সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৪)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রথম মাকতুবাত বা চিঠি মুবারক:
কুতুবুল মাশায়িখ, হযরত খাজা উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বললেন, এক ব্যক্তির নিকট ছাহিবে জওক অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য ও কুরবতের ক্ষমতাসম্পন্ন একজন গোলাম ছিলেন। তিনি অর্ধরাত অতিবাহিত হলে অন্যান্য কাজ হতে মুক্ত হতেন। অযু করে নামায আদায় করে মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করতেন। অতঃপর দোয়া করতেন। বলতেন, আয় খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক! আমি আপনার নৈকট্য, কুরবত মুবারক হাছিল করেছি। আপনি আমাকে আপনার নৈকট্য ও কুরবত মুবারক থেকে দূরে সরিয়ে দিবেন না।
ঐ গোলামের মুনিব একদিন উনার এরূপ দোয়া-প্রার্থনা শুনলেন। বললেন, আপনি কি করে বুঝতে পারলেন যে, আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য ও কুরবত মুবারক লাভ করেছেন?
তিনি বললেন, তিনি অর্ধ রাতের পর আমাকে জাগ্রত করে নামায আদায় করতে দেন। দোয়া করার তাওফীক্ব দান করেন।
মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য ও কুরবত ব্যতীত কখনো এমনটি ঘটতো না। তিনি আমাকে উনার নৈকট্য ও কুরবত মুবারক দান করেছেন বলেই তা সম্ভব হয়। সুবহানাল্লাহ!
এ জাওয়াব শুনে সেই মুনীব বললেন, আমি আপনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নামে এবং উনার পথে আযাদ করে দিলাম। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, মানুষকে দিন-রাত মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগী যিকির-ফিকিরে নিয়োজিত থাকা উচিত। যাতে উনার নাম নেককার বান্দাদের দফতরে লিপিবদ্ধ হয়ে যায়। আর নফস বিতাড়িত শয়তানের কয়েদ বা বন্দী হতে মুক্তি লাভ করে। (খাজা গরীবে নেওয়াজের পূর্ণাঙ্গ জীবনী-২২২)
হে কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার মর্যাদা-সম্মান বৃদ্ধি করুন।
আমার মহান শায়েখ কুতুবুল মাশায়িখ, সুলত্বানুল আউলিয়া, খাজায়ে জাঁহা, হযরত খাজা উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আহলে মা’রিফাত ছাড়া অন্য কাউকে ইশক এর রহস্যভেদ জ্ঞাত করা বা জানানো নিষেধ।
এক ব্যক্তি উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আহলে মা’রিফাত” উনাকে কিভাবে চেনা যাবে?
উত্তরে তিনি বললেন, “আহলে মা’রিফাত” এর আলামত বা চিহ্ন হচ্ছে, ত্যাগ। যার মধ্যে ত্যাগ আছে, যে সবকিছু বিসর্জন দিতে পারে তাকে “আহলে মা’রিফাত’-এর অন্তর্ভুক্ত মনে করবেন। আর তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত বা পরিচিতি লাভ করতে সক্ষম।
আর যার মধ্যে ত্যাগ নেই, যে সবকিছুকে বিসর্জন দিতে পারে না তার মধ্যে মা’রিফাত মুহব্বত মুবারকের গন্ধও নেই। আর ইহা ভালোভাবে জেনে রাখুন যে, পবিত্র কালিমায়ে শাহাদাত এবং নফী (না) ও ইসবাত (হ্যাঁ) মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত মুবারক বা পরিচিতি।
এক্ষেত্রে দুনিয়াবী ধন-সম্পদ এবং সম্মান-মর্যাদা অত্যন্ত কঠিন প্রতিবন্ধকতা। এসব বস্তু অনেক সালিক বা মুরীদকে সঠিক রাস্তা হতে বিমুখ করেছে। তারা বিপথগামী বা ভ্রষ্ট হয়েছে। মানুষের নিকট সম্পদ ও সম্মান অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে দেখা দেয়। এ দুটোর মোহে তারা মোহগ্রস্ত হয়ে থাকে। যার ফলে তারা পথভ্রষ্ট বা বিপথগামী হয়ে যায়।
অনেক লোকই ধন-সম্পদ ও সম্মান-মর্যাদার প্রত্যাশী হয়ে থাকে। এ দুটোর পিছনে দিন-রাত ছুটে বেড়ায়। জীবনের অনেক মূল্যবান সময় তাদের পিছনে ব্যয় করে থাকে।
কাজেই, যারা ধন-সম্পদ ও সম্মান-মর্যাদার প্রত্যাশাকে মন থেকে মুছে ফেলতে পেরেছে তারাই ‘নফী’ করেছে। আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত-মুহব্বত হাছিল করতে পেরেছে সে সম্পূর্ণ ‘ইছবাত’ করে নিয়েছে। আর এ বিষয়টি ‘নফী-ইছবাত’ যিকিরের দ্বারা হাছিল হয়।
সুতরাং যে কালিমায়ে তাইয়্যিবা পাঠ করেনি অর্থাৎ ‘নফী-ইছবাত’ যিকির করেনি তার এ মাক্বাম হাছিল করা তথা মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত মুবারক বা পরিচিতি মুবারক লাভ করা সম্ভব নয়।
একদিন আমার সম্মানিত শায়েখ সুলত্বানুল আউলিয়া, খাজায়ে জাহাঁ, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নফী-ইছবাতের কালিমা (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ) সম্মন্ধে এক মর্মস্পর্শী নছীহত মুবারক করেন। তিনি বললেন, ‘নফী’ অর্থ: নিজেকে না দেখা। আর ‘ইছবাত’ অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনাকেই দেখা। কেননা নিজের অস্তিত্বে নিজে অবস্থান করে মহান আল্লাহ পাক উনার মধ্যে অবস্থান করা যায় না।
কাজেই নফীকে হাক্বীক্বীভাবেই বা পরিপূর্ণরুপে নফী করা আবশ্যক। অন্যথায় কোন ফায়দা হাছিল করা সম্ভব নয়।
যদি এ খেয়াল করা হয় যে, হাস্তী (অস্তিত্ব) বলতে শুধু মহান আল্লাহ পাক উনার হাস্তীকেই বুঝায় তাহলে উদ্দেশ্য হাছিল হতে পারে।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












