সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কিতাবে বর্ণিত আছে-
اَلْوَلِىُّ وَلِيًّا وَلَوْ كَانَ صَبِيًّا
অর্থ: “ওলীআল্লাহগণ শিশুকাল থেকেই ওলীআল্লাহ।”
অর্থাৎ এমন কতিপয় ওলীআল্লাহ আছেন যাঁরা পূর্ব থেকে মনোনীত। রোযে আজল থেকে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে তরবীয়ত দিয়ে থাকেন। নি¤œবর্ণিত পবিত্র আয়াত শরীফখানা সেদিকেই দালালত (নির্দেশ) করছে।
اَللهُ يَجْتَبِيْ إِلَيْهِ مَنْ يَّشَاءُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি যাঁকে ইচ্ছা উনাকে মনোনীত করেন।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন-
ذٰلِكَ فَضْلُ اللهِ يُؤْتِيْهِ مَنْ يَّشَاءُ
অর্থ: “ইহা মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ অনুগ্রহ। তিনি যাঁকে ইচ্ছা উনাকেই তা দান করেন।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪)
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সেই খাছ অনুগ্রহ প্রাপ্ত, পূর্ব থেকে মনোনীত মহান ব্যক্তিত্ব। মায়ের কোল থেকে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। তিনি উনার আম্মা উনার রেহেম শরীফে যেদিন তাশরীফ আনেন সেদিন থেকেই উনার আম্মার পবিত্র রেহেম মুবারক থেকে “সুবহানাল্লাহ” লফ্য মুবারকের যিকির হতো।
তিনি যখন যমীনে তাশরীফ নিলেন তখন উনার যিকির পরিবর্তন হয়ে গেলো। তিনি “সুবহানাল্লাহ” উনার স্থলে ‘নফী ইছবাত’ তথা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” যিকির আরম্ভ করলেন। মনে হচ্ছিল উনার শরীর মুবারকে জান্নাতী খুশবু মাখানো। উনার শিশুকালের কয়েকটি বিশেষ ঘটনা উনার সম্মানিতা আম্মা উনার বার বার স্মরণে আসতো।
উনার শরীর মুবারকে খুশবুতে ভরা। উনার “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” যিকির করা। কখনো উনার মায়ের কোল মুবারকে ইস্তিঞ্জা না করা। এতে উনার সম্মানিতা আম্মাজান উনার পবিত্রতার কোন ত্রুটি হতো না। ক্ষুধা পেলে তিনি কখনো চিৎকার করে কাঁদতেন না। উনার বয়স মুবারক যখন কিছুটা বৃদ্ধি পেল তখন কোন মহিলা যদি তার শিশু সন্তান নিয়ে উনাদের বাসায় আসতো তখন তিনি উনার সম্মানিতা আম্মা উনার প্রতি ইশারা করতেন ঐ শিশুকে উনার নিজের ভাগের দুধ হতে কিছু দান করতে।
ইশারা পাওয়ার পর উনার আম্মা ঐ বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে নিজের দুধ পান করাতেন। আর তখন শিশু গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চেহারা মুবারকে একটা তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠতো। সুবহানাল্লাহ!
কথিত আছে যে, যে সকল শিশু গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইশারা মুবারকে উনার মায়ের দুধ মুবারক পান করেছেন উনারা সবাই পরবর্তীতে ওলীআল্লাহগণ উনাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এক বছর বয়স মুবারকে তিনি হাঁটতে শিখেন। তখন কিছু কিছু কথা বলতে শুরু করেন। উনার সম্মানিতা আম্মা উনাকে প্রথমে “বিস্মিল্লাহির রহ্মানির রহীম” শিক্ষা দেন। পরে আল্লাহ আল্লাহ বলতে শিখান। তারপর এক এক করে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র নিরানব্বই নাম মুবারক শিক্ষা দেন। বয়স মুবারক কিছুটা বেড়ে গেলে পবিত্র কালাম পাক থেকে কিছু পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র সূরা শরীফ মুখস্থ করান। এভাবে উনার বয়স মুবারক ২ বছরের কোঠায় চলে গেলো।
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বয়স মুবারক যখন দুই বছর পূর্ণ হলো তখন উনার নেওয়াজির প্রকার পরিবর্তন হতে লাগলো। সেই সময় তিনি সব কথা পরিস্কারভাবে বলতে পারতেন। জ্ঞান রাখতেন বড়দের মতো। ঐ সময় তিনি উনার সমবয়সীদের রাস্তা থেকে ডেকে আনতেন এবং সম্মানিতা মাতা উনাকে বলে তাদেরকে আহার করাতেন।
ঐ সময় উনার শিক্ষার দায়িত্বভার উনার সম্মানিত পিতার দিকে স্থানান্তরিত হয়। আমরা পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে, উনার সম্মানিত পিতা আওলাদে রসূল সাইয়্যিদ মুহম্মদ গিয়াছুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেই সময়ের একজন নেতৃস্থানীয় আলিম ও যাহিদ ছিলেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অত্যন্ত আদর ও ¯েœহের মাধ্যমে গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মৌখিকভাবে শিক্ষা দিতে থাকেন।
তিনি এক বছর বয়স মুবারক হতেই উনার জায়নামাযে বসে আল্লাহ আল্লাহ যিকির করতেন এবং সিজদা করতেন। দু বছর বয়স মুবারকে তিনি উনার সম্মানিতা মাতা উনার সাথে নামায পড়তেন। উনার সম্মানিতা পিতা উনাকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র সূরা শরীফ শিক্ষা দিতেন। পাশাপাশি নামাযের জরুরী বিষয়গুলো শিক্ষা দিতেন।
উনার বয়স মুবারক বাড়ার সাথে তিনি উনার সম্মানিত পিতা উনার কাছ থেকে ইলমে তাছাওউফের তা’লীমও গ্রহণ করতে থাকেন। (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












