সারাবিশ্বে এক দিনে ঈদ পালন সম্ভব কি? একটি দলীলভিত্তিক বিশ্লেষণ.... (৯)
, ২৫ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৫ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২৪ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ১১ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সউদীদের গণনাকৃত ক্যালেন্ডারের সাথে ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের সাদৃশ্যতা:
সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার যুগ যুগ ধরে মনগড়াভাবে আরবী মাসের তারিখ গণনা করে যাচ্ছে। পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার তারিখ সঠিকভাবে শুরু না হওয়ার কারণে পবিত্র হজ্জ বাতিল হচ্ছে। তাদের পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার তারিখ ঘোষণার সাথে ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের মিল অবাক করার মতো বিষয়; সঠিক তারিখে চাঁদ দেখে আরবী মাস শুরু হলে ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের সাথে কোনোভাবেই সাদৃশ্য হতো না। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আরবী মাস গণনা করা হয় নতুন বাঁকা চাঁদ খালি চোখে দেখার মাধ্যমে আর ইহুদীরা চন্দ্রমাস গণনা করে অমাবস্যা থেকে। কিন্তু ইহুদীদের ক্যালেন্ডারের সাথে মিল রেখে অমাবস্যার হিসাব অনুযায়ী আরবী মাস গণনা করার কারণে সউদী আরবে বিগত ২৪ বছরে মাত্র ২টি বছর ছাড়া বাকী সব বছরে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস ইহুদীদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শুরু হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! সউদী ওহাবীরা ইহুদীদের সাথে মিলের বিষয় লক্ষ্য রাখে কিন্তু মুসলমান উনাদের পবিত্র হজ্জ বাতিলের বিষয়টি উপেক্ষা করে। এতে কি আবারও প্রমাণিত হয় না যে, এরা আসলে ইহুদীদের বংশধর এবং ইহুদী?
ইহুদী ক্যালেন্ডার সউদী ক্যালেন্ডার
১লা তিসরি ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪৩৫ হিজরী (২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪, খমীস বৃহস্পতিবার)
২রা চেশভান ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪৩৪ হিজরী (৬ অক্টোবর ২০১৩, আহাদ রোববার)
১লা চেশভান ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪৩৩ হিজরী (১৭ অক্টোবর ২০১২, আরবিয়া বুধবার)
১লা চেশভান (সূর্যাস্তের পর) ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪৩২ হিজরী (২৮ অক্টোবর ২০১১, জুমুয়াবার)
১লা কিসেøভ (সূর্যাস্তের পর) ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪৩১ হিজরী (৭ নভেম্বর ২০১০, আহাদ রোববার)
১লা কিসেøভ ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪৩০ হিজরী (১৮ নভেম্বর ২০০৯, আরবিয়া বুধবার)
২রা কিসেøভ ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২৯ হিজরী (২৯ নভেম্বর ২০০৮, সাবত শনিবার)
১লা তেভাত ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২৮ হিজরী (১০ ডিসেম্বর ২০০৭, ইছনাইনিল আযীম সোমবার)
১লা তেভাত (সূর্যাস্তের পর) ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২৭ হিজরী (২১ ডিসেম্বর ২০০৬, খমীস বৃহস্পতিবার)
১লা তেভাত ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২৬ হিজরী (১লা জানুয়ারী ২০০৬, আহাদ রোববার)
১লা শেভাত ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২৫ হিজরী (১১ জানুয়ারী ২০০৫, ছুলাছা মঙ্গলবার)
১লা শেভাত ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২৪ হিজরী (২৩ জানুয়ারী ২০০৪, জুমুয়াবার)
১লা আদার ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২৩ হিজরী (২রা ফেব্রুয়ারী ২০০৩, আহাদ রোববার)
১লা আদার ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২২ হিজরী (১৩ ফেব্রুয়ারী ২০০২, আরবিয়া বুধবার)
১লা আদার ১লা যিলহজ্জ শরীফ ১৪২১ শরীফ (২৪ ফেব্রুয়ারী ২০০১, সাবত শনিবার)
