জীবনী মুবারক
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্দে নহম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
বিলাদত শরীফ: (তারিখ উল্লেখ নেই) বিছাল শরীফ: ৯ম হিজরী (৬৩০ খৃ:)
, ২৩ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ৩০ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পরিচিতি:
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবদে নহম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি প্রসিদ্ধ মুযায়না গোত্রে পবিত্র বিলাদত শরীফ প্রকাশ করেন। তিনি বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার চাচা। দ্বীন ইসলাম গ্রহণের পূর্বে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবদে নহম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নাম ছিল আবদুল উয্যা। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নাম পরিবর্তন করে আবদুল্লাহ রাখেন। উনার উপাধি “যুল-বিজাদাইন” (ডোরাকাটা দু’কাপড়ের অধিকারী)। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে এ উপাধি দান করেন। ছোট বেলায় তিনি ইয়াতীম হয়ে চাচার নিকট লালিত পালিত হন। (ইছাবা)
দ্বীন ইসলাম গ্রহণ ও যুল-বিজাদাইন উপাধি:
হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের সংবাদ চাচার নিকট পৌঁছলে তিনি উনার দেয়া সকল কিছু ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি দেন। কিন্তু তিনি দ্বীন ইসলাম উনার উপর অবিচল ও অটল থাকেন। এতে ক্রুদ্ধ হয়ে উনার চাচা যা কিছু উনাকে প্রদান করেছিলেন, সব কিছু ছিনিয়ে নেন। এমনকি পরনের কাপড়ও ছিনিয়ে নেন। এই করুণ ও অসহায় অবস্থায় তিনি উনার মাতার নিকট আসলে মাতা উনাকে একখানি কাপড় দেন, যা দু’ভাগ করে একাংশ পরিধান করে এবং অপরাংশ গায়ে জড়িয়ে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে উপস্থিত হন। ইহা দেখে উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি “যুল বিজাদাইন” (ডোরাকাটা দু’কাপড়ের অধিকারী) উপাধি প্রদান করেন। (ইছাবা)
ইবনে হিশাম উনার বর্ণনা মতে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি উনার আকর্ষণ দেখে উনার গোত্রের লোকেরা উনাকে ইসলাম গ্রহণ করতে নিষেধ করে এবং চাপ সৃষ্টির জন্য মাত্র একখানি কাপড় রেখে আর সব কিছুই ছিনিয়ে নেয়। উক্ত কাপড় দু’ভাগ করে পরিধান করতঃ তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবার শরীফে হাযির হন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে উক্ত উপাধি মুবারক দান করেন।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত কোমল হƒদয়ের মানুষ। বেশী বেশী কুরআন শরীফ তিলাওয়াত ও তছবীহ তাহলীল পাঠে নিমগ্ন থাকতেন। আর এসবই তিনি উচ্চস্বরে করতেন। (ইছাবা)
শাহাদাত বরণ:
নবম হিজরী সনে পবিত্র শা’বান শরীফ মাসে তাবুকের জিহাদে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। রাত্রিবেলায় উনাকে দাফন করা হয়। খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম ও আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনারা উনাকে দাফন করেন।
উমর ইবনে শিব্বা উনার মতে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাঁচজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কবরে অবতরণ করেন। হযরত আবদুল্লাহ যুল বিজাদাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সেই পাঁচজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে অন্যতম।
দাফনের পর দোয়া:
হযরত আবদুল্লাহ যুল বিজাদাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দাফন শেষ করতঃ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ক্বিবলামুখী হয়ে দু’ হাত মুবারক বা নূরুল মাগফিরাত মুবারক তুলে দোয়া করেন: আয় মহান আল্লাহ পাক! আমি উনার প্রতি সন্তুষ্ট ছিলাম, আপনিও উনার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি যদি উনার স্থলাভিষিক্ত হতাম! অথচ আমি উনার পূর্বেই দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছি। অন্য বর্ণনায় আছে, হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বলেছিলেন; আমার ইচ্ছা হয়, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি যদি কবরবাসী হতাম! অর্থাৎ উনার পরিবর্তে উনার কবরের অধিবাসী হতাম। (উসুদুল গাবা) (সমাপ্ত)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












