সারাবিশ্বে এক দিনে ঈদ পালন সম্ভব কি? একটি দলীলভিত্তিক বিশ্লেষণ.... (১১)
, ০৭ মে, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার কর্তৃক মেঘাচ্ছন্ন অবস্থায়ও নতুন চাঁদের তারিখ ঘোষণা:
পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করার নির্দেশ মুবারক রয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে মাসের ২৯তম দিনে আকাশ মেঘলা থাকায় চাঁদ দেখা না যাওয়ার পরও সউদী ওহাবী সরকার আরবী মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ না করে পরের দিন থেকেই নতুন তারিখ গণনা শুরু করেছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, ১৪২৯ হিজরী সনের পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার ২৯তম দিনে সউদী আরবের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় চাঁদ দেখা যায়নি বলে জানা যায়। কিন্তু সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার সেদিন চাঁদ দেখার দাবি করে পরের দিন থেকে রবীউছ ছানী মাস গণনা শুরু করে। নাঊযুবিল্লাহ!
এরকম উদাহরণ অনেক দেয়া যাবে, কারণ সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার যেহেতু চাঁদ দেখাকে গুরুত্বই দেয় না ফলে আকাশ মেঘলা বা পরিষ্কার তাতে তাদের কিছুই আসে যায় না। নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার স্পষ্ট নির্দেশ মুবারক হচ্ছে- “চাঁদ দেখে রোযা পালন করো, চাঁদ দেখে রোযা ভঙ্গ করো, আর আকাশ মেঘলা থাকলে মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ করো। ”
চাঁদের তারিখ ঘোষণায় অতীতের ভুলের প্রামাণ্য দলীল:
প্রামাণ্য দলীল (১): সউদী আরবের চাঁদ গবেষক আদনান খাদী ১৯৬১ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মোট ৪৪ বছরের শুধু পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার তারিখ ঘোষণার একটি চিত্র তুলে ধরেন-
(১) পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার ৪৬টি চাঁদের ঘোষণার মধ্যে ২৯টি মাসের তারিখ ঘোষিত হয়েছিলো যখন আকাশে চাঁদের উপস্থিতিই ছিলো না। অথচ সউদী ওহাবী ইহুদী সরকার সেদিন নিশ্চিতভাবে চাঁদ দেখতে পাওয়ার দাবি করেছিলো। অর্থাৎ ৬৩ ভাগ সময় আকাশে চাঁদের উপস্থিতই ছিলো না। নাঊযুবিল্লাহ!
(২) ২২টি চাঁদের ঘোষণা ছিলো যখন আকাশে চাঁদের উপস্থিতি ছিলো কিন্তু সেই চাঁদ টেলিস্কোপ ব্যবহার করেও দেখা যায়নি। নাঊযুবিল্লাহ!
(৩) ৬টি চাঁদের ঘোষণা ছিলো খালি চোখে চাঁদ দেখতে পাওয়ার অবস্থায়। অর্থাৎ মাত্র ১৩ ভাগ সময়ে চাঁদ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।
প্রামাণ্য দলীল (২): ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সউদী আরবে পবিত্র শাওওয়াল মাস, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস (১৯৮০ থেকে ২০০৮) ও পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনাদের চাঁদের তারিখ ঘোষণার দিন পর্যবেক্ষণ করে নীচের তথ্য পাওয়া যায়।
পবিত্র শাওওয়াল মাস:
চাঁদ দেখা যাওয়ার আকৃতিতেই পৌঁছেনি ১৪ বছর।
বাইনোকুলার ও টেলিস্কোপের সাহায্য প্রয়োজন হয়েছে ২ বছর।
চাঁদ দেখতে পাবার পরিবেশ ছিলো ১ বছর মাত্র।
চাঁদ অমাবস্যায় যাওয়ার পূর্বেই তারিখ ঘোষিত হয়েছে ৮ বছর।
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস: (১৯৮০-২০০৮ পর্যন্ত)