ইহুদীদের হিব্রু ক্যালেন্ডারে দিনগুলোর নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য নেই। সাধারণত সূর্যাস্ত থেকে সূর্যাস্ত ধরা হলেও উঁচু অক্ষাংশের দেশে যখন সূর্য ডুবে না তখন দুপুর থেকে দুপুর। আর যখন সূর্য দিগন্ত রেখার উপরে উঠে না তখন মধ্যরাত্রি থেকে মধ্যরাত্রি। আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যে, হিব্রু ক্যালেন্ডারকে বলা হয় লুনিসোলার (ষঁহরংড়ষধৎ) অর্থাৎ মাস গণনা হয় চাঁদের সাপেক্ষে আর বছর গণনা হয় সূর্যের সাপেক্ষে। তারা অমাবস্যার চাঁদ অনুযায়ী মাস শুরু করার কথা বললেও বর্তমানে গাণিতিকভাবে অমাবস্যার চাঁদের অবস্থান নির্ণয় করে মাস শুরু করে। তাদের মাস গণনা পদ্ধতি হচ্ছে, ৩০-২৯-৩০-২৯ এরকম। তাহলে মুসলমানদের আরবী ক্যালেন্ডারের সাথে মিল থাকার কোনো কারণই নেই। যদি মিলে যায় তাহলে বুঝতে হবে, আরবী মাসের গণনা সঠিক হচ্ছে না বা তা হিব্রু ক্যালেন্ডারের সাথে মিল রেখেই তৈরি করা হচ্ছে।
অমাবস্যার দিন চাঁদ দেখার দাবি করে আরবী মাসের তারিখ ঘোষণা:
প্রকৃতপক্ষে সউদী আরবে কোনো মাসই চাঁদ দেখে শুরু হয় না, তাই মানুষের উপলব্ধির জন্য এখানে ২৬ বছরের তিনটি মাসের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখানো হলো।
১৪০০ হিজরী থেকে ১৪২৫ হিজরী এই ২৬ বছরে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস, পবিত্র শাওওয়াল শরীফ মাস, পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস এই তিন মাস যেদিন সউদী আরবে শুরু হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করে নিচের তথ্য পাওয়া গেছে।
মাস চাঁদ দেখা একবারেই অসম্ভব ছিলো সম্ভব ছিলো না সম্ভব ছিলো
পরিমাণ % পরিমাণ % পরিমাণ %
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস: (মোট ২৬টি রমাদ্বান শরীফ) ১২ বার ৪৬% ৯ বার ৩৫% ৫ বার ১৯%
পবিত্র শাওওয়াল শরীফ মাস: (মোট ২২টি শাওওয়াল শরীফ) ১১ বার ৫০% ৬ বার ২৭% ৫ বার ২৩%
পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস: (মোট ২৬টি যিলহজ্জ শরীফ) ৮ বার ৩১% ১২ বার ৪৬% ৬ বার ২৩%
এখানে ‘একেবারেই অসম্ভব’ বলতে সূর্যাস্তের পূর্বেই চাঁদ অস্ত গিয়েছিলো। ‘সম্ভব ছিলো না’ বলতে সূর্যাস্তের পর চাঁদ অস্ত গিয়েছিলো। আর ‘সম্ভব ছিলো’ বলতে কখনো খালি চোখে কখনো যন্ত্রের সাহায্যে দেখার সম্ভাবনা ছিলো।
এখানে কতগুলো বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এই যে, সূর্যাস্তের পর চাঁদ অস্ত গেলেই চাঁদ দৃশ্যমান হয় না। আবার যন্ত্রের সাহায্যে চাঁদ দেখতে পেলেও তা আরবী মাস গণনা শুরু করার জন্য প্রযোজ্য নয়।
উদাহরণ হিসেবে আরো বলা যেতে পারে, ১৪২৮ হিজরী সনে সউদী আরবের আকাশে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদ বাস্তবে দেখা গিয়েছিলো বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী সন্ধ্যার তিন ঘণ্টা পর ১১ই ডিসেম্বর ইয়াওমুছ ছুলাছা মঙ্গলবার। কিন্তু সউদী সরকার মনগড়াভাবে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখার দাবি করেছিলো ৯ই ডিসেম্বর অমাবস্যার দিন। এরকম অনেক প্রমাণ রয়েছে।
প্রেক্ষিত কারণেই বলতে হয়, অমাবস্যা হচ্ছে সেই দিন যেদিন চাঁদ কখনোই দৃশ্যমান হয় না। ফলে সেদিন চাঁদ দেখার দাবি করার মতো এতো স্পষ্ট মিথ্যা সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার কিভাবে করতে পারে এটাই বিশ্ববাসীর প্রশ্ন।
(চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৪)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে গরুর গোস্ত শি‘আরুল ইসলাম (১১)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত- প্রাণীর ছবি হারাম
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩০)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সংক্ষেপে মো./সাঃ/দঃ/ S.M ইত্যাদি লেখার বিষয়ে সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত কি বলে?
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানদের বিজ্ঞানে অবদানসমূহ চুরি করে অমুসলিমদের বিজ্ঞানী সাজা নিউটনের চৌর্যবৃত্তির স্বরূপ উন্মোচন: পদার্থবিজ্ঞানের ৩টি গতিসূত্র, ভরবেগ ও জড়তার ধারণা সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ইবনে সীনা ও অন্যান্য মুসলিম বিজ্ঞানীগণ, যেগুলো নিউটন নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছিলো
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বকালে সবার জন্য উসওয়াতুন হাসানাহ্
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)