে এবং যারা সউদী ওহাবী ইহুদীদের অন্যান্য অপকর্ম সম্পর্কে জ্ঞাত আছেন।
অন্য এক শ্রেণীর লোক আছে, যারা উপরোক্ত আলোচনা বিশ্বাস করার জন্য দলীল চাইবে। অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনার সত্যতার প্রমাণ চাইবে।
আরেক গ-মূর্খ শ্রেণী রয়েছে, যারা বলবে সউদী আরব কি কম বুঝে? সেখানে কি আলিম-উলামা নেই, মহাকাশ বিজ্ঞানী নেই? এই শ্রেণী সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের অপকর্মগুলোকে নানা ভ্রান্ত যুক্তি দাঁড় করিয়ে হলেও বিশ্বাস করতে চায়।
দ্বিতীয় মনগড়া পদ্ধতিতে মাস গণনার প্রমাণ: অনেকেই মনে করে থাকে যে, সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার হয়তো চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করে, আসলে তা নয়। বিগত বছরগুলোতে মহাকাশ বিজ্ঞানীসহ সাধারণ মানুষের কাছে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, যদি খালি চোখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করাকে বিবেচনায় আনা হয়, তাহলে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার সঠিক তারিখে আরবী মাস শুরু করেনি।
চিত্র: “মাজলিশ-আল-ইফতা আল আ’লা” কর্তৃক জর্দান মহাকাশ বিষয়ক সংস্থাকে প্রেরিত টেলিগ্রামের নমুনা।
ঘটনাক্রমে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের সর্বোচ্চ ধর্মীয় কাউন্সিল “মাজলিশ-আল-ইফতা আল আ’লা” থেকে জর্দান মহাকাশ বিষয়ক সংস্থা একটি টেলিগ্রাম পায়, যাতে ধরা পড়ে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার খালি চোখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করেনা; বরং তাদের নিজস্ব মনগড়া নিয়ম অনুযায়ী আরবী মাস ঘোষণা করে। তাদের এই মনগড়া নিয়ম হচ্ছে সূর্যাস্তের সময় চাঁদের বয়স ১২ ঘণ্টার বেশি হলে নতুন আরবী মাস শুরু হবে। কিন্তু বাস্তবে কোনোদিন এই নিয়মে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু করা সম্ভব নয়। ১৯৭৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তাদের এই মনগড়া নিয়ম বলবৎ ছিল। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