চাঁদ দেখা যাওয়ার আকৃতিতেই পৌঁছেনি ১৪ বছর।
টেলিস্কোপেও চাঁদ দেখা যায়নি ১ বছর।
বাইনোকুলার ও টেলিস্কোপের সাহায্য প্রয়োজন হয়েছে ২ বছর।
দেখা যাওয়ার আকৃতিতে ছিলো ১ বছর।
চাঁদ অমাবস্যায় যাওয়ার পূর্বেই তারিখ ঘোষিত হয়েছে ১২ বছর।
পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস:
চাঁদ দেখা যাওয়ার আকৃতিতেই পৌঁছেনি ১৯ বছর।
বাইনোকুলার ও টেলিস্কোপের সাহায্য প্রয়োজন হয়েছে ৫ বছর।
চাঁদ দেখতে পাবার পরিবেশ ছিলো ১ বছর মাত্র।
চাঁদের তারিখ ঘোষণায় সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সউদী মুফতীদের ফতওয়া:
মনগড়াভাবে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের চাঁদের তারিখ ঘোষণার বিরুদ্ধে দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাতসহ অন্যান্য পত্রিকায় অনেক লেখা প্রকাশিত হওয়ার পরেও বাংলাদেশসহ অনেক দেশের উলামায়ে সূ এবং সাধারণ মানুষের ধারণা এসকল বিরুদ্ধাচরণ হয়তো আক্রোশমূলক অথবা গোষ্ঠী ভিত্তিক। কিন্তু খোদ সউদী আরবের মুফতী, প্রচারমাধ্যম, বিজ্ঞানীরা যে সউদী ওহাবী ইহুদী সরকারের এসব শরীয়ত বহির্ভূত সিদ্ধান্ত এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার, তা অনেকেরই জানা নেই।
উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৪২০ হিজরী সনে সউদী আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয় ৭ই জানুয়ারী, জুমুয়াবার। অথচ ৬ই জানুয়ারী, ইয়াওমুল খমীস বৃহস্পতিবার পৃথিবীর কোথাও শাওওয়াল মাসের চাঁদ দৃশ্যমান হয়নি। ৬ই জানুয়ারী সউদী আরবে সূর্য অস্ত গিয়েছিলো ৫টা ৫৬ মিনিটে অথচ চাঁদ অস্ত যায় সূর্য অস্ত যাওয়ার ৯ মিনিট পূর্বেই। আরও অবাক বিষয় হচ্ছে, তাদের গণনাকৃত শাওওয়াল মাস শুরু হওয়ার ৪ ঘণ্টা পর চাঁদ অমাবস্যায় যায়। তাহলে যে চাঁদ অমাবস্যাতেই পৌঁছেনি সে চাঁদ যে দৃশ্যমান হয়নি, তা বলার অপেক্ষাই রাখে না। ফলে সউদী আরবের কয়েকজন মুফতী এ ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে উঠে।
১৪২০ হিজরীতে সউদী আরবের চাঁদের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে শায়েখ ডঃ ইউসুফ আল কারদায়ি ফতওয়া দেয় যে, “যারা ১৪২০ হিজরীতে জুমুয়াবারে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করেছে তারা যেন একটি রোযা ক্বাযা আদায় করে নেয়”।
এছাড়াও শায়েখ মুহম্মদ বিন সালেহ আল উথাইমিন ফতওয়া দেয়, “যদি পৃথিবীর কোথাও সূর্যাস্তের পর সূর্যগ্রহণ হয় তবে পরের দিন কখনোই নতুন মাসের নতুন দিন শুরু হবে না। ”
চিত্র: শায়েখ ডঃ ইউসুফ আল কারদায়ির ফতওয়া।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আছ ছালিহ, নাশিরুল কুরআন, খলীফায়ে ছালিছ, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমিরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার কিছু নছীহত মুবারক
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বদমবুছী মুবারক খাছ সুন্নত মুবারক
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উলামায়ে সূ’ ধর্ম ব্যবসায়ীদের পরিচিতি ও হাক্বীক্বত (৮)
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরি করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (২৯)
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)